ঢাকার জীবনযাত্রার বিবর্তনকে কেন্দ্র করে একটি সামাজিক বিদ্রুপ ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কয়েক মাস আগেও “দাদা খেয়ে এসেছেন না খাবেন” বা “ইলিশ মাছ ১৬ পিস করে কাটুন দাদা” নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা চলত। অথচ এখন, ১৬০ টাকায় ১০ টুকরা মাংস বা ১০০ টাকায় মাছের মাথা আর লেজ কেনার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকাবাসীর দিন কাটছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এই যুগে ঢাকার জীবন যেন কেরানীর স্বপ্নভঙ্গের এক সাদৃশ্যমূলক প্রতিচ্ছবি।
আজকের ঢাকার অবস্থান যেন শতবর্ষের পুরনো কলকাতার মতোই; কালচার আছে, মানসিকতার চর্চা আছে, কিন্তু অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে যাপনের দৌড় ক্রমশ পেছাচ্ছে। ইনক্রিমেন্ট যেই দুই আনা, মুদ্রাস্ফীতি ষোল আনাই। তাই সাধারণ কেরানীরাও আজকাল চাকরি জীবনের ঘানি টেনে খুব সামান্যই উন্নতি করতে পারেন। দৈনন্দিন খরচের সামনে সামান্য আয়ের ওপর নির্ভর করে ঢাকাবাসীর জীবনযাত্রা যে কতটা সংকটপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা শহরের প্রতিটি কোণায় চোখে পড়ছে।
কয়েক দশক আগেও গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলো মেহমান এলে খোলা মনে আপ্যায়ন করত। অথচ শহুরে জীবনে সেই আতিথ্যবোধ এখন নিঃশেষ। আজকের দিনে শহরের কোন গেস্ট এলেও খাবার আয়োজন আনাতে হয় দোকান থেকে। ব্যস্ত জীবন, স্থান সংকুলান, আর দামের চাপে মেহমানদারির মতো মুল্যবোধের স্থান আর নেই।