পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দিনে সংঘর্ষ, লুটপাট এবং প্রাণহানির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে অঞ্চলটি। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।
সহিংসতার বিস্তার ও প্রাণহানি
মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ান, নিমতিতা এবং জাফরাবাদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে শুক্রবার সুতির সাজুর মোড়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন ২১ বছরের ইজাজ আহমেদ, যিনি শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ধুলিয়ানে একটি বিড়ি কারখানার দুই শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, যাদের চিকিৎসা চলছেএছাড়া, পুলিশের ওপর হামলায় কমপক্ষে ১০ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন
হাইকোর্টের নির্দেশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট শনিবার ছুটির দিনেও বিশেষ শুনানি কর। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয। আদালতের মতে, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্রীয় বাহিনী শান্তি রক্ষায় কাজ করব।
এই নির্দেশের পর, মুর্শিদাবাদে আগে থেকেই থাকা ৩০০ বিএসএফ জওয়ান ছাড়াও আরও ৫ কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছ। মোট ১৬ কোম্পানি, অর্থাৎ ১৬০০ জন জওয়ান মোতায়েন হবে হিংসা-প্রভাবিত এলাকায।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ওয়াকফ আইন বাংলায় কার্যকর হবে ন।তিনি বলেন, “এই আইন কেন্দ্রের, আমাদের নয়। আমাদের সরকার এই আইনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখে ন। তিনি শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছন।
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বলেন, “মুর্শিদাবাদ সীমান্তবর্তী এলাকা। স্পর্শকাতর জায়গা। রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়লে, সাধারণ মানুষের সুরক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বিষয়টিকেও কেন্দ্রকে দেখতে হয।”
মুর্শিদাবাদের হিংসা-প্রভাবিত এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ১৪৪ ধারা জারি করা হয়ছ।পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে রুট মার্চ ও টহল চালাচছ।এখনও পর্যন্ত ১৫০-র বেশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ কছ। তবে, এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ কছে।