দোকান ঘর নির্মাণ নিয়ে জনমানসে বিক্ষোভ মহিলাদের


রবিবার,০৬/০৫/২০১৮
1918

পিয়া গুপ্তা---

নাট মন্দিরের জমিতে দোকান ঘর নির্মাণ নিয়ে জনমানসে ক্ষোভের সঞ্চার হলো রবিবারে বিকেলে। রবিবার চারটা নাগাদ নাটমন্দির কমেটির ডাকা আলোচনা সভায় একে একে মহিলারা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নাটমন্দির কমেটির সিদ্ধান্তে । তাদের প্রত্যেকের দাবি নাটমন্দির কমেটি সদস্যরা যাতে পদত্যাগ করে। এদিন কালিয়াগঞ্জ এর বহু মহিলারা নাটমন্দিরে জমায়েত হয়ে নাটমন্দির কমেটির সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করেন।তাদের অভিযোগ কিভাবে নাটমন্দির কমেটি কালিয়াগঞ্জ বাসীর সিদ্ধান্ত ছাড়াই নিজেদের সুবিধার্থে মন্দিরের পাশ্ববর্তী দানের জমিতে  স্টল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় । তারা জানায় এই স্টল তৈরির জন্য নাটমন্দির কমেটি বহু গাছ বেআইনি ভাবে কেটে ফেলেছে। তাদের বক্তব্য নাটমন্দির কমেটির লোকেরা এখনি পদত্যাগ করুক।উল্লিখিত উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে অবস্থিত মহেন্দ্রগঞ্জ নাট মন্দির। বিশালার মন্দির সংলগ্ন ময়দান নাট মন্দিরের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে।

এই ময়দানে প্রতিবছর রথ টানতে কয়েক হাজার ভক্তপ্রান মানুষের সমাগম ঘটে। সেই সঙ্গে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকদিন ধরে এই ময়দান জুড়ে বিশাল মেলা বসে। মেলায় জেলা সহ ভিন জেলার দোকানীরা তাঁদের হরেকরকম পসরা সাজিয়ে বসেন। নামযজ্ঞ দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তপ্রান মানুষ ছুটে আসেন মন্দির ও মেলা প্রাঙ্গনে।নাট মন্দির কমিটির তরফে নাট মন্দিরের এই ফাঁকা জমির পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক জুড়ে দোকান ঘর নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে কালিয়াগঞ্জবাসীর মধ্যে। বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত কালিয়াগঞ্জবাসী ও কালিয়াগঞ্জের ভক্তপ্রান মানুষজনের বক্তব্য, নাট মন্দির চত্তর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাইছে মন্দির কমিটি। মন্দিরের বিশালাকার জমির দুই দিকে ঘর তৈরি করলে মন্দিরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে। যারফলে অনুষ্ঠান চলাকালীন মাঠে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী মেলার ব্যাঘাত ঘটবে। দোকান ঘর তৈরি হলে মাঠের জায়গা ছোট হয়ে যাবে। রথ টানতে গিয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হবেন ভক্তপ্রান মানুষজন।

এভাবে বিল্ডিং তৈরি হলে হটাত কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে হাজার হাজার মানুষ এই আবদ্ধ ময়দান থেকে বেড়তে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হবেন। সেই কারণে অবিলম্বে মন্দির কমিটির একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কালিয়াগঞ্জবাসী। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী জনমত দিতে পিছুপা হচ্ছেন অনেকেই। শনিবার দুপুরে নাট মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তপ্রাণ মানুষের ক্ষোভ আচরে পরল মন্দির কমিটির উপর। মহেন্দ্রগঞ্জ নাট মন্দির কমিটির সভাপতি তথা কালিয়াগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সাহা জানান, মন্দিরের সাফসাফাই, বিদ্যুৎ বিল সহ নানান কর্মযজ্ঞ চালাতে গিয়ে প্রতিদিন প্রায় দের থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হয়।সেই কারণে মন্দিরের লাগোয়া মাঠের দক্ষিন ও পশ্চিম দিকে ৪৫ থেকে ৪৭ টি দোকান ঘর তৈরি করে ভারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দোকানের স্থান অনুযায়ী সারে ৩ লক্ষ, ৪ লক্ষ ও ৫ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে কেউ দোকানঘর ছেড়ে দিতে চাইলে অগ্রিম দেওয়া পুরো টাকাটাই তাঁকে ফেরত দেওয়া হবে। দোকান ঘরের উপর তলায় কৃত্তণ শুনতে আসা আবাসিকদের থাকার ঘর, সেবা সমিতির কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে বিনা মুল্যে ছাত্র ছাত্রীদের গোটা বছর যে কোচিং দেওয়া তার জন্য ঘর তৈরি করা হবে। সে সঙ্গে জগন্নাথ দেবের মন্দির নির্মাণ করা হবে।তৃতীয় তলায় বহিরাগত অতিথি ভক্তদের নুন্যতম অর্থের বিনিময়ে থাকার ব্যাবস্থা করা সহ অনুষ্ঠানে আগত কৃত্তণ দলের থাকার ব্যবস্থা থাকবে । সেই সঙ্গে পূর্বদিকে বিশালাকার প্রবেশদ্বার তৈরি করা হবে। বর্তমান অফিস ভেঙ্গে দোতলা করা হবে। নিচে নতুন অফিস ঘর ও দোতলায় রাধাকৃষ্ণের মন্দির নির্মাণ করা হবে। পূর্ব দিকের মন্দির গুলির চূড়া নির্মাণ করা হবে। পরবর্তী প্রজম্মের মন্দির কমিটির সদস্যদের কোনও দিক থেকে যাতে অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয় সেই কথা মাথায় রেখে মন্দির চত্তরের উন্নয়ন করা হচ্ছে।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট