বাংলাদেশে বন্যায় ১৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি: কৃষিমন্ত্রী


বৃহস্পতিবার,২০/০৮/২০২০
632

ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: এবারের বন্যায় ৩৭টি জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর, যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন। মন্ত্রী ১৯ আগস্ট বুধবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ও তা মোকাবিলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এসময় কৃষিসচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মোঃ আরিফুর রহমান অপু, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল মুঈদ উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রী জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ২১৩ হেক্টর জমির আউশ ধান, ৭০ হাজার ৮২০ হেক্টর জমির আমন ধান এবং ৭ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির আমন বীজতলা। টাকার হিসাবে আউশ ধান ৩৩৪ কোটি, আমন ধান ৩৮০ কোটি টাকা, সবজি ২৩৫ কোটি, পাট ২১১ কোটি টাকার ক্ষতি উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, বন্যার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতি পুষিয়ে যেন আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য বিভিন্ন প্রণোদনার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার কৃষি উপকরণ ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এর আওতায় স্বল্পমেয়াদী ও মধ্যমেয়াদী বিভিন্ন শাকসবজি চাষের জন্য প্রায় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার কৃষককে লালশাক, ডাটাশাক, পালং শাক, বরবটি, শিম, শশা, লাউ বীজ ইত্যাদি বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলার মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা, প্রায় ৭০ লাখ টাকার ভাসমান বেডে এবং  ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপণের জন্য আমন ধানের চারা উৎপাদন/বীজতলা তৈরি ও বিনামূল্যে বিতরণ কাজ চলছে। সেই বীজতলা থেকে চারা নিয়ে কৃষকেরা আমন রোপন করছেন। এছাড়া, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমন চাষ সম্ভব না হলে ৫০ হাজার কৃষকের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকায় ৩৫ জেলায় ৫০ হাজার কৃষকের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার মাষকলাই বীজ, ডিএপি ও এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, আরও প্রায় ৭৫ কোটি টাকার প্রণোদনা কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ অর্থ দিয়ে  ৯ লাখ ২৯ হাজার ১৯৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক কৃষককে গম, সরিষা, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারী, পিঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হবে। মন্ত্রী আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারিবারিক কৃষির আওতায় সবজিপুষ্টি বাগান স্থাপন কর্মসূচির আওতায় ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬৪ জেলায় মোট ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৯২ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ/ চারা ও সার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া, ২০২০২১ অর্থবছরে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আওতায় ১৫২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬৪ জেলায় ৪৯১টি উপজেলার ৪৫৯৭টি ইউনিয়ন এবং ১৪০টি পৌরসভায় মোট ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ/ চারা ও সার সহায়তা প্রদান করা হবে। কৃষি মন্ত্রী বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ এর অধীন সকল দপ্তরসমূহ করোনা ঝুঁকির মধ্যেও অত্যন্ত সজাগ, সক্রিয় রয়েছে। যে কোন পরিস্থিতিতে আমরা কৃষকের পাশে থেকে বাংলাদেশের কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। আমরা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, আবার বন্যা না হলে, ক্ষয়ক্ষতি বহুলাংশে কাটিয়ে উঠা যাবে এবং এই ক্ষয়ক্ষতি আমাদের খাদ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে আশা করি।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট