পশ্চিম মেদিনীপুর: বাবার জনপ্রিয়তা ছাড়িয়ে গিয়েছে ছেলে। ছেলের নাম সবাই জানে যদিও তাঁর বাবার নাম অতটা পরিচিত নয়।সেই গর্বিত বাবাকে দেখা গেল ছেলের হয়ে প্রচারে। বাবা গুরুপদ অধিকারী পৌছে গিয়েছিলেন কেশপুরের আনন্দপুরে ছেলে দীপক অধিকারী(দেব) এর প্রচারে।
আর ছেলেও বাবাকে পাশে নিয়ে খোশমেজাজেই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের নির্বাচনী প্রচার। ছেলে আজ তৃণমূলের প্রার্থী। কেশপুরের মহিষদাহে দেবের বাড়ি। জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, প্রবল প্রতিকুলতাকে পিছনে ফেলে দেব আজ লক্ষ লক্ষ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। বাবাকে সন্মান জানিয়ে বাংলার সিনেমায় এই উজ্জল তারকা প্রোডাকশন হাউসও খুলেছেন বাবার নামে।
জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হলেও নিজের শিকড় কখনও ভোলেন নি দেব। সেকারণে সময় পেলেই ছুটে যান নিজের বাড়িতে।হাসি-ঠাট্টায় গল্প গুজবে মেতে ওঠেন পরিবারের সকলের সাথে। মাটিতে পা রেখে চলা সেই দেব এইবার ঘনঘন বাড়ি যাচ্ছেন।আপাতত সুটিং শিকেয় তুলে রেখে তাই তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঘাটাল লোকসভা জুড়ে। ঘাটালে একটা বাড়িও নেওয়া হয়েছে দেবের থাকার জন্য।বিগত বাম সরকারের আমলে সন্ত্রাস কবলিত এলাকা হিসাবেই পরিচিত ছিল কেশপুর।
শুধুমাত্র তৃণমূল করার অপরাধে বহুজন শহিদ হয়েছেন এই কেশপুরেই। কেশপুরে সিপিএমের দাপট এতটাই ছিল যে প্রতিবেশী বাড়িতে কেউ এলে তাঁর ওপরও নজরদারি চালানো হত।এই কেশপুর থেকে লক্ষাধিক ভোটে বারবার জয়ী হতে দেখা গিয়েছে বামপ্রার্থীকে।এমনও দেখা গিয়েছে কোন বুথে সিপিএম ৪০০ ভোট পেলে সেখানে তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৫-১০টি।সেইসময় বারবার অভিযোগ তোলা হত সন্ত্রাসের পথে হেঁটেই সিপিএম বুথ দখল করেছে।
২০০৯ সালে এই ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোটের প্রার্থী ছিলেন প্রাক্তন বিচারক নুরে আলম চৌধুরী। কিন্তু তিনি পরাজিত হন। ২০১৪ সালে একপ্রকার জোর করেই দেবকে প্রার্থী করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রথমেই ঘাটাল লোকসভার সন্ত্রাস কবলিত সেই কেশপুরেই দেব দৌড়ে যান ভালবাসার টানে। তারপরেই ঘটে যায় পরিবর্তন। যে কেশপুরে একদিন তৃণমূল করার অপরাধে গুলি খেতে হত।
সেই কেশপুরেই এখন ঘাসফুলের দাপট। দেবের বেড়ে ওঠা বাম ঘরানার মধ্যে দিয়েই। দেবের জেঠু আগাগোড়াই সিপিএম সর্মথক। সেই পরিবারে বেড়ে ওঠা দেব এইবারেও ঘাটাল লোকসভার তৃণমূলের প্রার্থী।মানুষের জনসর্মথনের ওপর ভরসা রেখেই দ্বিতীয় বারে জন্য ফের সাংসদ হয়ে দিল্লি যাওয়ার ব্যপারে যথেষ্ট আশাবাদী ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী।