মুভি রিভিউ: খাদ


শনিবার,৩০/১১/২০২৪
28

পরিচালনা: কৌশিক গাঙ্গুলি
মুক্তি: ২০১৪
অভিনয়ে:
লিলি চক্রবর্তী, কৌশিক গাঙ্গুলি, কৌশিক ব্যানার্জি, পল্লবী চ্যাটার্জি, মিমি চক্রবর্তী, সাহেব ভট্টাচার্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ, ত্রিধা চৌধুরী, গার্গী রায় চৌধুরী, ভরত কল এবং আরও অনেকে।

IMDb রেটিং: ৭.২


গল্পের সারসংক্ষেপ

খাদ একটি দলছুট, বিচিত্র মানুষদের গল্প, যাদের পথ এক সুতোয় বাঁধা হয়ে যায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে। পর্যটকদের এই দলটি—যাদের মধ্যে সদ্য বিবাহিত দম্পতি, এক ক্যান্সার আক্রান্ত মা, টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী, ধর্মযাজক, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, এবং আরও অনেক ভিন্নধর্মী মানুষ—অজান্তেই এক ভ্রমণযাত্রায় অংশ নেয়।

ধর্মঘটের কারণে তারা আটকা পড়ে জলপাইগুঁড়ির নির্জন নিউ মল জংশনে। এক খ্রিস্টান যাজকের সহায়তায় একটি মিনি বাস নিয়ে সবাই রওনা দেয় উত্তরের দিকে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মধ্যে দিয়ে যাত্রা করলেও ভাগ্য তাদের পক্ষে ছিল না। পাহাড়ি রাস্তায় বাসটি দুর্ঘটনায় খাদে পড়ে যায়, যেখানে তাদের শুধু প্রকৃতি আর রাতের অন্ধকার সঙ্গী।

খাদের মধ্যে জীবনের গল্প
এখানেই গল্পের আসল মোড়। তারা বুঝতে পারে রাত পার করে সকাল অবধি টিকে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আর এই সময়টুকুতে ধর্মযাজক প্রস্তাব দেন, প্রত্যেকেই যেন নিজেদের জীবনের অন্ধকারময় গোপন কথা, ভয়, বা লুকানো সত্য প্রকাশ করে। সেই কথাগুলো যেন খাদেই রেখে যায়, যাতে নতুন দিনের শুরুটা নতুন উদ্যমে করতে পারে।

এখান থেকেই একে একে বেরিয়ে আসে জীবনের গভীর বাস্তবতা, অপরাধবোধ, এবং লুকিয়ে থাকা যন্ত্রণা। প্রতিটি চরিত্রই যেন একেকটি জীবনের আয়না, যেখানে আমরা নিজেদের খুঁজে পাই।


অভিনয় ও চরিত্রায়ণ

প্রত্যেক অভিনেতা তাদের চরিত্রে অসাধারণ।

  • মিমি চক্রবর্তীর “রাগী মেয়ে” অবতার আর তার মুখের খিস্তি দর্শককে এক অন্যরকম কমিক রিলিফ দেয়।
  • রুদ্রনীল ঘোষের অভিনয়ে রয়েছে গভীরতা।
  • ধর্মযাজকের চরিত্রে কৌশিক গাঙ্গুলির আবেগপূর্ণ ভূমিকা গল্পের ভিত্তি তৈরি করে।
  • ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চরিত্রে গার্গী রায় চৌধুরী এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের ভূমিকায় ভরত কল হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

পরিচালনা ও গান

কৌশিক গাঙ্গুলি বরাবরের মতো গল্প বলার ভিন্ন ধারা উপস্থাপন করেছেন। খাদ যেন শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং জীবনের নানা টানাপোড়েনের প্রতীক।

অরিজিৎ সিংয়ের গাওয়া “দেখ আলোয় আলো আকাশ, দেখ আকাশ তারায় ভরা” গানটি এমন এক শূন্যতা তৈরি করে, যা দর্শকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।


শেষ কথা

মুভির শেষে যে স্তম্ভিত মোড় আসে, তা দর্শকদের মুগ্ধ করে। প্রকৃতির বিপদসীমায় আটকে পড়া মানুষগুলোর জীবনসংগ্রাম আর তাদের মনের গভীর সত্যের এই গল্প একদিকে যেমন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করায়, অন্যদিকে মানবিকতার গভীর শিক্ষা দেয়।

দেখা উচিত কেন?

  • ভিন্নধর্মী গল্প ও চরিত্রায়ণ।
  • প্রকৃতির সৌন্দর্যের অসাধারণ চিত্রায়ণ।
  • প্রতিটি চরিত্রের আলাদা গল্প ও মানবিক দিক।

অবসর সময়ে খাদ দেখে ফেলুন। এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা হবে নিশ্চিত।

রেটিং: ⭐⭐⭐/৫

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট