ঝাড়গ্রাম:– হাতে গোনা আর মাত্র কয়েক টা দিন বাকি। তারপরই শুরু হবে জঙ্গলমহলের সবচেয়ে বড়ো পরব টুসুপরব। যা মকরসংক্রান্তি নামে পরিচিত বাঙলায়। লোধা, শবর, কুড়মি সহ নানান আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের গ্রাম গুলিতে টুসু আর নতুন জামা কাপড় কেনার ধুম পড়ে যায়৷ পৌষের শেষ দিনে নদীতে টুসু ভাসিয়ে স্নান সেরে নতুন শাড়ি, জামা কাপড় পরে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে৷ কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের অনেক গ্রামেই সেই আনন্দ পৌঁছায় না। কারন যাদের পেটের ভাত জোগাড় করতেই হিমসিম খেতে হয় তাদের কাছে মকরের এই আনন্দ অনেক টা যেন গরীরের ঘোড়ায় চাপার শখের মতো। কিন্তু এবার মকরসংক্রান্তির আনন্দ আগাম পৌঁছে দিল জঙ্গলমহলের এক শবর অধ্যুষিত গ্রামে। আর এই আনন্দ যারা পৌঁছে দিলেন তারা হলেন অখণ্ড মেদিনীপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রামধনু। অধুনা ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ির খন্দরভুলা গ্রাম৷ শতাধিক শবর পরিবারের বাস এই গ্রামে। পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা এই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে এখনো ঠিকঠাক পৌঁছায় নি সভ্যাতার উন্নয়নের জোয়ার। একদিকে ভাতের চিন্তা নিয়েই যখন তাদের দিন কেটে যায় ঠিক সেই সময়ে মকরসংক্রান্তির আগে গ্রামের মহিলাদের হাতে নতুন শাড়ি আর বাচ্চাদের হাতে চকলেট বিস্কুট তুলে দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ দান করলেন রামধনুর সদস্যরা।
বেলপাহাড়ী থানার আধিকারিক সুপ্রিয় মাঝি এবং তাঁর সহকর্মীদের সহায়তায় বেলপাহাড়ী থেকে প্রায় ২০ কিমি দূরে অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় খন্দরভুলা গ্রামের শবর মায়েদের জন্য নতুন শাড়ি, বাচ্চাদের জন্য বিস্কুট চকলেট নিয়ে পৌঁছে যায় ‘রামধনু’র সদস্যারা। তুলে দেওয়া হয় শতাধিক মায়েদের হাতে নতুন ছাপা শাড়ি আর বাচ্চাদের হাতে চকোলেট বিস্কুট। সংস্থার পক্ষ জানানো হয়েছে “মকর সংক্রান্তি জঙ্গলমহলের সবচেয়ে বড়ো পরব। দেখা গেছে এই পরবের আনন্দ থেকে প্রত্যন্ত এই গ্রামের মায়েরা নিজেদের সরিয়ে রাখে। তাই সেই মায়েদের নতুন শাড়ি পরিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে রামধনুর পক্ষ থেকে ‘আঁচল’ নামের এই প্রজেক্টের পরিকল্পনা করা হয়৷ যার পথ চলা এদিন শুরু হলো। তবে এই প্রজেক্ট এখানেই থেমে থাকবে না৷ ভবিষ্যতে এরকম দুর্গম অঞ্চলের মানুষদের সর্বাঙ্গীন উন্নতির চেষ্টায় তারা সবসময় পাশে থাকবে।সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি তাদের অনুরোধ সবাই যেন বিপদে আপদে সবসময় একে অপরের পাশে থাকেন”।