তৃণমূলের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিজেপিতে কোন্দল তুঙ্গে, ববির অপসারণের দাবি জোরাল


বৃহস্পতিবার,১৫/১১/২০১৮
758

বাংলা এক্সপ্রেস---

কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিজেপির অন্তর্দন্দ্ব এখন চরমে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে অন্তত ২২ টি আসন দখলের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। কিন্তু এই জেলার নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল জানান দিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্বপ্ন সফল করা কঠিন কাজ। বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সাংগঠনিক পশ্চিম ভাগের সভাপতি অভিজিৎ দাস (ববি)-র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন দলেরই একাধিক নেতা। তাঁদের অভিযোগ, ডায়মন্ডহারবার-র তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে জেলা থেকে বিজেপিকে তুলে দিতে চাইছেন ববি।

এই জেলার বিজেপির পুরনো নেতাদের কোন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকি অগনতান্ত্রিক ভাবে হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ করেই দলীয় নেতাদের কমিটির বিভিন্ন পদ থেকে অপসারন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ববির বিনুদ্ধে। বিজেপির নামখানা এলাকার জনপ্রিয় নেতা তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা অরুন কুমার জানা বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পশ্চিম ভাগের সহ সভাপতি। তাঁর দাবি, কখনই হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ করে কাউকে পদ থেকে যেমন অপসারন করা যায় না তেমনি কাউকে অন্তর্ভুক্তও করা যায় না।

কিন্তু অগনতান্ত্রিক উপায়ে তেমন ফতোয়াই জারি করে চলেছেন সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, আসলে জেলা থেকে বিজেপি তুলে দিয়ে তৃণমূলের হাত শক্ত করতে চাইছেন ববি। এই প্রয়াস সফল হবে না বলে মন্তব্য করেন অরুনবাবু। শুধু অরুনবাবুই নন, এই জেলা বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা ববির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একসময় যাঁরা জেলা কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সহ সভাপতি পদে থাকা বিজেন হালদার, পান্নালাল হালদার, আলোশিখা খামারু, অশোক বর্মন,জয়ন্ত মাঝি,সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা জহরলাল মন্ডল, কিষাণ মোর্চার নেতা গৌতম নস্কর, সিদ্ধার্থ বসু প্রমুখ। একাধিক মন্ডল কমিটির নেতাও বিজেপির এই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অস্ত্র শান দিচ্ছেন।

ববির বিরুদ্ধে একাধিকবার রাজ্য কমিটির কাছে নালিশ জানিয়েছেন দলের ববি বিরোধী শিবির। এমননকি জেলায় বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সভাপতি পদে ববি স্বমহিমায় থেকে গিয়েছেন। দলের রাজ্য নেতাদের এই নীরবতায় ক্ষুব্ধ অরুনবাবুরা। কি ভাবে দিলীপ ঘোষদের ঘুম ভাঙানো যায় তারই কৌশল খুঁজছেন জেলার ববি বিরোধী নেতারা। এরই মধ্যে জেলার মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে রাসমনির বংশধর শ্যামলী দাসের নাম উঠে এসেছে। এই লোকসভা কেন্দ্রের গ্রাম থেকে গ্রামন্তরে ভেসে বেড়াচ্ছে শ্যামলী দাসের নাম। শুধু বিজেপির সমর্থকরাই নন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের একটা অংশ চাইছেন এবার বদল আসুক।

লোকসভা কেন্দ্রটি তফশিলী জাতির জন্য সংরক্ষিত আসন। কয়েক লক্ষ মৎস্যজীবী মানুষের বসবাস। রানিমা শ্যামলী দাস মৎস্যজীবীদের উন্নয়নে একাধিক কাজ করেছেন। তাই এই কেন্দ্রে রানি রাসমনিত নাতবউ প্রার্থী হলে তৃণমূলের পক্ষে আসনটি ধরে রাখা কঠিন বলেই রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছে। জেলা বিজেপির ববি বিরোধী শিবির চাইছেন রানি মা প্রার্থী হোন। কিন্তু জেলা সভাপতি তা আটকে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ। অরুন কুমার জানা অভিযোগ করে বলেন, আসনটি দিলীপ জাটুয়ার কাছে বিক্রি করতে চাইছেন জেলা সভাপতি। তবে এই অপচেষ্টা প্রতিহত করবেন বলে জানান অরুনবাবুরা। রানিমা শ্যামলী দাসকে মথুরাপুর থেকে প্রার্থী করা হবেই- জানালেন তিনি।

শ্যামলী দাস বলেন, জনসংঘের সূচনা হয়েছিল রানি রাসমনির বাড়ি থেকেই। অতীন্দ্রনাথ দাস,শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সহ সেইসময় জনসংঘের নেতারা এই বাড়ি থেকেই কৌশল, চলার পথ ঠিক করতেন। এখন কেউ দলকে নিয়ে অচলাবস্থা তৈরী করতে চাইলে তা বরদাস্ত করা হবে না। শ্যামলী দাস জানান, বিজেপির সদস্যপদ গ্রহন করেছে তিনি। এখন আর দলের মধ্যে অন্যায় বরদাস্ত করবেন না। মথুরাপুরে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে শ্যামলী দাস জানান, মানুষ চাইছেন তাঁকে। সেই দাবিকে তো মান্যতা দিতেই হবে। কারন রাসমনি পরিবারের রক্ত বইছে তাঁর শরীরে। মানুষের পাশে তো দাঁড়াতেই হবে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট