কেমন ছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জীবন


মঙ্গলবার,১৫/০২/২০২২
2584

১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকুরিয়ার ব্যানার্জিপাড়ায় জন্ম। বাবা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, মা হেমপ্রভা দেবী। ৩ ভাই, ৩ বোhনের মধ্যে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সবচেয়ে ছোট। সবার বড়ো দিদি সরসী, তারপর রবীন্দ্রনাথ, সুধা, মেজদা ধীরেন্দ্রনাথ, ছোড়দা সত্যেন্দ্রনাথ। ছোড়দা অল্পবয়সে মারা যান। আদি দেশ বলাগড়ের জিরাট। ঠাকুরদা যোগেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন পুলিশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট। ঠাকুমা নীরদাসুন্দরী দেবী। দাদু বিপিনবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন পটনায় ওভারসিয়ার। দিদিমা থাকোমণি দেবী। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ডাকনাম দুলদুল। পড়াশোনা শুরু ঢাকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে। সারেগামা শেখা শুরু পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসুমল্লিকের কাছে। ১২ বছর বয়সে বেতারে গল্পদাদুর আসরে প্রথমবার গান। গীতিকার অজয় ভট্টাচার্যের লেখা যদি বা ফুরালো গান/ ঝরিল দুয়ারে লতা/নয়নে আছে গো জল। এই গান গেয়ে পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ৫ টাকা। ১৯৪৫ সালে এইচএমভি থেকে বেরোয় প্রথম বেসিক রেকর্ড। একপিঠে ‘তুমি ফিরায়ে দিয়েছ যারে’, উল্টোপিঠে ‘তোমারো আকাশে ঝিলমিল করে চাঁদের আলো’। গানের কথা ও সুর গিরীন চক্রবর্তীর।

এই গান দু’টো যখন গান সন্ধ্যার তখন তাঁর বয়সমাত্র ১৩ বছর। প্রথম গানের মাস্টারমশাই যামিনী গঙ্গোপাধ্যায়। প্রথম উচ্চাঙ্গসংগীতের কনফারেন্সে যোগ দেন ১৯৪৩ সালের ৫ ডিসেম্বর। সেখানে ভজনে প্রথম হন। ১৯৪৬ সালের ৬ এপ্রিল গীতশ্রী পরীক্ষায় প্রথম হন। পাতিয়ালা ঘরানার ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খানের কাছে নাড়া বেঁধে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি উচ্চাঙ্গসংগীতে পাতিয়ালা ঘরানার শিল্পী। এছাড়া তালিম নিয়েছেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খানের ছেলে মুনাভর আলি খান, পণ্ডিত এ টি কানন আর পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ীর কাছেও। ১৯৪৮ সালে সেরা প্লে ব্যাক গায়িকার বিএফজেএ পুরস্কার পান। ১৯৫০ সালে শচিন দেববর্মণের ডাকে প্রথম বম্বে যান। ওই বছরই বেরোয় ওগো মোর গীতিময় গানটি। উল্টোপিঠে ছিল আরেকটি গান, ‘আমি প্রিয়া তুমি প্রিয়’। গানটির গীতিকার অধ্যাপক কমল ঘোষ, সুর রবীন চট্টোপাধ্যায়। প্রথম হিন্দি ছবিতে গান অনিল বিশ্বাসের তারানা ছবিতে। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে ডুয়েট ‘বোল পাপিহে বোল রে/বোল পাপিহে বোল/হ্যায় কোন মেরা চিতচোর’। প্রথম প্লেব্যাক রাইচাঁদ বড়ালের সুরে অঞ্জনগড় ছবিতে। প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি অগ্রদূতের সমাপিকা ছবিতে। গেয়েছিলেন অভিনেত্রী সুনন্দা দেবীর লিপে। সুরকার ছিলেন রবীন চট্টোপাধ্যায় আর গীতিকার শৈলেন রায়। ১৯৫১ সালে প্রথম নজরুলগীতি রেকর্ড করেন। ১৯৬৬ সালের ১০ মার্চ গীতিকার শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে বিয়ে। ১৯৪৮ সালে অভিমান ছবিতে গাইবার সূত্রে দুজনের আলাপ হয়। দম্পতির একমাত্র মেয়ে সৌমি ( ডাকনাম ঝিনুক)-এর জন্ম ১৯৬৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর।

১৯৬৮ সালে বেরোয় রবীন্দ্রসঙ্গীতের লং প্লেইং রেকর্ড ‘টুয়েলভ জেমস ফ্রম টেগোর’। ১৯৭০-৭১ সালে নিশিপদ্ম আর জয়জয়ন্তী ছবির জন্য বাংলা ছবির সেরা প্লেব্যাক গায়িকার জাতীয় পুরস্কার। ১৯৭১-৭২ সালে বিএফজেএ সেরা প্লেব্যাক গায়িকার পুরস্কার। আরো বেশ কয়েকবার এই পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর প্রথম উচ্চাঙ্গসংগীতের লং প্লেইং রেকর্ড বেরোয়। সুচিত্রা সেনের লিপে প্রথম গান অগ্নিপরীক্ষা ছবিতে। সুচিত্রার লিপে প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘ক্ষণে ক্ষণে মনে মনে শুনি অতল জলের আহ্বান’। সন্ধ্যাদীপের শিখা ছবিতে। ১৯৭৯ সালে উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খানের গাওয়া ৪টি ঠুংরি রেকর্ড করেন মুন্নাবর আলি খানের তত্ত্বাবধানে। অনিল বাগচীর সুরে এন্টনি ফিরিঙ্গি ছবিতে মান্না দের সঙ্গে প্রথম ডুয়েট। ১৯৮৬ সালে মান্না দের সুরে প্রথম বেসিক গান। সলিল চৌধুরীর সুরে ছায়াছবির প্রথম গান ‘লোটন’ ছবিতে। ১৯৯৫ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট উপাধি।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট