সম্প্রতি ঢাকার মেট্রোরেলের নতুন স্মার্টকার্ড থেকে শহিদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, সংসদভবন এবং শাপলা প্রতীক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পুরনো স্মার্টকার্ডগুলিতে দেশের ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে এই প্রতীকগুলো ব্যবহার করা হতো, যা দেশের ঐতিহ্য এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে মানুষের মননে গভীরভাবে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে নতুন কার্ডে এই ঐতিহাসিক প্রতীকগুলোর পরিবর্তে জলপাই সবুজ রঙের একটি ডিজাইন যুক্ত করা হয়েছে, যা অনেকের মতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পতাকার রংয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
নতুন কার্ড ও পুরোনো সংকট
কয়েকদিন আগেই খবর প্রকাশিত হয় যে মেট্রোরেলের কয়েক হাজার কার্ড রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। এই খবরকে অনেকেই একটি পরিকল্পিত কৌশল হিসেবে দেখছেন, যার মাধ্যমে কার্ড সংকট সৃষ্টি করে নতুন ভেন্ডরের মাধ্যমে কার্ড পুনরায় ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে নতুন কার্ডের ডিজাইনে অনেকেই ত্রুটি দেখছেন এবং এতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
ঐতিহ্যের অবমাননা ও জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া
শহিদ মিনার ও স্মৃতিসৌধের মতো ঐতিহাসিক প্রতীকগুলো সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা জনগণের মাঝে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এগুলো জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক, যা বাংলাদেশি মানুষের মনে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। নতুন কার্ডে ঐতিহাসিক প্রতীকগুলোর পরিবর্তে এ ধরনের জলপাই সবুজ রং ব্যবহারকে অনেকেই দেশের ঐতিহ্য ও চেতনার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।
পরিস্কারতার অভাব ও প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত
জনসাধারণের অনেকেই মনে করছেন যে এই ঘটনা কার্ডের সংকটকে কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করার মাধ্যমে নতুনভাবে কার্ড প্রিন্টিং চুক্তি প্রদান ও আর্থিক সুবিধা অর্জনের জন্যই ঘটানো হয়েছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদান না করায় মানুষের মাঝে সন্দেহের মাত্রা বাড়ছে।
মেট্রোরেলের স্মার্টকার্ডের নতুন এই ডিজাইন ও প্রতীক অপসারণ নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা এখন দেখার বিষয়। তবে জনমনে এই ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে মেট্রো কর্তৃপক্ষের প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ন হতে পারে। জনগণের চাহিদা ও জাতীয় চেতনার সঙ্গে সংহতি রেখে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণই এই সংকট নিরসনের পথ খুলে দিতে পারে।