চন্দননগর: সকাল থেকে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে উঠেছিল বাসিন্দাদের। খানা-তল্লাশিতে জানা গেল এলাকারই একটি বাড়ি থেকে আসছে দুর্গন্ধ। আরও জানা গেল এক বৃদ্ধের মৃতদেহ পচে যাওয়ার কারণে আসছিল দুর্গন্ধ।পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে দেখে দাদা গোপীনাথ মুখোপাধ্যায়ের পচা-গলা মৃতদেহ জড়িয়ে শুয়ে রয়েছেন তাঁরই ছোটো ভাই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।
ঘটনাটি চন্দননগরের বোড়ো চাঁপাতলার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপীনাথবাবু ও অপূর্ববাবু দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। একই বাড়িতেই তাঁরা থাকতেন। শনিবার থেকেই গোপীনাথবাবুকে আর দেখতে পাওয়া যায়নি। গতকাল সকাল থেকে অসহ্য দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। দুর্গন্ধের উৎস সন্ধানে গিয়ে দেখা যায় দিন কয়েক আগে মৃত্যু হয়েছে গোপীনাথবাবুর। আর সেই মৃতদেহ পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এরপরই চন্দননগর থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় বিছানায় গোপীনাথবাবুর পচা-গলা মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। আর তাঁর ভাই অপূর্ব সেই দেহ জড়িয়ে ধরে শুয়ে ছিলেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনও উত্তর দেননি অপূর্ব। শুধুই চেঁচামেচি করতে থাকেন তিনি।
গোপীনাথবাবু ও তাঁর ভাই কোনও কাজ করতে পারতেন না। প্রতিবেশীরা কেউ কিছু দিলে তাঁদের খাওয়া জুটত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেইভাবে দেখারও কেউ ছিল না। অন্য দুই দাদা থাকলেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ খুব কম ছিল। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণেই তাঁদের কাছে কেউ যেত না।
চন্দননগর থানার এক পুলিশকর্মী বলেন, “দাদার মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে ছিল ভাই। আমরা এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। দুর্গন্ধ বের হতেই এই ঘটনা সামনে আসে।” স্থানীয় বাসিন্দা দীপালি দাস বলেন, “তিন-চারদিন আগে গোপীনাথবাবুকে শেষবার দেখা যায়। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দেখে অসুস্থ বলে মনে হয়েছিল। শনিবারের পর থেকে আর কিছু জানি না। দু’জনেই মানসিক ভারসাম্যহীন। বেশিরভাগ সময়ই জামা-কাপড় ছাড়াই থাকতেন। তাই আমরা বেশি তাকাতামও না।” গোপীনাথবাবুর এক দাদা মানস মুখোপাধ্যায় ও বউদি রুনাদেবী মৃতদেহ দেখেই চলে যান। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় কারণে কোনও যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছেন রুনাদেবী। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। অপূর্ববাবুকে কোনও হোমে রাখার দাবি জানিয়েছেন অন্য বাসিন্দারাও ।