মুর্শিদাবাদ, ১৫ এপ্রিল ২০২৫:
এক কাপড়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ভাত বসিয়েই কেউ দৌড়েছেন প্রাণ বাঁচাতে। রাতারাতি নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে পালাতে হয়েছে অসংখ্য পরিবারকে — এমনই ভয়াবহ চিত্র উঠে আসছে মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায়।
এক শরণার্থী শিবিরে থাকা মালতিদেবী (নাম পরিবর্তিত) কান্নাজড়িত গলায় বললেন, “ভাত বসিয়েছিলাম, হঠাৎ চারদিক থেকে চিৎকার। দেখি আগুন, মারধর— কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। ১৫ জনের পরিবার নিয়ে শুধু এক কাপড়েই ছুটে পালাতে হয়। এখন মালদার ক্যাম্পে কোনোভাবে বেঁচে আছি।”
অন্যদিকে, আরেক মহিলা বলেন, “মেয়ের বিয়ের জন্য তিল তিল করে দেড় লক্ষ টাকার গয়না আর সামগ্রী জমিয়েছিলাম। সব লুঠ হয়ে গেছে। ঘরে কিছুই নেই। স্বামী, সন্তান নিয়ে পালিয়ে এসেছি। জানি না কোথায় যাব।”
এই ঘটনার জেরে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। রাতারাতি গৃহহীন হয়ে পড়া পরিবারগুলির মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চয়তা ও ক্ষোভের ছবি ধরা পড়ছে।
বর্তমানে মালদা ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। যদিও ক্যাম্পে পর্যাপ্ত খাবার, ওষুধ, পোশাক বা চিকিৎসার অভাব নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন, “ঘরবাড়ি হারিয়ে, সব কিছু খুইয়ে সেই ক্ষতিপূরণে কি নতুন জীবন শুরু করা যায়?”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অস্থিরতা একদিকে যেমন মানবিক বিপর্যয়, তেমনি সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবিও। বিরোধীরা বলছে, “নিজের রাজ্যেই যদি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে যায়, তাহলে আর কোথায় যাবে?”