স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী


রবিবার,১২/০১/২০২৫
13

আজ, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, আমরা উদযাপন করছি স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনটি কেবল তাঁর জন্মতিথি নয়, বরং এটি একটি অনুপ্রেরণার দিন—যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় মানবতা, শিক্ষা ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান।

স্বামী বিবেকানন্দের জীবনপঞ্জি (সংক্ষিপ্ত)

১৮৬৩ সালের এই দিনেই কলকাতার শিমুলিয়া পল্লিতে নরেন্দ্রনাথ দত্ত, যিনি পরবর্তীতে স্বামী বিবেকানন্দ নামে খ্যাত হন, জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিশ্বনাথ দত্ত ছিলেন একজন প্রগতিশীল চিন্তক এবং বিশিষ্ট আইনজীবী। মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণা নারী, যাঁর আধ্যাত্মিকতা ও শিবের প্রতি অগাধ ভক্তি নরেন্দ্রনাথের মানসিক বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলে।

শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন যুক্তিবাদী এবং প্রমাণসিদ্ধ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহী। পাশ্চাত্য দর্শন, বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতি তাঁর আগ্রহ তাঁকে পরিণত করে এক মহান দার্শনিক ও সন্ন্যাসীতে।

শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আধ্যাত্মিক যাত্রা

১৮৮১ সালে অধ্যাপক হেস্টির মাধ্যমে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসের কথা প্রথম শোনেন এবং সেই বছরই দক্ষিনেশ্বরে তাঁর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাৎ তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শ্রীরামকৃষ্ণের নির্দেশে তিনি আত্মজিজ্ঞাসা ও আধ্যাত্মিক সাধনার পথে এগিয়ে যান।

১৮৯৩ সালে শিকাগোতে অনুষ্ঠিত ধর্ম মহাসভায় তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করে। “ভাই ও বোনেরা” এই হৃদয়গ্রাহী সম্বোধন দিয়ে তাঁর বক্তৃতা শুরু করা আজও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।

ভারত ও বিশ্বে প্রভাব

ভারতীয় সমাজের দারিদ্র, কুসংস্কার ও অশিক্ষা দূর করতে তিনি শিক্ষার প্রচার ও নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, “ধর্ম শুধু মন্দির, মসজিদ বা উপাসনালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানবসেবা ও কল্যাণে নিবেদিত হওয়া উচিত।”

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা এবং মানবসেবার বিভিন্ন কার্যক্রম তাঁর সমাজসেবামূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। ভারতীয় যুবসমাজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, মানবিকতা ও কর্মের প্রতি নিষ্ঠা সঞ্চার করতে তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন: “উঠো, জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।”

শেষ জীবন ও মহাসমাধি

১৯০২ সালের ৪ জুলাই, মাত্র ৩৯ বছর বয়সে তিনি মহাসমাধি লাভ করেন। তাঁর অমিত শক্তি, চিন্তাধারা ও কর্মমুখী দৃষ্টিভঙ্গি আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।

স্বামী বিবেকানন্দ শুধুমাত্র এক মহান সন্ন্যাসী নন, তিনি ছিলেন ভারতীয় নবজাগরণের মশালবাহী। তাঁর জীবন ও কর্ম মানবতার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার সাক্ষ্য বহন করে। ১৬৩তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করে আমরা অঙ্গীকার করি, তাঁর চিন্তা ও আদর্শকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণ করব।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট