ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী – শ্রী গুলজারি লাল নন্দ


বৃহস্পতিবার,১৮/০২/২০২১
739

শ্রী গুলজারি লাল নন্দের জন্ম পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে ১৮৯৮ সালের ৪ জুলাই। তাঁর শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয় লাহোর, আগ্রা ও এলাহাবাদে। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ স্কলার হিসেবে তিনি কাজ করেন শ্রম সমস্যার ওপর (১৯২০-২১) এবং বোম্বাইয়ের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে (ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি) অর্থনীতির অধ্যাপক পদে যোগ দেন। আবার ঐ বছরই জড়িয়ে পড়েন অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে। ১৯২২ সালে আমেদাবাদ টেক্সটাইল লেবার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঐ পদে আসীন ছিলেন। সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অপরাধে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয় ১৯৩২ সালে। পরবর্তীকালে ১৯৪২ -৪৪ সাল পর্যন্ত তাঁকে আবার কাটাতে হয় কারার অন্তরালে।

শ্রী গুলজারি লাল নন্দ তৎকালীন বোম্বাই বিধানসভায় নির্বাচিত হন ১৯৩৭ সালে। ঐ বছর থেকে পরবর্তী আরও দু’বছর অর্থাৎ ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত তিনি তৎকালীন বোম্বাই সরকারের সংসদীয় সচিব (শ্রম ও অন্তঃশুল্ক)হিসেবে কাজ করেন। রাজ্য বিধানসভায় শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তি বিল পেশ করার পেছনে তাঁর যথেষ্ট অবদান ছিল। কর্মজীবনে তিনি যুক্ত ছিলেন বহু সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে। যেমন কস্তুরবা মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অছি, হিন্দুস্তান মজদুর সেবক সঙ্ঘের সম্পাদক এবং বোম্বাই আবাসন পর্ষদের সভাপতি পদে কাজ করে গেছেন তিনি। জাতীয় পরিকল্পনা কমিটির একজন সদস্য হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (আই.এন.টি.ইউ.সি.) সাংগঠনিক দিকটির সঙ্গেও তিনি বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীকালে তার সভাপতিও হয়েছিলেন।

১৯৬৪, ২৭ মে থেকে ১৯৬৪, ৯ জুন | কংগ্রেস

১৯৪৭ সালে একজন সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে জেনেভায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ঐ সম্মেলনের প্রস্তাব অনুযায়ী এক কমিটিতে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে তাঁকে কাজ করতে হয় ‘দ্য ফ্রিডম অফ অ্যাসোসিয়েশন কমিটি’র ওপর। এরই সুবাদে তাঁকে সফর করতে হয় স্যুইডেন, ফ্রান্স, স্যুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম এবং ইংল্যান্ড – এই দেশগুলিতে। ঐ সমস্ত দেশের শ্রম ব্যবস্থা এবং আবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে তাঁর এই বিশেষ সফর।

শ্রী গুলজারি লাল নন্দ ১৯৫০ সালের মার্চ মাসে যোজনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। পরের বছর সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকারের যোজনা দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এছাড়াও, সেচ ও বিদ্যুৎ – এই দুটি দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। ১৯৫২ সালের সাধারণ নির্বাচনে বোম্বাই থেকে তিনি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরিকল্পনা, সেচ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী হিসেবে পুনর্নিযুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত প্ল্যান কনসালটেটিভ কমিটির বৈঠকে তিনি ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৯ সালে জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনেও তিনি ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৫৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে শ্রী নন্দ লোকসভার সাংসদ হিসেবে নিযুক্ত হন। কেন্দ্রীয় শ্রম, কর্মসংস্থান ও পরিকল্পনা দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে তাঁকে নিযুক্ত করা হয়। পরে, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান পদেও তাঁকে কিছুদিন কাজ করে যেতে হয়। ১৯৫৯ সালে তিনি সফর করেন জার্মানি, যুগোস্লাভিয়া ও অস্ট্রিয়া – এই তিনটি দেশ।

১৯৬২ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় লোকসভার সাংসদ নিযুক্ত হন গুজরাটের সবরকান্থা কেন্দ্র থেকে। আবার ১৯৬২ সালেই তিনি সূচনা করেন কংগ্রেস ফোরাম ফর সোশ্যলিস্ট অ্যাকশন। ১৯৬২ এবং ১৯৬৩ সালে তিনি কাজ করেন কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী হিসেবে। পরে , ১৯৬৩-৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।

পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুর পর ১৯৬৪ সালের ২৭ মে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করেন। পরে, তাশখন্দে শ্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ বাক্য পাঠ করেন।

তথ্যসূত্র : পিএমইন্ডিয়া

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট