বিরোধী জোটের দ্বিতীয় ‘মহাবৈঠক’ আজ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বেঙ্গালুরুতে। বৈঠকে যোগ দিতে বিজেপি বিরোধী প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি শীর্ষ নেতারা পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে। সোমবার সোনিয়া গান্ধীর নৈশ ভোজ অনুষ্ঠানে যোগদান তারা। বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার বিষয় নিয়ে এক প্রস্থ আলোচনা হয়েছে বিরোধী নেতাদের মধ্যে। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্য নিয়ে বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথম বৈঠক বিহারের রাজধানী পাটনায় অনুষ্ঠিত হয়। নিতিশ কুমারের আমন্ত্রণে ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী সহ বিজেপি বিরোধী জোটের নেতারা। এবার দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আরও বড় আকারে। বৈঠকে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিজেপি বিরোধী প্রথম সারির নেতারা অংশ নিচ্ছেন। দেশের ২৬ টি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন। এই জোট বিজেপি বিরোধী আন্দোলন সংঘটিত করার লক্ষ্যে কোন পথে চলবে তার দিকনির্দেশ হতে চলেছে এদিনের বৈঠক থেকে। অভিন্ন ইসু গুলোকে সামনে রেখে গোটা দেশজুড়ে আন্দোলন সংগঠিত করতে চান সোনিয়া গান্ধী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এই আন্দোলন কোন ইস্যুগুলিতে হবে তা ঠিক হতে চলেছে এদিন। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির মধ্যে সমঝোতা সূত্র বের হয়েছে। দিল্লির উপর কেন্দ্রীয় সরকারের অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের পর আম আদমি পার্টি জানিয়ে দিয়েছে, তারাও বৈঠকে যোগ দেবে। প্রথম বৈঠকের শেষে বিরোধী নেতাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ জানিয়ে দিয়েছিল একটা ঐক্যবদ্ধ জোট গড়ে উঠছে। দ্বিতীয় বৈঠক থেকে আরো শক্তিশালী জোটের ইঙ্গিত মিলতে চলেছে।
বিজেপি বিরোধী জোট যত ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে ততই চিন্তা বাড়ছে বিজেপির। সূত্রের খবর, বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে চব্বিশে লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। আর তার উপর বিরোধী ঐক্য ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করতে জরুরি ভিত্তিতে এনডিএ বৈঠক ডেকেছে। আজ দিল্লিতে এনডিএর বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সূত্রের খবর এই বৈঠকে অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা নেতৃত্ব দেবেন। বৈঠকে ডাকা হয়েছে সমস্ত শরিক দলগুলিকে। এমন অনেক ছোট ছোট শরীর কাছে যাদের সাংসদ বা বিধায়ক একজনও নেই তারাও ডাক পেয়েছেন বৈঠকে। গত সাড়ে চার বছরে নজরে পড়েনি ইন্ডিয়ের শরিক দলগুলোকে নিয়ে কোন বৈঠক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এবার শরিকদল গুলোকে আরো কাছে আনার চেষ্টা করছে বিজেপি। আগেই ইন্ডিয়া ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড। শিবসেনার উদ্ভব ঠাকরে শিবির ও এখন আর এনডিএ তে নেই। দেশের বড় কোন রাজনৈতিক দল এই মুহূর্তে বিজেপির সঙ্গে নেই। ২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে ছোট ছোট শরিক দল গুলো কে আঁকড়ে ধরেই নির্বাচনের লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে বিজেপিকে। একদিকে বিরোধী জোট যত ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে ততই যেন বিজেপির চিন্তার ভাজ কপালে পড়ছে। কিভাবে বিরোধী জোটের এই ঐক্যের মোকাবিলা করে বিজেপি সেটা এখন দেখার।