আজব প্রেম – গল্প হলেও সত্যি


বুধবার,২৯/০৮/২০১৮
595

সুমন করাতি---

জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিক নিতকে একবার বলেছিলেন, যেখানে ভালবাসা থাকবে সেখানে পাগলামিও থাকবেই। তবে সেই পাগলামির আড়ালে কোনও না কোনও কারণও থাকবে।নিতকের বলা কথাগুলোকে বোধ হয় মনে মনে পণ হিসাবে আওড়ে ফেলেছিলেন বিশ্বজিত্ পোদ্দার। না হলে চারপাশে অপ্রেম-এর হাওয়ার মাঝে তিনি কী করে এমন পাগলপাগারা প্রেমের ফাগুন গান শোনাচ্ছেন!

কোনও একদিন ট্রেন সফরের সময় এক মোহময়ীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল বিশ্বজিতের। সফরের মঝে দু-চার কথা হয়েছিল দুজনের। একথা-সেকথা বলতে বলতে কখন যে সেই মোহময়ীর গন্তব্য এসে পড়ে! ঝটিকা সাক্ষাতের হ্যাং-ওভার কাটতে কাটতেই বিশ্বজিতকে বিদায় জানিয়ে অদৃশ্য হয়েছিল সেই মোহময়ী। মোহাচ্ছন্ন বিশ্বজিতের সেদিন বড় একখানা ভুল হয়ে গিয়েছিল। প্রেমের মাঝে এমন ভুলের খেসারত যে কত বড় হয়, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বিশ্বজিত্। মোহময়ীর নাম জানতে ভুলে গিয়েছিল সে। মোহময়ীর যোগাযোগ নম্বর, বাড়ির ঠিকানা, রোজকার সুলুকসন্ধান, কোনও কিছুই হালফিলের স্মার্ট ছেলেদের মতো জিজ্ঞেস করে ওঠা হয়নি তাঁর। ফল, নিত্যযাত্রার ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছে সেই মোহময়ী। বিশ্বজিত হাজার চেষ্টা করেও আর তাঁকে খুঁজে বের করতে পারছেন না। তবে হালও ছাড়ছেন না বেহালার যুবক।

হাওড়া থেকে কোন্নগরের পথে নিত্যযাত্রী হলে আপনার চোখে পড়ে থাকতে পারে এমন পোস্টার। একাধিক ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় বিশ্বজিত সব মিলিয়ে চার হাজার পোস্টার লাগিয়েছেন। সেই মোহময়ীর সঙ্গে আরেকবার দেখা করতে চায় সে। কিন্তু কিছুতেই তাঁকে খুঁজে পাচ্ছেন না ২৯ বছরের বিশ্বজিত্। তাই তাঁর সন্ধানেই এমন পোস্টার। পেশায় রাজ্য সরকারী কর্মী বিশ্বজিত্ রোজ অফিস টাইমের পরে হাওড়া থেকে কোন্নগর পর্যন্ত ট্রেনে বারকয়েক যাতায়াত করছেন। যদি ভাগ্যের ফেরে আবার সেই মোহময়ীর সঙ্গে কোনও ট্রেন কম্পার্টমেন্টে দেখা হয়ে যায়!

সেই মোহময়ীই এখন তাঁর ড্রিমগার্ল। বিশ্বজিত্ বলছেন, ”ওর সঙ্গে দেখা হওয়ার দিন আমি যে টি-শার্ট পরেছিলাম, এখন ওটা পরেই ওকে খুঁজি। আমি এত কিছু করছি একটাই কারণে। ওর নজরে যদি পোস্টারগুলো একবার পরে! ও যদি আমার সঙ্গে আরেকবার দেখা করতে চায়!” মনে মনে বিশ্বজিত্ পণ করে বসেছেন, যতদিন না তাঁর সঙ্গে সেই মোহময়ীর দেখা হচ্ছে, তিনি এভাবেই ও টি-শার্ট পরে অফিস শেষে হাওড় থেকে কোন্নগর যাওয়া-আসা করবেন!

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট