ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: শবে বরাতের আগেই বাজারে আগুন। আর এ লাভ নিচ্ছেন মুনাফাখোররা। পবিত্র রমজান মাস আসার আগেই প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। সরকারের বিপণন সংস্থা (টিসিবি) বলছে, টানা এক মাস ধরে বেড়ে চলেছে অন্তত ১২টি পণ্যের দাম। পণ্যগুলো হলো- সয়াবিন, চিনি, মশুর ডাল, মুগডাল, পেঁয়াজ, আটা, ময়দা, গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগি, গুড়া দুধ, হলুদ, আদা, জিরা। ক্রেতারা বলছেন, পবিত্র রমজান মাসকে পুঁজি করে মুনাফাখোররা এই পণ্যগুলোর দাম পরিকল্পিতভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। এভাবে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে সীমিত আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।
২৬ মার্চ শুক্রবার নতুন করে বেড়েছে খোলা সয়াবিন, আটা, ময়দা, ব্রয়লার মুরগি, গুড়া দুধ, চিনিসহ অন্তত আরও ৬টি পণ্যের দাম। বাজারের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে লিটারে এক থেকে দুই টাকা। ৫ লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত। এক লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ৬ টাকা। প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। খোলা ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা। টিসিবি’র তথ্য বলছে, গত এক মাসে আটার দাম বেড়েছে ১. ৪৭ শতাংশ। গত যে আটার দাম ছিল ৩৫ টাকা এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকায়। ৩৫ টাকা কেজি ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৫.১৫ শতাংশ। ১১৫-১১৮ টাকা দামের সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১১৯-১২৬ টাকায়। গত মাসে এই এক লিটার বোতলের দাম ছিল ১৩০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৩৬-১৪০ টাকায়।
আর ৫ লিটার বোতল তেল এখন ৬২০-৬৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা পামওয়েলের দাম বেড়েছে ৭.৯২ শতাংশ। এখন পামওয়েল তেল ১০৮-১১০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। গত এক মাসে পামওয়েল সুপারের দাম বেড়েছে ৮.৭০ শতাংশ। পাম (সুপার) এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে গত এক মাসে মসুর ডালের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। এক মাস আগে এই মসুর ডালের দাম ছিল ৯৫ টাকা কেজি। এখন সেই ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। ১২০ টাকা কেজি মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। রোজাকে সামনে রেখে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮.৩৩ শতাংশ। টিসিবি’র হিসেবে ২৬ ফেব্রুয়ারি যে পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ টাকা কেজি। এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। আর আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। এক মাস আগে এই পেঁয়াজ ছিল ১৮-২০ টাকা। ১৪০ টাকা কেজি দেশি হলুদের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। ৬০ টাকা কেজি আমদানি করা আদার দাম ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা। জিরার দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ। এক মাস আগের ২৮০ টাকা কেজি জিরা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা দরে। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর মানিক নগর এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে সীমিত আয়ের মানুষদের খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। তার মতে, পবিত্র রমজান মাসকে পুঁজি করে মুনাফাখোরা অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
একই এলাকার বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন বলেন, গরিব মানুষের জন্য রোজার মাস কষ্টের। রোজার মাসকে কেন্দ্র জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়ে গেছে, সেভাবে তার আয় বাড়েনি। পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য খুচরা ব্যবসায়ীরা চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকে দায়ী করছেন, আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য পণ্যের ঘাটতি ও আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক ড. জায়েদ বখত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রোজার মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই মানুষের মধ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া একটা প্রত্যাশা তৈরি হয়। ব্যবসায়ীরা এই প্রত্যাশার একটা সুযোগ নেন। এখন সেটাই হয়েছে। তিনি বলেন, দেখা যায় অনেক সময় পর্যাপ্ত পণ্য সরবাহ থাকার পরও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এটা হয় মূলত ভোক্তাদের আচরণের কারণে। জায়েদ বখত বলেন, ‘ভোক্তারা মনে করে এই সময় দাম বাড়বে, ব্যবসায়ীরাও মনে করে এই সময়ে দাম বাড়বে। এইটা মনে করে ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই জিনিসপত্র ধরে রাখে। ভোক্তারাও দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বেশি করে পণ্য কিনে রাখে।’ তিনি উল্লেখ করেন, মূল্যস্ফীতির প্রত্যাশা ছাড়াও বর্তমানে আর্ন্তজাতিক বাজারে যেভাবে পণ্যের দাম বেড়েছে, তার একটা প্রভাব পড়েছে। এছাড়া বাজারে সম্প্রতি অর্থসরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদার ওপর চাপ সৃষ্টি হওয়ায় জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে।
তবে খাদ্য শস্যের মূল্য যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে ব্যাপারে সরকারকে আরও সচেষ্ট থাকা জরুরি। রাজধানীর বাজারগুলোয় একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আর কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। আর কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকায়। গোপীবাগ মুরগি ব্যবসায়ী বক্কার আলী বলছেন, দুদিন পরেই শবে বরাত। এ কারণেই মুরগির দাম বেড়েছে। তিনি ব্রয়লার বিক্রি করছেন ১৬০ টাকা কেজি। অবশ্য শবে বরাতকে সামনে রেখে মুরগির দাম বাড়লেও পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। এখন ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকায়। একইভাবে ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। জিরা পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি। বেড়েছে সবজির দামও। সজনে ডাটার দাম এখন ১০০ টাকা কেজি, শশার দাম ৫০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২৫ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। বেগুনের কেজি ৩০-৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০-৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ২০-৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা পিস।
DOT & KEY Vitamin C + E Super Bright Sunscreen Spf 50 |Water-Light,UVA/UVB & Blue Light Protection|For Even Toned & Glowing Skin|With Liquid Spf 50+++| No White Cast| For All Skin Types| 50G,Pack Of 1
₹373.00 (as of শনিবার,১২/০৪/২০২৫ ১৫:২৯ GMT +05:30 - More info)(Renewed) JBL C100SI Wired In Ear Headphone with Mic (Black)
Now retrieving the price.
(as of শনিবার,১২/০৪/২০২৫ ১৫:২৯ GMT +05:30 - More info)