ভারত বনধ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা – নেত্রী কি বললেন ?


মঙ্গলবার,০৮/১২/২০২০
648

ধর্মঘটকে নৈতিক সমর্থন করছি :মমতা

২০১১ সালে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে হটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মা মাটি মানুষের সরকার। আর রাজ্যে পালাবদলে পর থেকে সমস্ত ধরনের ধর্মঘটের বিরোধিতা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে রাজ্যে একটা বনধ কালচার শুরু হয়ে গিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বনধ কালচারকে সমূলে উপড়ে ফেলেন। গত ন’বছরে যারাই বনধ ডেকেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কড়া হাতে তার মোকাবিলা করেছে। এই প্রথম ব্যাতিক্রমী মনোভাব মমতার গলায়। সোমবার মেদিনীপুরের জনসমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলেন, কৃষক সংগঠনগুলির ডাকে যে ভারত বনধ তাকে আমরা নৈতিক সমর্থন করছি।

আমরা কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। মুখ্যমন্ত্রী আরও বললেন নীতিগত ভাবে আমরা বন্‌ধের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যেভাবে কৃষকদের মারতে কৃষি বিল নিয়ে এসেছে তার বিরোধিতা করছি। কৃষকরা যে ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন তার প্রতি নৈতিক সমর্থন থাকছে। তবে ধর্মঘটকে সমর্থন করছি না, মন্তব্য মমতার। কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগেন এদিনের সমাবেশ থেকে। মমতা বলেন, কৃষকদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকবে।

সুজন চক্রবর্তী (বাম পরিষদীয় নেতা):

কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা সারা ভারত ধর্মঘটকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে বামপন্থী দল সিপিআইএম। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন আমাদের কর্মীসমর্থকরা রাস্তায় থাকবে। তাঁর মন্তব্য বামপন্থীরা সবসময় কৃষকদের পাশে ছিল আছে এবং থাকবে। যেভাবে কেন্দ্রের মোদি সরকার কৃষি বিল এনে কৃষকদের ভাতে মারার চেষ্টা করছে তার বিরুদ্ধে প্রথম থেকে লড়াই করছে বামপন্থীরা। ধর্মঘট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন,
ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতিকে কলুষিত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরকন্যায় বিক্ষোভ।ঠেকাতে পুলিশ যে গাজোয়ারি মনোভাব নিয়েছে তা অগণতান্ত্রিক। মন্তব্য করলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। মানুষের মৃত্যু হলে সেই দায় সরকারকে নিতে হবে, মন্তব্য করেন এই সিপিএম নেতা। মেদিনীপুরের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ভাষণক ‘ফালতু’ ভাষণ বলে এদিন মন্তব্য করেন সুজন। নবান্নের ১৪ তলাটা এখন আর তার নিরাপদ নয় তা বুঝতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী, মন্তব্য তাঁর। কৃষকদের ডাকে সারা ভারত ধর্মঘটকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নৈতিক সমর্থন নিয়ে এদিন কটাক্ষ করেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন ধর্মঘটকে সমর্থন করার সাহস মুখ্যমন্ত্রীর নেই।

অধীররঞ্জন চৌধুরি (প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি) :

কৃষক সংগঠনগুলির ডাকা সারা ভারত ধর্মঘটকে সমর্থন জানাচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন সারা দেশজুড়ে কংগ্রেস কর্মীরা রাস্তায় থেকে ধর্মঘট কে সমর্থন করবে। যেভাবে কৃষকরা দিল্লির বুকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তাকে স্যালুট জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রের মোদি সরকার গাজোয়ারি ভাবে কৃষি আইন নিয়ে এসেছে। এই কৃষি আইন গোটা দেশের কৃষকদের সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে। কৃষকদের ভিখারিতে পরিণত করবে এই নয়া আইন। অধীর চৌধুরী বলেন ধর্মঘটকে রাজ্যের মানুষ সর্বতোভাবে সমর্থন করবে। রাজ্য সরকার ধর্মঘট ভাঙ্গার চেষ্টা করলে তার ফল ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

শমীক ভট্টাচার্য (বিজেপি মুখপাত্র)

মঙ্গলবারের ধর্মঘটকে রাজ্যের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে। মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। কৃষকদের স্বার্থ যাতে উন্নতি হয় সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এই নয়া কৃষি আইন নিয়ে এসেছে। বিরোধীরা কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই বিজেপি নেতা। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, তৃণমূল, কংগ্রেস, বামেরা ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা চরমভাবে বঞ্চনার শিকার হয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ তার। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বা বর্তমান তৃণমূল সরকার কৃষকদের স্বার্থে কোনো কাজ করেনি বলে অভিযোগ এই বিজেপি নেতার। উত্তরকন্যা অভিযানে পুলিশের বর্বরতা প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। উত্তরবঙ্গে মানুষ তাদের ধর্মঘটে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে স্তব্ধ করে দেবে জনজীবন, দাবি শমীক ভট্টাচার্যের।

বিজ্ঞাপন

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট