লোকসভা ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৪ মার্চ সন্ধ্যায় রাজ্যে আসছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। ৫ই মার্চ সকালে প্রথমে সব জাতীয় ও স্থানীয় স্তরের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করবে তাঁরা। এরপর জেলাশাসক জেলা পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সন্ধ্যা পর্যন্ত কমিশনের ফুল বেঞ্চ। পরের দিন ৬ই মার্চ সকালে প্রথমে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ও অন্যান্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক এরপর পুলিশের নোডেল অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তারপর সমস্ত কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার ও রাজ্য পুলিশের ডিজের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা। এরপর দুপুর দুটো থেকে রাজ্য প্রশাসনের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক করার পরে সাংবাদিক সম্মেলন করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। এদিনই সন্ধ্যায় দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তাঁরা। এখনো পর্যন্ত যা খবর কমিশন সূত্রে তাতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সব ক্ষেত্রে প্রস্তুতি কতটা সারা হয়েছে মূলত তারই পর্যবেক্ষণ করতে যেমন কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসছে অন্যদিকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে কি অবস্থায় রয়েছে পাশাপাশি জামিন অযোগ্য ধারায় যারা এখনো পর্যন্ত বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরকে নজরে দেখে প্রয়োজনে তাঁদেরকে গ্রেফতার করে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করার লক্ষ্যেই এগোতে চলেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনী নির্ঘণ্টে প্রকাশ হওয়ার আগে থাকতেই এই প্রথমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে ধরনের পদক্ষেপ গুলি গ্রহণ করেছে তা যে একেবারেই নজিরবিহীন সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি এবার ওয়েব কাস্টিং হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচন কমিশন প্রথম থেকেই নজরে রেখেছিল গোটা দেশের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ কে তার কারণ বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ছবি ধরা পড়েছে তা নিয়ে রীতিমত আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছে একদিকে যেমন রাজ্যের মানুষ অন্যদিকে শঙ্কায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাই ছাপ্পার কপালে ছাই দিয়ে এই প্রথমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে কাজে লাগিয়ে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে তা যদি সত্যিই কার্যকর হয় তাহলে ছাপ্পা ভোট থেকে শুরু করে বুথ জ্যাম সব কিছুরই চিরদিনের মত অবসান ঘটবে। অন্যদিকে নিরাপত্তা এবার আরও যে কঠোর এবং কঠিন করা হচ্ছে তা একপ্রকার বুঝিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন তার কারণ এতদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের যে দায়িত্ব তা থাকতো বিএসএফের ওপর কিন্তু এবার প্রথম কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থেকে শুরু করে তার সম্পূর্ণ গতিবিধি সবকিছু নজরদারি করবে একমাত্র সিআরপিএফ। ফলে এতদিন যারা ভয়ে শঙ্কায় নিজের ভোটদান থেকে বিরত থেকেছিলেন অথবা কপালে শাসকদলের মার থেকে শুরু করে রক্ত ঝরেছে অনেকেরই তারাই এবার বুঝছেন আশার আলো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবেন। এখন দেখার বিষয় একটাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন কতটা সক্ষম হয় রক্তপাতহীন ভোট করাতে পশ্চিমবঙ্গে।