রাজ্য সরকার গরীব হতে পারে কিন্তু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করবে খড়্গপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে এ কথা বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


বুধবার,০৭/১০/২০২০
980

পশ্চিম মেদিনীপুর:-মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর বিদ্যাসাগর শিল্প তালুকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির জন্য ওই প্রশাসনিক বৈঠকের ১৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল উপস্থিতির ব্যবস্থা করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন এবং কোথায় কি কাজ হয়েছে তা বিস্তারিত ভাবে জেলাশাসক রেশমি কমল এর কাছে জানেন ।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বহুবার বলেছি তা সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করেনি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সম্পর্কে তিনি বলেন রাজ্য সরকার গরিব হতে পারে তবে ঘাটাল দাসপুর এলাকার মানুষকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হবে। তবে ধীরে ধীরে হবে এবং ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে যাবে । আগামী দিনে ঘাটালের মানুষ বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। আমাদের হাতে অর্থ নেই তাই যেটুকু পারি সেটুকু দিয়ে ধীরে ধীরে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করব।

তিনি আরো বলেন ঘাটাল দাসপুর এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ক্লাস্টার তৈরি করা হবে ।যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘাটাল দাসপুর চন্দ্রকোনা ফিরে এসেছেন তারা ওই ক্লাস্টারে কাজ করতে পারবে যারা বেশিরভাগই ছিলেন স্বর্ণশিল্পী। সেই সঙ্গে তিনি বলেন রাস্তা তৈরিতে যেন কোন স্বজনপোষণ করা চলবে না। রাস্তা তৈরির কাজ করতে হবে। আদিবাসীদের শিক্ষার স্কিম যেন পড়ে না থাকে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তিনি বলেন রাজ্যের চামড়ার ইন্ডাস্ট্রিতে পাঁচ লক্ষ মানুষ কাজ করছে। হাওড়াতে ক্লাস্টার তৈরি করা হয়েছে সেখানে তিন লক্ষ মানুষের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাস্তা তৈরিতে বাংলা এক নম্বরে রয়েছে। আমি প্রথমে আমলাশোল সব থেকে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করি ১৬ হাজার কিলোমিটার। তারপর ভাঙ্গড় থেকে ২৫হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে ৯২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছিল। গত ৮ বছরে৩ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করার জন্য পথ শ্রী অভিযান প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু হয়েছে । আয়ুষ্মান প্রকল্প আমার কোনো বাধা নেই। আয়ুষ্মান প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র দেয় 60% রাজ্যকে দিতে হয় 40% ।আমিতো স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প করেছি 100% দিয়ে ।তাই কেউওই প্রকল্প চালু করতে চাইলে করবে ।ওরা দিবে মাত্র দেড় কোটি মানুষকে। আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পৌঁছে দিয়েছি। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন পরিযায়ী শ্রমিক দের বিষয়টিও তিনি এদিন বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন ।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৭০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে ১০০ প্রকল্পে ২০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।করোনা পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১০০ দিন প্রকল্পের কাজ ভালো হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। উন্নয়নের ব্যাপারে কোনো ত্রুটি রাখা চলবে না বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন মহাশ্বেতা দেবী লোধা শবর দের উন্নয়নে কাজ করতেন। তাঁর অবর্তমানে আমার একটা দায়িত্ব থাকে তাই আমি লোধা শবর দের উন্নয়নে কোন ত্রুটি দেখতে চাই না। সেইসঙ্গে জঙ্গলমহলে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় 4284 জন জুনিয়ার কনস্টেবলের পদোন্নতি হয়েছে বলেও তিনি জানান। সেই সঙ্গে তিনি বলেন আদিবাসীদের স্কুলের জন্য যে সমস্যা গুলি রয়েছে সেই সমস্যাগুলি দ্রুত সমাধান করতে হবে। তিনি পুলিশ সুপারকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় টি ভালো করে দেখার নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের পীঠস্থান মেদিনীপুর এর উন্নয়নে কোন ত্রুটি রাখা চলবেনা। বাংলা সহায়তা প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় 157 টি সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। তিনি বলেন তার কাছে 62 হাজার 803টি অভিযোগ পড়েছিল তারমধ্যে 62 হাজার 52 টি অভিযোগের সমাধান হয়েছে। বাকিগুলোর তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি বিভিন্ন বিষয় বিধায়ক দের কাছে জানতে চান তাদের এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ কর্ম নিয়ে।তিনি আরো বলেন যে কোথাওযদি কোনো সমস্যা হয় বিডিও জেলাশাসক এর সাথে কথা বলে সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। উন্নয়নে কোনরকম ফাঁকি দেওয়া চলবে না। কিষান ক্রেডিট কার্ড তিনি বলেন ব্যাংকগুলির সাথে কথা বলে কিষান ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন আমি মানবিক তাই রাজনীতির উর্ধ্বে কাজ করি মানুষের বড় পরিচয় হল মনুষ্যত্ব। তাই আমি মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলতে চাইনা। রাজনীতিকে সরিয়ে রেখে আমি কাজ করছি, আগামীদিনে ও করবো। মেদিনীপুর খড়গপুর এর মাঝে একটিঅডিটরিয়াম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।খড়গপুর শিল্প তালুকের জন্য 500 কোটি টাকা তিনি ঘোষণা করেন ।তিনি আরো বলেন যে মানুষ যদি কাজ পেয়ে খুশি হয়। তাই মানুষের পাশে থেকে মানুষের উন্নয়নে তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থেকে বিডিও জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারসহ আধিকারিকদের কাজ করার নির্দেশ দেন।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট