রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের অধীনে থাকা পিপিপি মডেলের বেশ কয়েকটি ইউনিট এখন থেকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের অধীনে চলবে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে ওই নির্দেশিকা এসেছে। ডায়ালিসিস, এমআরআই, ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান, ডিজিটাল এক্স-রে সহ আরও কয়েকটি ইউনিট এই তালিকায় রয়েছে। এদিকে জেলা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে মেডিক্যালে রূপান্তরের সময়ে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধের সমস্যা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ দাবি, কয়েকদিন ধরেই এই সমস্যা চলছে।
তবে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর এটি মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, সব ওষুধই পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। এদিকে মেডিক্যাল কলেজের পরিষেবা সব জায়গায় সঠিক রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার একটি বৈঠক হয়। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের সুপারিনটেন্ড্যান্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, জেলা হাসপাতালের বেশকয়েকটি ইউনিট পিপিপি মডেলে চলছিল। এখন সেগুলি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে আসছে। মেডিক্যালে শিশুদের ওষুধের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। যতটা ওষুধ প্রয়োজন ততটা পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিন জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, প্রয়োজন মতো ওষুধ সংগ্রহ করা যাবে। ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য আগামীদিনে মেডিক্যাল কলেজের ফান্ড এলে আশা করি এই সমস্যা আর থাকবে না। মেডিক্যাল কলেজের সব জায়গায় পরিষেবা সঠিকভাবে হচ্ছে কি না আমরা তা সমীক্ষা করে দেখছি। এসব দেখতেই এদিন বৈঠক করেছি। উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, আমাদের কাছে তালিকাভুক্ত সব ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। তাছাড়া কোনও রোগীর অন্য ওষুধের প্রয়োজন হলে তা কেনার জন্যও ফান্ড রয়েছে।
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ভিতরে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ এখন চলছে। কলেজের ভবন নির্মাণের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও জেলা হাসপাতালের ভবনের একাংশকে নতুন করে মেডিক্যাল কলেজের জন্য সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ১০তলা ভবনেও মেডিক্যাল কলেজের উপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, এমএসভিপি ও বেশকয়েক জন চিকিৎসক নিয়োগও হয়েছে। ওই চিকিৎসকরা এখানকার চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। সম্প্রতি এমসিআই’র প্রতিনিধিরা মেডিক্যাল কলেজ পরির্দশন করে যান।
এখন এমসিআই’র অনুমোদন এলেই এখানে এমবিবিএস কোর্স চালু হয়ে যাবে। তার আগে জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন পরিকাঠামোকে উন্নত করা কাজ চলছে। এখানকার সমস্ত বিষয়কেই ধীরে ধীরে মেডিক্যাল কলেজের অধীনে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ডিজিটাল এক্স-রে, এমআরআই, সিটিস্ক্যান, নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান, ডায়ালিসিস ইউনিট মেডিক্যাল কলেজের অধীনে নিয়ে আসার নির্দেশিকা এসেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, একটা পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। রোগীদের পরিষেবা সঠিকভাবে চলছে কি না, হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডগুলিতে সঠিক পরিষেবা পৌঁছচ্ছে কি না, হাসপাতালের স্যালাইন, অক্সিজেন সহ অন্যান্য বিষয়গুলি সঠিকভাবে রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি শিশুদের কিছু ওষুধ পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। শিশুদের কিছু ওষুধ ট্যাবলেট আকারে থাকায় তা দিতে সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এক্ষেত্রে সিরাপ আকারে ওসব ওষুধ পাওয়া গেলে সুবিধা হতো। আবার কিছুক্ষেত্রে ড্রপের মাধ্যমে যেসব ওষুধ দিলে সুবিধা হয় তা পেতেও সমস্যা হচ্ছে। মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের অন্যান্য পরিকাঠামো গঠনের মতো মেডিক্যালের কলেজের ওষুধ কেনার জন্য এমএসভিপি’র ফান্ডেও আগামী দিনে টাকা আসতে পারে। সেই টাকা এলে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকবে না।