ব্রিটিশ আমলের ডাক বাংলো সংস্কারের অভাবে আজ ভূত বাংলো হয়ে পড়ে রয়েছে উত্তর দিনাজপুরে


শনিবার,৩১/০৩/২০১৮
1012

পিয়া গুপ্তা ,উত্তরদিনাজপুর:

ঐতিহাসিক নিদর্শন কেন্দ্র গুলিকে সংস্কার করে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পকে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।

কিন্তু হেমতাবাদ থানার নওদা গ্রামপঞ্চায়েতের মালোন এলাকায় ইংরেজ আমলের প্রায় দুইবিঘা জমির উপর ১৫ ফিট উঁচু টিনের চাল ও ইটের তৈরি বাংলোটিকে বাঁচিয়ে রাখার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না । ব্রিটিশ শাসিত পরাধীন ভারতে ব্রিটিশদের তৈরি ডাকবাংলো বর্তমানে উত্তরদিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের মালনে একটি ধ্বংসাবশেষের কঙ্কাল সার চেহারা নিয়ে কয়েকশো বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও আজ তার থেকে সবার সাথে জেলা প্রশাসনও দুরত্ব বজায় রেখে চলে আসছে কোন এক অজ্ঞাত কারণে।

ফলে ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাব্দী প্রাচীন এই ডাকবাংলোটি আজ অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। দাড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের স্মিতি আঁকড়ে। সংস্কারের অভাবে ইতিমধ্যেই এটির বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে পড়েছে। চুরি হয়েছে বাংলোর দরজা জানালা। স্বাভাবিক কারনেই এটিকে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে স্থানিয প্রশাসন। ব্রিটিশদের হাতে তৈরি এই ডাকবাংলোতে স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ অফিসাররা থাকতেন। তারা বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করতেন এখানে থেকেই। দিনাজপুরের মহারাজাও মাঝে মাঝে এখানে থাকতেন। স্বাধীনতার পর একজন চিকিৎসক এই বাংলোতে থেকেই গ্রামবাসীদের চিকিৎসা করতেন বলে জানা গেছে। বেশ কিছু বছর আগে স্থানীয় এক বি.এস.এফ এর হাতে ছিল এই বাংলোটি দায়িত্ব । কিন্তু বি.এস.এফ ছেড়ে চলে যাবার পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বুঝতে না পেরে এর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।

বর্তমানে সেই ডাক বাংলোটির পাশে একটি বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে।যে বিদ্যালয়ের নাম মালন জুনিয়র হাই স্কুল হিসাবেই পরিচয় বহন করে আসছে।

ফলে ধীরে ধীরে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি। জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলিকে কালের গ্রাস থেকে বাঁচিয়ে রাখতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে চলছেন বিশিষ্ট ঐতিহাসিক তথা গবেষক ডঃ বৃন্দাবন ঘোষ।
প্রত্নতাত্বিক ডঃ বৃন্দাবন ঘোষ বলেন মালনে যে ভাবে ব্রিটিশদের তৈরি একটি ডাকবাংলোর ধ্বংসাবশেষ যে অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে তা দেখে একজন ভারতীয় তথা উত্তরদিনাজপুর জেলার একজন নাগরিক হিসেবে অত্যন্ত দুঃখ পেয়ে থাকি।হেমতাবাদের এই বাংলোটি যদি উত্তরদিনাজপুর জেলা প্রাসাসন সংস্কার করে তাহলে মালনে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়া সম্ভব হতে পারে।

উত্তরদিনাজপুর জেলা প্রশাসন থেকে অবিলম্বে এই ডাকবাংলোটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু হেরিটেজ ঘোষণা করার কোন তৎপরতা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি।বৃন্দাবন বাবু বলেন মালোন জুনিয়র হাই স্কুলের উচিৎ এই ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেই বেশি করে উদ্যোগ নিতে হবে।তবেই এই ডাক বাংলোটি পরবর্তীতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠলে উত্তর দিনাজপুরের মানুষরা ভীষণ ভাবে উপকৃত হবে। স্থানীয় বাসিন্দা রুমা দেবী জানান দীর্ঘ দিন ধরে এই ব্রিটিশ আমলের ডাকবাংলো টি সংস্কার না হওয়ার আজ তা ভূত বাংলো হয়ে পড়ে আছে।স্থানীয় কোন মানুষ ই ওই বাংলো তে যেতে চান না।আশে পাশের ছেলে মেয়েরা ওই বাংলো টির চেহারা দেখে ভয পায় ।তাই প্রশাসনের উচিত জলদি এই ডাক বাংলো সংস্কার করা।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট