বোর্ড মসনদে বসে বিশ্বনাথ দত্তকে ভুলে গেলেন সভাপতি ডালমিয়া


শুক্রবার,০৬/০৩/২০১৫
742

পূর্ণেন্দু চক্রবর্তীঃ কলকাতা ময়দানে দ্রোণাচায বিশ্বনাথ দত্তের হাত ধরেই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের একজন কর্মকর্তা হিসেবে আত্নপ্রকাশ ঘটেছিল জগমোহন ডালমিয়ার। সেদিন বিশ্বনাথ দত্ত তাঁর দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই তোলেনি। রাজস্থান ক্লাব থেকে সিএবিতে আসা এই প্রতিনিধি ডালমিয়ার বিচক্ষণ বুদ্ধিকে তারিফ করে কোষাধ্যক্ষের পদে মনোনীত করেছিলেন। সেদিনই ভেবেছিলেন আগামীদিনে শুধু সিএবির শীর্ষকর্তা হবেন না, সারা দুনিয়ার ক্রিকেট অঙ্গনকে মাতিয়ে রাখবেন। সে ভাবনা অমূলক ছিল না। আসলে ডালমিয়ার তাৎক্ষণিক বুদ্ধি আর প্রতিপক্ষের সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার কতে হবে তাতে ওস্তাদ ছিলেন। সেইরকম একজন বলা কওয়া কর্মকর্তাকে দীর্ঘদিন ধরে সন্ধানে রেখেছিলেন বিশ্বনাথ দত্ত। জহুরি যেমন যোগ্য ব্যক্তিকে খুঁজে আনেন, ঠিকভাবেই বিশ্বনাথ দত্তের চোখে পড়েছিল ডালমিয়াকে। বিশ্বনাথ দত্তের উত্তরসূরি হিসাবে সিএবিতে ডালমিয়াই একমাত্র প্রাথী হতে পারেন তা সেদিনই প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। বিশ্বনাথ দত্ত ছাড়া কোনভাবেই জগমোহন ডালমিয়ার উত্থান হওয়া সম্ভব ছিল না। ধীরে ধীরে ওই জগমোহন ডালমিয়া কখন যে বিশ্বনাথ দত্তকে টপকে গিয়েছিলেন তা জানা নেই। পরবর্তী ক্ষেত্রে যোগাযোগহীন হয়ে পড়েছিলেন ডালমিয়া। সেইভাবে বিশ্বনাথ দত্তের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করাটাও চোখে পড়ে নি। আবার কোনও সময়ে ডালমিয়া ভুলেই যেতেন দ্রোণাচায বিশ্বনাথ দত্তের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া। এমন কি ইডেনের একশো বছর পূর্তিতে যে তথ্যচিত্র তৈরী হয়েছে সেখানে ঘূনাক্ষরেও বিশ্বনাথ দত্তের কোনও ছবি বা কথা জায়গা পায়নি। তখন যেমন দুঃখ পেয়েছিলেন, তেমনই দশ বছর বাদে ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি হওয়ার পরে একবারের জন্যও বিশ্বনাথ দত্তকে ফোন করার প্রয়োজন মনে করেননি ডালমিয়া। এই আক্ষেপ বিশ্বনাথ দত্তকে ভারাক্রান্ত করলেও, কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি সোমবার। তবে তিনি ডালমিয়াকে সেই চোখেই দেখতে চান যেদিন প্রথম দেখেছিলেন সেই চোখেই। প্রায় ৭৬ বছর বয়সে নতুন করে ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতির চেয়ারে বসছেন জগমোহন ডালমিয়া। সিএবির কাছে অবশ্যই ভালো সংবাদ। তাই তো ধন্যবাদ জানিয়ে, বর্তমান যুগ্মসচিব সৌরভ গাঙ্গুলি এবং আই এফ এর সভাপতি সুব্রত দত্ত বার্তা পাঠিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায় দেখা দিচ্ছে। শারীরিক কারণে সেই ডালমিয়া আর নেই। হাঁটা-চলায় যেমন ধীর গতি দেখা গিয়েছে, কথা বলাতেও অসুবিধা হয় তাও স্পষ্ট। সেই দাপট বলতে যা বোঝায় তা হারিয়ে ফেলেছেন ডালমিয়া। চেয়ারে হয়তো বসলেন। কিন্তু বকলমে বিসিসিআইয়ের ছড়িটা হাতে থাকবে শ্রীনিবাসনের। পর্দার আড়ালে শ্রীনিই ক্ষমতায় রয়ে গেলেন তা বলাই বাহুল্য। রাজনৈতিক নেতারা যেমন নির্বাচনে আগে দল ভাঙানোর খেলায় মেতে ওঠেন, ঠিক সেইভাবেই বোর্ডের কর্মকর্তা দেখতে পাওয়া গেল। সভাপতি ডালমিয়া এবারে কি নতুন চাল খেলেন সেটা দেখবার বিষয়। সচিব পদে বিরোধি পক্ষের প্রাথী অনুরাগ ঠাকুর জিতে যাওয়াতে বিভিন্ন কাজে অসুবিধায় পড়তে হবে ডালমিয়াকে, সভাপতির  ক্ষমতা বেশি থাকলেও, সেখানে মুখর হতে পারেন সচিব অনুরাগ। তাই প্রতিটি পদক্ষেপ ছক কষে করতে হবে। কোনও রকম ভুল বার্তা পৌঁছে গেলে চাপে পড়বেন সভাপতি ডালমিয়াই। জগমোহন ডালমিয়ার যেমন প্রশংসার ছাড়পত্র রয়েছে আবার কাঁটারাও মুকুট  পরতে হয়েছে কোনও একটা সময়ে। তাতে ক্লিনচিট পেলেও মাঝেমধ্যেই মনকে কুড়ে কুড়ে খায়। তবুও বলতে দ্বিধা নেই বাংলার কোনও এক কর্মকর্তা ক্রিকেট বোর্ডের মসনদে বসলেন বসলেন তা নিয়ে গর্ব করা যেতেই পারে। সৌজন্যঃ দৈনিক স্টেটসম্যান

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট