১৯৫২ এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন এবং জ্যোতি বসু ও বিধান চন্দ্র রায়ের রাজনৈতিক শিষ্টাচারের এক গল্পগাঁথা


বুধবার,২২/০৫/২০১৯
1764

নিজস্ব প্রতিবেদক ---

বাংলা এক্সপ্রেস ডেক্স: সালটা ১৯৫২। তখন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়। দাপুটে বিরোধী নেতা জ্যোতি বসু। বিধানবাবু চৌরঙ্গী থেকে ভোটে লড়তেন এবং জ্যোতিবাবু লড়তেন বরানগর থেকে। নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগে বিধানবাবু চৌরঙ্গীতে জনসভা করবেন। কিছু আগেই জনসভার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে গাড়িতেই বিশ্রাম করছেন। হঠাৎই জানলা দিয়ে দেখেন জ্যোতিবাবু আর কয়েকজনের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন কলেজ স্ট্রিটের দিকে। উস্কো-খুস্কো উদ্ভ্রান্ত চেহারা। বিধানবাবু তড়িঘড়ি নিজের আপ্তসহায়ককে দিয়ে ডাকতে পাঠালেন জ্যোতিবাবুকে।

জ্যোতিবাবু আসতেই প্রথম প্রশ্ন , ” চেহারাটা দেখেছো নিজের?তো যাচ্ছ কোথায়?” জ্যোতিবাবু বললেন , “আপনারাই তো ট্রামের ভাড়া বাড়িয়েছেন। আজ মিছিল আছে তার প্রতিবাদে যাচ্ছি। তাছাড়া ভোট এসে গেল কাজকর্ম বাকি অনেক।” বিধানবাবু সবটা শুনে মুচকি হাসলেন। তারপর সস্নেহে বললেন , “আচ্ছা তো যাবেন। কিন্তু জ্যোতি, খালি পেটে থেকে শরীর খারাপ করে বিধান রায় আর কংগ্রেসকে হারানো যাবে না যে,গাড়িতে উঠে এসো।খানকয়েক লুচি আছে, দুজন মিলে খাই। তারপর তুমি যাও, গিয়ে বিধান রায়কে গালাগালি কর।” এরপর আর কিভাবে অগ্রজকে না বলেন জ্যোতিবাবু। গাড়িতে উঠলেন এবং তড়িঘড়ি খেয়ে জনসভায় ভাষণ দিতে নামলেন। বিধানবাবু আর তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে সংঘটিত মিছিলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন জ্যোতিবাবু।

পূর্বসূরী ও উত্তরসূরী দুই মুখ্যমন্ত্রীর শিক্ষা ও সৌজন্যের অমলিন চিত্র যেন বর্তমান বাংলার হারিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক সৌজন্য ও শিষ্টাচারের উপর কষাঘাতই। আসলে শিক্ষা যে অদৃশ্য ও বেনামি কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই পাওয়া যায় না।বর্তমানে এই ধরণের শিষ্টাচার ও সৌজন্য বোধের উদাহরণ পাওয়া বিরল দৃষ্টান্তস্বরূপ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট