ডিজিটাল ডেক্স: মানুষের শরীরে দুটি কিডনি থাকে যেগুলো শরীরের জলের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং বিভিন্ন দূষিত পদার্থ ছেঁকে ফেলে। কিডনি রোগ একটি নীরব ঘাতক।
কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবছর অনেক মানুষ এ রোগে মৃত্যুবরণ করে।
এ ধরনের রোগের চিকিৎসাও বেশ ব্যয়বহুল। তাই আগে থেকেই কিডনির যত্ন নেয়া উচিত। জেনে নিন কিডনি ভালো রাখার ১০টি উপায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করুন
প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস জল বা তরল খাবার খাওয়া উচিত। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে জল খাওয়ার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে কিডনিতে পাথর হয় না এবং এর স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক থাকে।
লবণ কম খান
খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মানুষের শরীরে প্রতিদিন মাত্র ১ চা চামচ লবণের চাহিদা থাকে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করার অভ্যাস করুন।
অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
শুকরের মাংস ইত্যাদি খেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এমনকি চিপস, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ইন্সট্যান্ট নুডলস এবং লবণ দিয়ে ভাজা বাদামও কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
খাবার তালিকায় অতিরিক্ত প্রোটিন থাকলে কিডনির ওপর চাপ পড়ে এবং কিডনির দুর্বল কোষগুলোর ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রাণিজ প্রোটিন এড়িয়ে মাছ বা ডাল জাতীয় প্রোটিন রাখুন।
রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখুন
রক্তচাপ ১৪০/৯০ এর উপরে থাকলে কিডনির সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কিডনি ভালো রাখতে রক্তচাপ সবসময় ১৩০/৮০ অথবা এর কম রাখার চেষ্টা করুন। রক্তচাপ কমিয়ে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা ও লবণ কম খাওয়া জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে কিডনির রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত রক্তের সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করান। সুগার বেশি থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান
কম বেশি প্রায় সব ওষুধই কিডনির জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধগুলো কিডনির জন্য একেবারেই ভালো নয়। নিয়ম না জেনে নিজে নিজে ওষুধ কিনে খেলে আপনার অজান্তেই কিডনির বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই যে কোনো ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিন।
প্রয়োজনের বেশি ভিটামিন সি খাবেন না
মানুষের শরীরে প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন সি এর প্রয়োজন নেই। নিয়মিত প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশংকা থাকে। তাই প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম বা এর কম ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
কোমল পানীয় ত্যাগ করুন
অনেকেই জলের বদলে কোমল পানীয় বা বিভিন্ন রকমের এনার্জি ড্রিঙ্কস খেয়ে থাকেন। এ ধরনের পানীয় কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন এবং যখনই তৃষ্ণা পায় জল খেয়ে নিন।
ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন
ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে ধীরে ধীরে কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে যেতে থাকে এবং এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পায়। ফলে ধূমপায়ী ও মদ্যপায়ী ব্যক্তি একপর্যায়ে গিয়ে কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়।
কিডনির পরীক্ষা করান
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন অথবা পরিবারের কারও কিডনি সমস্যা থাকলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যাদের কিডনি রোগের ঝুঁকি আছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত