মুর্শিদাবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ঘোষণাই সার ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি আজও? প্রশ্ন তুললেন ফারুক আহমেদ


শুক্রবার,২০/০৭/২০১৮
807

বিশেষ প্রতিবেদক

মুর্শিদাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে সরকারি উদ্যোগ আর চোখে পড়েছে না কেন প্রশ্ন তুললেন উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশনের সম্পাদক তথা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সমাজকর্মী ও বিশিষ্ট লেখক ফারুক আহমেদ। বাস্তবিক আজও মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়নি এবং উদ্বোধনও হয়নি। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে সরকারি উদ্যোগে ভাঁটা দেখে জেলাবাসী হতাশ হয়েছেন। “দ্রুত গতিতে সরকারি উদ্যোগে মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হবে, নইলে সরকারকে ভুগতে হবে” এ কথা বলছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার অন্যতম দাবীদার ও আন্দোলনকারী ফারুক আহমেদ। সরকারি উদ্যোগে সংখ্যালঘু উন্নয়ন শধু প্রতিশ্রুতির ফানুস ইতিমধ্যে দেখা গেছে বেশিরভাগ প্রকল্প কার্যকারিই হয়নি। এই অভিযোগও তোলেন ফারুক আহমেদ।

দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চ-শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদে।
দক্ষিন দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ ও দার্জিলিং-এ আরো চারটে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে– বিধানসভায় এই কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক বাজেট বক্তব্যে তিনি আরও জানিয়েছিললেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষাকর্মী নিয়োগও করা হবে। শিক্ষা ও গবেষণার গূণগত মান ও উচ্চশিক্ষার উৎকর্ষ স্থাপনে সরকার বদ্ধপরিকর। কয়েক দশকের দাবীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে পিছিয়ে থাকা মানুষদের যোগ্য করে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার উদ্যোগ নিল। মহাত্মা গান্ধীও এই ধারণা পোষন করতেন, অনগ্রসর, অবহেলিত, প্রান্তিক, সংখ্যালঘু মানুষদের অগ্রগতিতে স্কুল, কলেজ ওও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরি সংখ্যালঘু এলাকায়। বাস্তবিক এই কারণে নিতে হয় কিছু প্রকল্প, পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ যার রূপ দিতে হয় বাস্তবে। এই চারটে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা উন্নয়নের বাতাবরণে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। পরে আরও কয়েটি জেলায় যেমন পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হল।

মুর্শিদাবাদ জেলা রাজ্যের সর্বাধিক মুসলিম প্রধান এলাকা। শিক্ষায় বহু বছর ধরে এই অঞ্চল অবহেলিত। নতুন সরকার আসার পর উচ্চশিক্ষা প্রসারে নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচী হয়েছে এ পর্যন্ত। মুর্শিদাবাদে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা থাকলেও শিক্ষার প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই যথেষ্ট ছিল না। কিছু কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থাকলেও কোন স্বয়ং সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় মুর্শিদাবাদে নেই। সংখ্যালঘু উন্নয়নে সারা দেশ জুড়ে নানা রকম বাধা। মৌলবাদী নানা সংগঠন অনগ্রসর উন্নয়নে নানা বাধা দিলেও আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে বরাবর সরব। তিনি বরাবর অনগ্রসর উন্নয়নের পক্ষে।

নভেম্বর ২৬, ২০১৫ শহীদ মিনার কলকাতায় অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশে সংখ্যালঘু উন্নয়ণকামী নেতা সিদ্দীকুল্লা চৌধুরীর উপস্থিতিতে বিশিষ্ট গ্রন্থ প্রকাশক, সমাজ-সেবক, সহ অধিকর্তা দূরশিক্ষা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় তথা রিসার্চ জার্নাল ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ তাঁর মৌখিক ভাষণে ও লিখিত আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। মুর্শিদাবাদের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জোরালো ও আন্তরিক দাবী জানান ফারুক আহমেদ। ওইদিন তাঁর সম্পাদিত ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা “উদার ভারত নির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ” সংখ্যাটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। সমসাময়িক দৈনিক বিভিন্ন সংবাদপত্রে তার উল্লেখ আছে। 

এছাড়াও ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ড. মধু মিত্র, ড. ইন্দ্রদীপ ঘোষ এবং ফারুক আহমেদ তাঁদের স্বাক্ষর সমন্বিত দাবী পেশ করেন এই মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবীতে। 
কন্যাশ্রীর সাফল্য, পাশাপাশি অনুমোদিত ১১ টি স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ৯২ টি কলেজে ন্যাক মূল্যায়ন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীর যুগান্তকারী পদক্ষেপ এর ফলেই বাংলাতে শিক্ষার প্রসার ঘটছে দ্রুত। তার সঙ্গে এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে সাধুবাদযোগ্য। ভবিষ্যত মহীরুহের অঙ্কুর,–এই ঘোষণা। অনেক শুভানুধ্যায়ীর সঙ্গে ফারুক আহমেদ এই উদ্যোগের যথাযোগ্য মর্যাদা ও সম্মান জানিয়েছেন। ফারুক আহমেদ মুখ্যমন্ত্রীর এই উন্নয়ন যজ্ঞে নিজেকে সামিল করতে পেরে ধন্য ও ভবিষ্যত উন্নয়নমূলক প্রকল্পে নিজে ও নিজের ‘উদার আকাশ’ পত্রিকাকে সামিল করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ, সমীপেষু– মুর্শিদাবাদে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ : একটি প্রস্তাবনা নিয়ে আবেদনর কিছু অংশ তুলে দিলাম।
‘বর্তমান সরকারের আমলে যে দ্রুতগতিতে প্রায় প্রতিটি জেলাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা এযাবৎ আমাদের ভাবনাতেও ছিল না। ফলত, মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীর মনে লালিত দীর্ঘদিনের পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বাসনা আজ আর স্বপ্ন মনে হচ্ছে না। তথাকথিত আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের মাধ্যমে এই জেলার মানুষের উচ্চশিক্ষার আকাঙ্খা পূরন হবে না। এখানে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী কলেজে পড়তে আসেন-তারা কেবলমাত্র জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় না থাকার কারণে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। অতএব, সেই পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রত্যাশা আকাঙ্খা পুরনের জন্যই এই জেলাতে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন জরুরি।’
‘প্রসঙ্গত আপনাকে জানাই, ইতিমধ্যেই ওয়েবকুপার পক্ষ থেকে গত ৪ অক্টোবর ২০১৫ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সফলভাবে পথ সভা সংগঠিত করেছি। সেখানে জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও গত ৯ নভেম্বর ২০১৫ বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মাননীয় মান্নান হোসেনের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমর্থনে সফল কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।’

‘অতএব পিছিয়ে পড়া জেলার তকমা ঝেড়ে ফেলে উন্নত মুর্শিদাবাদ ও উন্নত বাংলা গড়ার প্রয়োজনেই এই জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মাননীয়া জননেত্রীর নতুন বাংলা-সোনার বাংলা নির্মাণের অক্লান্ত প্রয়াসে আজ বাংলা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাকে বিশ্ব বাংলা গড়ার যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে আপনার অভিভাবকত্বে ও সুযোগ্য নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদ জেলাও তার শরিক হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক স্বপ্নপূরন মাননীয়া জননেত্রীর মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হবে এমনই আমাদের সকলের প্রত্যাশা। এবিষয়ে আপনার সনির্বন্ধ বিবেচনা ও উদ্যোগ গ্রহণের প্রত্যাশায় রইলাম।’
সূত্র: মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ, সমীপেষু– মুর্শিদাবাদে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ: একটি প্রস্তাবনা, প্রস্তাবক-ড. মধু মিত্র, সহকারী অধ্যাপক, ডোমকল কলেজ, মুর্শিদাবাদ, ড. ইন্দ্রদীপ ঘোষ, সহকারী অধ্যাপক, ইউ সি টি সি, মুর্শিদাবাদ, এবং ফারুক আহমেদ, সম্পাদক উদার আকাশ, স্থান: বহরমপুর, তারিখ: ১৭-১২-২০১৫

মুর্শিদাবাদ জেলার বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে মুর্শিদাবাদ স্টাডিজ, ফার্সি স্টাডিজ এবং এখানকার স্থানীয় ইতিহাস ও সমন্বয়ী সংস্কৃতির চর্চা কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে তার সুষ্ঠু দিশা নির্দেশে এই গবেষণামূলক প্রজেক্টটি এই জেলার বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে সাম্প্রতিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে হয়।
বিগত কয়েক বছর ধরে এই জেলার বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকাকে মান্যতা দিয়েও অতএব বলে রাখা ভালো এর আগে কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায়োগিক সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করেনি। মুর্শিদাবাদ জেলার ওয়েবকুপা অবশ্য তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন। মিডিয়া ও রাজনৈতিক স্তরে বিষয়টিকে সর্বপ্রথম সদর্থকভাবে ও সফল পেশাদারি ভাবে তুলে ধরেছেন লেখক ও সম্পাদক ফারুক আহমেদ। মনে রাখতে হবে তিনি ২৬ নভেম্বর ২০১৫ সালের শহীদ মিনারে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ডাকে বিশাল সমাবেশে এই বিষয়টিকে জোরালোভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরেছিলেন। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি ও বক্তা ছিলেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মুর্শিদাবাদ জেলার বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সরকারি ঘোষণা বাস্তব। সরকারী স্তরে জমি খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তিনিই প্রথম এই জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ও আবেগের মর্যাদা দিলেন। আর, সেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আড়ালে থেকে যারা অক্লান্তভাবে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছেন তাদের কথা ভোলার নয়।

দলিত ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্কট প্রতিকারে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠিও লিখেছেন ফারুক আহমেদ।
চিঠিটি হুবাহু তুলে ধরা হল নিম্নরূপ।
স্বাধীন হল দেশ কত বছর পেরিয়ে গেল তবুও পিছিয়ে রাখা হল দলিত ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে মুসলিম সমাজকে। ভারত স্বাধীন হওয়ার ৭০ বছর পরেও পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া ঘরের ছেলেমেয়েরা মূল স্রোতে উঠে আসতে পারেনি আজও। বহু সংগ্রাম করে কিছু সংখ্যক উচ্চশিক্ষা নিতে এগিয়ে আসছে এটাই এখন বড় আলোর দিশা। এ বিষয়ে কিছু মিশন স্কুলের অবদান উল্লেখযোগ্য। মুসলিমদের পরিচালিত ট্রাস্ট ও সোসাইটির নিজস্ব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় না থাকার ফলে বহু ছাত্রছাত্রী আর্থিক অনটনে উচ্চশিক্ষা অর্জনে বহু বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও গভীর। রাজ্য সরকার এ বাধা দূর করার জন্য কোনও সরকারি প্রকল্প এখনও গ্রহণ করেনি। পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্তনিগম থেকে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যে ঋণ দেওয়া হয়, তার বিনিময়ে সরকারি চাকুরিরত গ্রান্টার বাধ্যতামূলক করায় বিপদ বেড়েছে। সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকুরিরত মুসলমাদের সংখ্যা খুবই নগন্য, কোথাও আবার শতকরা একজনও নেই। তাহলে সরকারি চাকুরিরত গ্রান্টার পাওয়া যাবে কোথায়? একদিকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষা নিতে চাইলেও অর্থের অভাবে তা তারা নিতে পারছে না। অন্যদিকে চাকুরিরত মুসলমানের সংখ্যা জনসংখ্যার (৩০%) শতাংশের অনুপাতে খুবই কম। তাহলে এই বৈষম্য ঘুচবে কি ভাবে? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দাবি, তারা মুসলমানদের উন্নয়ন করতে প্রবলভাবে আন্তরিক। সভা সমাবেশ ও সমিতিতে এই দাবি জোর কদমে বলে চলেছেন শাসক দলের নেতা-নেত্রী ও মন্ত্রীরা। এই মতো পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি— সরকারের পক্ষ থেকে এই সব দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিশেষ ফান্ডের ব্যবস্থা করুকক। অথবা পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্তনিগম থেকে গ্রান্টারমুক্ত লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিক সরকার উদ্যোগ নিয়ে। আমরা অনুদান চাইছি না উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারের কাছ থেকে পিছিয়েপড়াদের জন্য শুধু মাত্র লোন চাইছি। পিছিয়েপড়াদের তুলে আনার ক্ষেত্রে সরকারের এটা নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই তাদের কল্যাণে সরকারকেই এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের জন্য যদি প্রকৃত উন্নয়ন করতে চান তাহলে এই ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে তিনি দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেন। এই উদ্যেগ নিলে তিনি সহজেই পিছিয়েপড়াদের মন জয়ও করতে পারবেন। এই পথেই একটা পিছিয়েপড়া সমাজ আলোর স্পর্শ পাবে- আমার দৃঢ় বিশ্বাস। মুক্ত চেতনা ও নব চেতনার মধ্য দিয়ে সর্বোপরি সম্প্রীতির সেতুবন্ধন রচিত হবে। মুসলিম ও সংখ্যালঘু সমাজ আলোর দিশারী হবে। এটা বড় প্রয়োজন এই মুহূর্তে। তাই মমতাময়ী মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই খোলা চিঠির সূচনা করলাম।

দেশে ও রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরাতে আমরা বদ্ধপরিকর হয়েছি।

এক পরিসংখ্যানে প্রকাশ, ঋণের দায়ে গত তিন বছরে ৩৮ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। দৈনিক ৩৫ জন কৃষক আত্মহত্যা করছেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে আত্মহত্যার ঘটনা ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।     
মোদি সরকার কৃষকদের কল্যাণে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যদিও লাভজনক প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে। কৃষকদের চেয়ে শিল্পপতিদের নিয়ে মোদি সরকার বেশি চিন্তিত।

গণতন্ত্রে সরকারের চাবি থাকে জনতার হাতে এবং তাদের সরকারকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া উচিত বলে মনে করি।
দেশের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। তারা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। কৃষকরা জমিতে সেচের জন্য সস্তা মূল্যে বিদ্যুৎ ও জল পাচ্ছে না, খালে জলও সরবরাহ হচ্ছে না।
সরকারের কাছে কৃষি কমিশন গঠন করে তাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। কৃষকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ২৩ মার্চ থেকে দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনও শুরু হয়েছিল।
দুর্নীতির সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অন্য দলের সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’ (নিজেও ঘুষ খাব না, কাউকে খেতেও দেবো না) কিন্তু আমরা দেখছি দুর্নীতির ঘটনা একনাগাড়ে প্রকাশ্যে আসছে। এরফলে মোদীর কাজকর্মের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এখন মানুষের সচেতন হওয়ার সময়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন সরকারকে নির্বাচিত করা উচিত যারা সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবে।
কেন্দ্রীয় সরকার জনলোকপাল বিল দুর্বল করেছে বলেও মনে করি। 
কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে মনে হচ্ছে ‘কৃষকবিরোধী সরকার’ হয়ে উঠেছে। আশা রাখি গোটা দেশের সচেতন মানুষ এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করবেন।
কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকবিরোধী, আমজনতাবিরোধী সরকারে পরিণত হয়েছে। আমরা দেখছি প্রত্যেকদিন ৩৫ জন কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। ঋণের দায়ে গত তিন বছরে ৩৮ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে আত্মহত্যার ঘটনা ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সরকারকে তো কৃষকবিরোধী সরকার বলতেই হয়। এই সরকারের আমলে একেরপর এক ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ভারতের কেন্দ্র সরকার জনবিরোধী সরকার হয়ে গেছে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট