রাসিদউদ্দিনের অমর কাহিনী
মোহাঃ বেলালউদ্দিন মন্ডল
দিনটিছিলো ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ফাইনাল প্রতিযোগিতা ইংল্যান্ডের লর্ডসের ময়দানে।সকল ভারতবাসীর আসার আলো মিট মিট করে প্রজ্বলিত।কেউ কেউ মনে করছিল ভারত হয়তো জিততে পারে।ভারতের মাথায় সন্মানের মুকুট পড়তে পারে।দেখতে দেখতে মনের আসা পূর্ণ হয়ে গেলো।ভারত ক্রিকেট টিম বিজয় হাসিল করেনিল।ভারতবাসীর মনে খুশির আলো প্রজ্জলিত হয়ে উঠলো ।সেই শুভ লগ্নে জন্ম নিলো, বাংলার এক ঐতীযশালী গ্রামে রাশিদউদ্দিন।জীবনের প্রথমদিন পাঠশালা যাবার সময় পাঠশালার নিকটে পুকুরে পায়ের ধুলো বালি ধোয়ার জন্যে নেমে ইস্কুলের পোশাক জলে ভিজে যায় ।রতে রতে বাড়ি ফিরে আসে ,যেন জীবনের প্রথমেই মুশকিলের সম্মুখীন হয়েগেলো,সঙ্গে সঙ্গে প্রথম জ্ঞান অর্জন করে নিল।সিক্ত কোনো ইটের তৈরি স্যাঁতসেঁতে পুকুরে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।কিছুদিন পরে পাঠশালা নানান সমস্যা শুরু হলো ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে।দাবি সরকারি নিয়ম অবহেলা করে শুক্রবার ছুটি রাখতে হবে।তাই পাঠশালার পন্ডিত মহাশয়েরা পড়িল মহ সংকটে।গ্রামের কিছু জ্ঞানী বাক্তিও রাসিদউদ্দিন এর পিতা মিলে পাঠশালার সংকট মুক্ত করিল।পাঠশালা শুরু হয়ে গেল রাশিদউদ্দিনের বাড়িতে ।তাই রাশিদউদ্দিন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করে তার বাড়িতেই।বয়স পূর্ণ না হতেই সহপাঠীদের অনুরোধে তাকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করে নেই পন্ডিত মহাশয় তার মেধার জন্য।বছর শেষে পরীক্ষাই প্রথম স্থান দখল করলো বেশ কিছু বিষয়ে ১০০ পেয়েগেল।তার কিছুদিন পরে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগা প্রতিযোগিতায় জেলাতে পুরস্কার লাভ করলো।পাঠশালার পন্ডিত মহাশয়গন আনন্দবোধ করলো ।
গ্রামের ছোট বড় ,বৃদ্ধ সকলের কাছে সে প্রিয় পাত্র হয়ে উঠতে লাগলো ।তার ব্যবহারে সকলে আকৃষ্ট হয়ে তাকে কেউ গল্প শুনাতো ,কেউ আবার কিছু খেতে দিতে চাইতো, সে যেন সকলের নয়নের মনি।ঈশ্বর পেরিত ছেলে।ধীরে ধীরে গ্রামের বৃদ্ধ মানুষের নিকট থেকে গ্রাম্য রীতি নীতি শিখে নিলো।কচি বয়সে জেনো বৃদ্ধ মানবের মতো জ্ঞানের অধিকারী হয়ে গেল।তারপর গ্রামের বাইরের বিদ্যালয়ে পড়ার জন্য পায়ে হেটে যেতে শুরু করলো তার সহপাঠীদের সঙ্গে ।বিদ্যালয়ে তার ব্যবহার দেখে শিক্ষক শিক্ষিকা আনন্দিত হল।আনন্দে জীবন কাটতে কাটতে হঠাৎ দেখা দিল কালো মেঘের আগমন।একটি খেলার প্রতিযোগিতায় রাজ্যস্তরে সিলেকশন হওয়ার পরেও তাকে বাদ দেওয়া হয় এবং অন্য জনকে ঢুকিয়ে দেয় তারস্থানে।।সে ভেবে পাইনা কি করে হতে পারে ,মনকে প্রশ্নই করে দেশের মধ্যে এখনো মীরজাফর রয়েগেছে।তাই আজও আমরা কর্দমাক্ত রাস্তায় হেঁটে চলেছি ।বিদ্যালয়ের ঘরের প্রয়োজনছিলো কিন্তু তা হয়ে উঠেনা।ছেলে মেয়েরা গাছতলায় বসে পড়ে ।এ সকল লোকেরা তার কারণ।মীরজাফর মৃত্যু বরণ করেছে কিন্তু তার DNA আজ ও ভাইরাসের মতো কিছু মানুষের শরীরে কাজ করে চলেছে অনবরত।তাদের শরীরে এন্টিভাইরাসের প্রয়োজন রয়ে গেছে,কিন্তু কাজটি করবে কে এখন।
তারপর শুরু জীবনের সবচেয়ে দুঃখের সময় তার বাবার ব্যবসার পচুর ক্ষতি হয়ে গেলো তার সঙ্গী ব্যবসায়ীদের প্রতরণার কারনে।আর কাকারা সুযোগ বুঝে সরে যায় যদি পাশে দাঁড়াতে হয়।যেন রাজা তার রাজসিংহাসন হারিয়ে পথে পথে ঘোরার মতো দুরাবস্থা।কতক মীরজাফরের DNA এর জন্যই এই দুরবস্থা।তাই রাশিদউদ্দিন কাজের জন্য কলকাতার দিকে পাড়ি দিল কাজের সন্ধানে ,আগে ক্ষুধা নিবারণ তারপর পড়াশুনা,পেটের জ্বালা বড় জ্বালা ।কিন্তু পড়া সে ছাড়লোনা।পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দিতে আসে সে,সহপাঠীদের সহযোগিতাই তাই বিনা বইয়ে ,সে উত্তৃর্ণ হয়ে গেল।সে যেন ধীরে ধীরে এক উপন্যাসের নায়ক চরিত্র হয়ে উঠলো।বিদ্যালয়ের বাৎসরিক এক অনুষ্ঠানে তাকে হিরোর অভিনয় করতে বলে ,সে শত দুঃখের মধ্যেও সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলে নিজেকে। সকলে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে ।তার অভিনয় দেখে এক শিক্ষক বলে তুমি একদিন উঠবে সর্বোচ্চ শিখরে দেখবে সকলে তোমাকে অধির আগ্রহে।তুমি বীর তোমার থাকিবে উন্নত শির।ইস্কুল ফাইনাল পরীক্ষার শেষে তাকে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ই থেকে একটি মেডেল ও রাজ্য সরকার থেকে কিছু টাকা দেওয়া হয় তাকে ।সেই টাকা থেকে একটি ইস্কুলের পোশাক কিনে নেই ।আর মনে মনে ভাবে আমার কাছে মেডেলের কোনো মূল্য নাই এখন ,মূল্য আছে কেবল টাকার তবে বোঝাবো সকলকে কি করে ।পোশাক পরিতো হিরোর মতো করে ।দুঃখে বুক ফাটে তো মুখে প্রকাশ করা যায়না।হে ঈশ্বর এইতো আমার জীবন।
বয়ঃসন্ধি ক্ষনে রাশিদ উদ্দিনের হাজারো ছেলে মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ত হয়ে উঠে তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয় সকলে।তবে যেন তার হৃদয়ে সকল সময় ভীতির সঞ্চয় হয়।যদি সে অসফল হয় কাজের জীবনে তাহলে তার বাবা মা ভাই বোন দের নিয়ে কিভাবে সমাজে মাথা উঁচু করে চলবে কেননা পৃথিবীতে পয়সার অধিক প্রয়োজন লাগে ।অন্যদিকে জোবেদা পায়েল মনে মনে রাসিদ উদ্দিনকে ভালোবেসে ফেলে কখন যেন কিন্তু রাসিদ উদ্দিনের সেদিকে কোনো লক্ষই ছিলনা কারণ সে নিজের কথায় মগ্ন থাকে সারাক্ষণ যেহেতু সে যে বিষয় নিয়ে পড়তে চেয়েছিল সেটা তার ভাগ্যে জুটলো না ।হায় নিয়তির মার পড়িল তার কপালে ।তাই বেশ কিছুদিন উচ্চ বিদ্যালয় ছেড়ে কাপড়ের কাজে কলকাতায় চলে যায় সে আর পরীক্ষার সময় আবার ফিরে আসে পরীক্ষা দিতে।তার সহপাঠী মকবুল মনে মনে জোবেদা পায়েল কে ভালোবসে কিন্তু জোবেদা পায়েল রাসিদ উদ্দিন কে ভালো বেসেছিল মনে মনে তাই মীরজাফরের DNA এর প্রভাবে মকবুল রাসিদ উদ্দিনের নামে অপপ্রচার করে বিভিন্ন স্থানে ।রাসিদ উদ্দিন সকল সময় চুপচাপ থাকে দুঃখ যেন তার পিছু পিছুই চলে সারাক্ষন। বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে রুমায়া সুলতানা ছিল হিরোইন আর রাসিদ উদ্দিন ছিল হিরো তাই রাসিদ উদ্দিন এর সঙ্গে থাকতে থাকতে তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে পড়ে রুমায়া তাই আবেদের কথা মত রুমায়া সুলতানা রশিদকে একটি প্রেম পত্র দিতে যায় কিন্তু রাসিদ উদ্দিন তাতে স্পর্স পর্যন্ত করলনা।রুমায়া সুলতানা ছিল বিশাল ধনী পরিবারে মেয়ে ।রাসিদ উদ্দিন বাড়ি ফিরে রাত্রীতে মনে মনে ভাবে আর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে কহে হে ঈশ্বর আমারে বহু নারীর প্রেম প্রদান করিতেছ কিন্তু আমি এতই দরিদ্র হয়েছি যে কারো প্রেম আমার চোখেই আসেনা।হায়রে আমার জীবন ,তবে হে ঈশ্বর আমারে রাখিবে সদা সম্মানে ,যতদিন রইবো এই পৃথিবীতে।
রাসিদ উদ্দিন ধীরে ধীরে শত দুঃখ কষ্টের সহিত মুখে হাসি নিয়ে হিন্দু মুসলমান সকল ধর্মের ছেলে মেয়েদের সহিত পড়াশুনা করে চলিলো,তবে তাকে হিন্দু ধর্মের ছেলে মেয়েরা বেশি ভালোবাসতে লাগলো তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে।তার পর বাংলার পড়াশেষ করে পাড়ি দেয় পাহাড়ীপ্রদেশে ।পাহাড়ীপ্রদেশের লোকেদের সহিত তাহার অটুট বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।শিক্ষক মন্ডলী তাহাকে অতি ভালোবাসে ।আর সকল শিক্ষক ও শিক্ষিকা মন্ডলী কহে ও আমাদের প্রিয় ছেলে তাই ও যেখানে ইচ্ছা তাকতে পারে কোনো বাধা নেই তার জন্য ।ছেলেদের প্রবেশ নিষেদ থাকার সত্ত্বেও তাকে কলেজ ক্যাম্পাসে থাকার অনুমতি দিয়ে দেয় ।তবে ভাষাগত তারতম্যের জন্য শিক্ষা গ্রহনে প্রথমে কিছু অসুবিধা হলেও পরে তা মানিয়ে নেয় । গণিতের সূত্র তৈরি করে সকলের মন জিতে নেই এক নিমিষে । প্রিন্সিপাল ম্যাম দেখে কহে এটা আগে কখনো দেখিনি যে এটা হইতে পারে আর ও কহে I am very proud that you are my student. তার পরে এক শিক্ষকের সাহায্যে তিন ঘন্টাতে হিন্দি ভাষা শব্দ ও পড়া শিখে নেই সে ।আর ইন্টার কলেজ কম্পিটিশনে পুরুস্কার জিতে সে ।তাই সেই শিক্ষক কহে তুমি একদিন মহৎ বাক্তিতে পরিণত হবে। তুমি স্বামী বিবেকানন্দের প্রদেশের ছেলে তুমি দেশের নাম রওশন করবে।