একদিকে আধুনিকতার টান অন্যদিকে সরকারি সাহায্যের অভাব, দুয়ের মাঝে ভুগছে দাঁতন-২ ব্লকের শ্যামসুন্দরপুরের হস্তচালিত তাঁতশিল্প


বৃহস্পতিবার,২০/০৯/২০১৮
474

বাংলা এক্সপ্রেস---

পশ্চিম মেদিনীপুর:- একদিকে আধুনিকতার টান অন্যদিকে সরকারি সাহায্যের অভাব, দুয়ের মাঝে ভুগছে দাঁতন-২ ব্লকের শ্যামসুন্দরপুরের হস্তচালিত তাঁতশিল্প। এই শিল্পের ওপর নির্ভরশিল পরিবারগুলির অভিযোগ কোন রকম সরকারি সাহায্য না থাকার কারনে তাঁরা এই ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না। শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে এই ব্যবসা তথা এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। তাঁদের প্রত্যেকেরই দাবি সরকার বিষয়টির দিকে নজর দিক। তা না হলে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবেনা।

তাঁতের কারিগর তথা শামসুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা এখন আদিবাসী শাড়ি ও গামছা বেশি তৈরি করছেন কিন্তু হতে বোনা তাঁত আধুনিক শাড়ির কাছে হার মানছে। তাঁদের কাছে তেমন উন্নতমানের মেসিনও নেই যে তারা আধুনিকতার সাথে টেক্কাবদেবেন। তাই আদিবাসীরাও আজ আধুনিক শাড়িতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। তাই বিক্রির পরিমানটা অনেকাংশে কমেছে।

প্রসঙ্গত কয়েক বছর আগে এলাকার এই শিল্পকে গতি দিতে একটি ক্লাস্টার সমিতি গড়া হয়েছিল। এমনকি এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য বেশকিছু উন্নতমানের যন্ত্রপাতিও এসেছিল। কিন্তু তা আর কোন শিল্পিকেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন যন্ত্রপাতিগুলি সমিতির ঘরে পড়ে-পড়ে নষ্ট হচ্ছে কিন্তু কাউকে দেওয়া হচ্ছেনা। তাঁদের আশঙ্কা রাজনৈতিক কারনেই তাঁদের কাছে সুবিধাগুলি পৌঁচাচ্ছেনা।

বাসন্তী দাস নামে এক মহিলা বলেন, ৩০বছর ধরে হাতে তাঁতের শাড়ি ও গামছা বুনি। কোন রকম সংসার চলে যায় কিন্তু সুতো আর রং-এর যা দাম বেড়েছে তাতে আর এই ব্যবসা চালানো সম্ভব হচ্ছেনা। সরকার থেকে একবার ক্লাস্টার সমিতি তৈরি হল কিন্তু তাও আবার বন্ধ হয়ে গেল। তাই আমদের কেনা বেচা বলতে ওড়িশার বাজারের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। তা লাভের পরিমানও খুব কম।

শ্রীমতি দাস নামে গ্রামের এক মহিলা বলেন, আমার শ্বশুরের আমল থেকে এই কুটির শিল্প চলছে। আমি ৪০ বছর এই গ্রামে এসেছি কিন্তু কোনদিনও কোন সরকারি সাহায্য পাইনি। তাঁতকল থেকে শুরুকরে সুতো সবকিছু কিনে আমাদের ব্যবসা করতে হয়। সরকার যদি ভর্তুকি দিতেন তাহলে উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটু কম খরচ হত আর লাভটাও একটু বেশি পাওয়া যেত। তাই এখন এই শিল্পের হাল খুব খারাপ।

শ্রীদাম দাস নামে এক তাঁত শিল্পি বলেন, আমার বয়স প্রায় ৫৫ তার আগে থেকে আমার বাবা, দাদুর আমল থেকে এই শিল্পের ওপর নির্ভর শিল। এখন সরকারি হস্তক্ষেপের অভাবে এই শিল্প আমাদের গ্রাম থেকে মুছে যেতে বসেছে। মুখ্যমন্ত্রী কুটিরশিল্পের উন্নতির জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করলেও তা আমরা পাচ্ছিনা।
রমেন দাস নামে গ্রামের আর এক তাঁত কারিগর বলেন, অমাদের এই শাড়ি,গামছা বিক্রির জন্য সরকার থেকে একটা হাটচালারও ব্যবস্থা করা হত তাহলে ব্যবসাটা একটু ভালো চলত। সুতো আর রং টাও যদি সরকার কম মুল্যে আমাদের দিতেন তাহলে অনেকটা উপকার হত।
দাঁতন-২ বিডিও দীপান্বিতা পাত্র বলেন, অামি বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব। কুটিরশিল্প কোন ভাবেই নষ্ট হতে দেওয়া যাবেনা। আসলে এই বোষয়ে আমায় কেউ কিছু জানায়নি তাই বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। আমি অবশ্যই পদক্ষেপ নেব।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট