ফারুক আহমেদ: বেলাল চৌধুরী ১৯৩৮ সালের ১২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের ফেণী জেলার ফেনী সদর উপজেলার অন্তর্গত শর্শদি গ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন রফিকউদ্দিন আহমাদ চৌধুরী ও মা মুনীর আখতার খাতুন চৌধুরানী। তিনি দীর্ঘকাল ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃক প্রকাশিত ভভারত বিচিত্রা পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ ২৪ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। গত শুক্রবার থেকে বেলাল চৌধুরীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে আবির্ভূত একজন আধুনিক বাঙালি কবি যাকে ষাট দশকের সঙ্গে চিহ্নিত করা হয়। তিনি সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক এবং সম্পাদক হিসাবেও খ্যাতিমান ছিলেন গোটা বিশ্বে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৪ সালে তিনি একুশে পদক পেয়েছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে কিডনিজনিত সমস্যার কারণে বেলাল চৌধুরীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হতে থাকে তিনি বহুদিন অসুস্থ ছিলেন। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় বেলাল চৌধুরীকে। আজ ২৪ এপ্রিল বেলা ১২ টায় ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মারা যান তিনি।
পশ্চিমবাংলার প্রখ্যাত কবি সুবোধ সরকার বেলাল চৌধুরীর বিশেষ বন্ধু ছিলেন। কবি সুবোধ সরকার বেলাল চৌধুরীকে নিয়ে যা জানালেন, এই প্রতিবেদকে তা তলে ধরলাম “বেলাল চৌধুরী চলে গেলেন। চাঁদ থেকে নেমে এসে, চন্দ্রপথে ঊনআশি বসন্ত হেঁটে, পুনরায় চাঁদে ফিরে গেলেন বেলালদা।
শক্তি সুনীলকে আমরা হারিয়েছি ,সেই শোক এখনো আমাদের হাসি থেকে মুছে যায়নি। আজ দুপুর বারোটায় যখন ঢাকার হাসপাতাল থেকে ফোন আছড়ে পড়ল আমার সিরিটির মোবাইলে, তখন বুঝলাম চন্দ্রজাতক তুমি পারস্যের বালি আর পদ্মার পানিসহ চন্দ্রভুক হতে এসেছিলে।
কারোর নিন্দে করতেন না। কবিরা এ ওর নামে নিন্দে করে নিন্দের ডিভানে শুয়ে অমৃত লেখেন। বেলালদা ছিলেন হিরে বসানো ব্যাতিক্রম।
আপনি এই খারাপ সময়ে কী রেখে গেলেন বেলালদা?
আমি চোখ থেকে চশমা খুলে একবার আপনার মুখের দিকে তাকালাম। একবার আপনার দিকে একবার সুনীলদার দিকে। আপনার আর সুনীলদার দিকে,
একটা সম্পর্কের দিকে । যা আজ এই উপমহাদেশে বিরল হয়ে আসছে।
আপনি রেখে গেলেন সেই বন্ধুত্বের জ্যোৎস্নাকে। ওই জ্যোৎস্নাটাই আপনার কবিতা। ওই জ্যোৎস্নাই আমাদের স্নান। ওই জ্যোৎস্নাই আমাদের গঙ্গা, আমাদের পদ্মা।”