দেশ তোমাকে পেয়ে গর্ব বোধ করিবে।কিছু সেনা বন্ধুদের সঙ্গে থেকে বেশ কিছু জ্ঞান অর্জন করছিল।একদিন কিছু তথ্য মালগাড়ি টপকে ট্রেনে তুলতে সাহায্য করে ছিল এক সেনাকে ।এই সকল কথা শুনে ও দেখে EX কর্নেল তাকে স্যালুট জানাই আর কহে তুমি হবে দেশের গর্ব ।আমি প্রথমে অন্য ভেবে ছিলাম তোমাকে কিন্তু দেখতে দেখতে অবাক হয়ে গেলাম কি অপূর্ব সুন্দর ব্যবহার আর তোমার কাজ I am very very proud that you my student সকল ছেলে মেয়ে তারই কথা আলোচনা করতে থাকে ।তবে রাসিদ উদ্দিনের মনে অন্য কথা কহে সারাক্ষন।
রাসিদ উদ্দিন ফিরে আসে তার নিজের গ্রামে তার এক বন্ধুর মত শিক্ষকের কথা শুনে সে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হয়ে পড়ে তার গ্রামে।তবে তারে অবহেলা করে এক দারিদ্র ঘরের মেয়ে তাকে না জেনে যদিও উপকার করে ছিল তারে।তবে রাসিদ উদ্দিন তার জবাব দিয়ে দেয় তার কাজের মাধ্যমে যখন মেয়েটির ভুল ভাঙে তখন বহু দেরি হয়ে গেছে ।মেয়েটি অস্রু ধরে রাখতে পারেনি তার চোখে তাই টপ টপ করে গড়িয়ে পরে তার চোখের জল ,কি ভুল হইয়ে গেলো আমার জীবনে। রাসিদ উদ্দিন ঈশ্বর যে সাক্ষী করে বহু কবিতা নাটক উপন্যাস গল্প লিখে আলোড়ন পড়ে যায় ভুবনে ।সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সহতায় রিসার্স চালিয়ে যায় ।আবিষ্কার করে ফেলে অমূল্য থিওরি । মানব যেখানেই থাকুক চুরি ,মিথ্যা বলুক আর অসামাজিক কাজ করুক তার সকল ভিডিও চলে আসবে সম্মুখে যদিও রেকডিং না করা থাকে।আলোড়ন পড়ে গেল দেশ বিদেশে ।সকলে ভাবতে লাগলো আমারও হতে চাই ঐ রাসিদ উদ্দিনের মতো ।আর অসামাজিক কাজ কারি ব্যাক্তি সকলে অসামাজিক কাজ ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে লাগলো ।দেশ সুন্দর সুষ্ট ভাবে পরিচালিত হইতে লাগলো ।সকলে রাসিদ উদ্দিনের দেশকে অনুসরণ করতে শুরু করলো। দেশের প্রধান মন্ত্রী রাষ্ট্রপ্রতি তাকে পুরুস্কৃত করলো। সকল দেশবাসী নিজ নয়নে দেখলো আর গর্ববোধ করিল রাসিদ উদ্দিন আমাদের দেশের ছেলে।কবি লিখিল কবিতা রাসিদ উদ্দিনের লাগি—-
-তুমি রাসিদ উদ্দিন জন্মিলে এই আমার দেশে
ফুটালে হাসি সকল জগৎ বাসীর
তুমি রইবে চিরকাল মানবের অন্তরে
এই ধরণী রইবে যতকাল।
( অাপনি কি কবিতা / সাহিত্য লিখতে ভালোবাসেন , তবে অাজই পাঠিয়ে দিন অাপনার লেখা কবিতা / সাহিত্য বাংলা এক্সপ্রেসে । বাংলা এক্সপ্রেস সমস্ত বিশ্বে অাপনার লেখাকে প্রকাশিত করবে এবং সম্পূর্ন বিনামূল্যে । অামাদের উদ্দেশ্য বাংলার প্রতিভাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া । লেখা পাঠানোর ঠিকানা :
mailbanglaexpress[at]gmail[dot]com
Whatsapp : 9733377444 )