বিজেপির নাম বদলের রাজনীতির ছোঁয়া এবার রেল শহরে। বর্ধমান পশ্চিমের চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ এর নাম বদলের প্রস্তাব দিচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এই ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দিল্লি নেতৃত্বকে খুশি করতেই অগ্নিমিত্রা পালের এই প্রস্তাব বলে মনে করছে তৃণমূল। বাংলায় গেরুয়াকরণের রাজনীতি? চিত্তরঞ্জনের নাম বদলে শ্যামাপ্রসাদ?
রেল শহর চিত্তরঞ্জন। এই শহরেই অবস্থিত স্বাধীনতা সংগ্রামী চিত্তরঞ্জন দাসের নামাঙ্কিত চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কস। ১৯৫০ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের হাত দিয়ে প্রথম বাষ্প চালিত ইঞ্জিনের উৎপাদন শুরু হয়। ভারতের ঐতিহ্যবাহী রেল কারখানাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই চিত্তরঞ্জন লোকোমেটিভ ওয়ার্কস। ১৯৫০ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কারখানার যাত্রা শুরু হয়। প্রথম বাষ্পীয় ইঞ্জিন উৎপাদন শুরু হয় নভেম্বরে। প্রথম রেল ইঞ্জিনটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ। কারখানার নামকরণ করেন স্বাধীনতা সংগ্রামী চিত্তরঞ্জন দাশের নামে। ধীরে ধীরে রেল শহরও চিত্তরঞ্জন নামে পরিচিতি পায় ।
স্বাধীনোত্তর ভারতের কর্মসংস্থানের দিশা দেখানো সেই চিত্তরঞ্জনের ইতিহাসটাই এবার বদলে দিতে চাইছে বিজেপি। বিজেপি নেত্রী তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল চান চিত্তরঞ্জনের নাম বদলাতে। নতুন নামকরণ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করতে চান।
কিসের প্রয়োজনে স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম বদলাতে চাইছে বিজেপি? উঠছে প্রশ্ন। তৃণমূল কংগ্রেসের কটাক্ষ, দিল্লির নেতাদের খুশি করতেই এ ধরনের আজগুবি ভাবনা। সবার প্রথমে অগ্নিমিত্রার ইতিহাসটা জানা উচিত, কটাক্ষ তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের।
দেশের একাধিক শহর ও রেল স্টেশনের নাম পাল্টেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। ক্রমশ গেরুয়াকরণের পথে হেটেছে তারা। মুঘলসরাইয়ের নাম হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়। কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করা হয়েছে। এই বন্দরটির মধ্যেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে একটি ডক আছে। বিজেপির নাম রাজনীতির সৌজন্যে করে দেখানো হচ্ছে সুভাষের চেয়েও বড় করে দেখানো হচ্ছে শ্যামাপ্রসাদকে। তবে কি গেরুয়া রাজনীতির চক্করে স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়েও ছেলেখেলা চলবে?