রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষী নিবাসে পরিযায়ী পাখির দল এবার আগেই আসতে শুরু করেছে । এখানে রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ী পাখি আসছে গত দু’বছর ধরে । এরা এখানে আসতে শুরু করে সাধারণত জুন মাসের শেষ থেকে । তবে এবার মে মাসের শেষেই জুন মাসের প্রথম সময় থেকেই পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করেছে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত প্রজাতির পাখি এখানে আসে তার মধ্যে এখন শুধু ইগ্রেট আসতে শুরু করেছে।গত বছর এখানে প্রায় ৯৭ হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল। এরমধ্যে ওপেন বিল স্টর্ক ছিল ৬৫ হাজার।
এই পরিযায়ী পাখির আবাস দেখতে প্রতি বছর বহু লোক এখানে ভিড় জমায়। পাখি দেখার আকর্ষণেই এতদিন পর্যটকরা কুলিক পক্ষী নিবাসে এসছেন। পর্যটকদের আরও আকর্ষণীয় করতে সম্প্রতি কুলিক পক্ষী নিবাসকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি পাখিরালয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে ককাটেল, বদ্রি, টার্কি সহ আরও অন্যন্য প্রজাতির পাখি রাখা হয়েছে। এছাড়াও কচ্ছপ উদ্ধার কেন্দ্র তৈরি করে সেখানে কিছু কচ্ছপ রাখা হয়েছে। প্রজাপতি উদ্যানও তৈরি করা হচ্ছে। বনদপ্তরের আশা, এবারেও এখানে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসবে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের সমাগমও ভালোই হবে। পাশাপাশি কুলিক পক্ষী নিবাসের ভিতরে বেশকিছু এলাকা জুড়ে গাছ লাগানো হয়েছে। এই সব পাখিরা বড় বড় গাছের উপরে বাসা বেঁধে থাকে।
এগুলি দেখার জন্য ওয়াচ টাওয়ারগুলিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। রায়গঞ্জ বন বিভাগের ডিএফও দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, কুলিক পক্ষী নিবাসে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। আমরা তাদের জন্য আগে থেকেই গাছ লাগানো, পক্ষী নিবাসের ভিতরের জলাশয়ে মাছ, শামুক ছাড়ার কাজ শুরু করেছি। এবারে পর্যটকরা এখানে এলে পাখি দেখার পাশাপাশি কুলিক পক্ষী নিবাসের ভিতরে পাখিরালয়, কচ্ছপ উদ্ধার কেন্দ্র সহ আরও অন্যান্য জিনিস দেখতে পাবেন। রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া কুলিক নদীর ধারে ১৩০ হেক্টর এলাকাজুড়ে কুলিক পক্ষী নিবাস পড়ে উঠেছে। এখানে প্রতি বছর জুন মাসের শুরুতেই ইগ্রেট, নাইট হেরন, ওপেন বিল স্টর্ক, কর্মোরেন্ট প্রভৃতি প্রজাতির পাখি আসে। দক্ষিণ ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম প্রভৃতি জায়গা থেকেও এখানে পাখিরা আসে। তারা এখানে এসে বাসা বাঁধে, ডিম পাড়ে, বাচ্চা বড় করে তারপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস নাগাদ উড়ে যায়। মূলত ওপেন বিল স্টর্ক প্রজাতির বিশাল আবাসের জন্যেই কুলিক পক্ষী নিবাস বিখ্যাত।