শুভ্র সেনগুপ্ত: কারোর ভাই তো কারোর যান আর অপরদিকে চেঙ্গিস খান, এই দুই মহারথীর মাঝে কোথাও না কোথাও পদপিষ্ট হতে বসেছিল এক মা যে তার সন্তানদের আমৃত্যু ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি নিয়েছিল। অবাক হয়েছিলাম আগের সপ্তাহে দেখে যে কোনো বড় প্রেক্ষাগৃহে ঠিক উপযুক্ত সময়ে এই সিনেমাটা দেখানো হচ্ছেনা। যে সময়ে দেখানো হচ্ছে তখন গিয়ে দেখা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। কিছুটা হতাশ হয়েই যখন এই সপ্তাহ শুরু করলাম দেখলাম আমার নিকটবর্তী সিনেমা হলেই এসে গেছে বেশ ভালো একটি সময়ে। ব্যাস। ছুটে চলে গেলাম মৃতের হাতছানিতে সারা দিতে।
Los Angeles এর এক ভগ্নপ্রায় বহুতলে তার তিন সন্তানের সাথে থাকে Ellie। হঠাৎই একদিন এক ভয়ানক ভূমিকম্প কাপিয়ে দেয় গোটা শহরকে। Beth সন্তান সম্ভবা, তাই দিদির থেকে এই কঠিন পরিস্থিতির বিষয়ে উপদেশ নিতে সে উপস্থিত হয় Ellie এর বাড়িতে। ইতিমধ্যে Danny আবিষ্কার করে একটি বই, যে বই দেখলেই শিউরে উঠতে হয়। সে বই বহু বিচিত্র ও ভয়ঙ্কর ছবিতে ভরপুর। তার সাথে আছে দুটি পুরনো রেকর্ড। সেই রেকর্ড দুটি শোনার সাথে সাথে শুরু হয় একের পর এক বিভীষিকাময় ঘটনা। চোখের সামনে Ellie এর তিন সন্তান তাদের মা এর ভয়াবহ পরিবর্তন দেখতে পায়। এই শয়তানের প্রকোপ থেকে কে বাঁচাবে তাদের? নাকি মা নিজেই হয়ে দাঁড়াবে তার সন্তানের ভখ্যক।
প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে এই সিনেমা সকলের জন্য নয়। যাদের অত্যধিক রক্তক্ষয় বা নির্মম নৃশংসতা সিনেমার পর্দায় দেখতে সমস্যা হয় তাদের শারীরিক বা মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে এই সিনেমা হিতকারক নয়। কিন্তু যারা Evil Dead সিনেমাগুলো আগে দেখেছেন বা ভালোবেসেছেন এই দেখে যে এক ব্যক্তি হাতে chainsaw নিয়ে কি ভাবে মৃতের দমনে নিজেকে উৎসর্গ করেছে, এই সিনেমা ঠিক তাদেরই জন্য। ভয়ে যে একবারে আত্মারাম খাচাছাড়া হয়ে যাবে তা বলবো না, আবার এটাও বলবো না যে ভয় লাগবে না। এই সিনেমাটার সাথে এর আগের সিনেমাগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণ একটা আলাদা গল্প। এক বলতে শুধু সেই অভিশপ্ত বইটা – Necromonicon, যা মৃতদের জীবিত করে দেয় এক অলৌকিক মন্ত্রবলে। আমার বেশ রোমাঞ্চকর লেগেছে দেখতে। যা আশা করে গিয়েছিলাম তা পুরোমাত্রায় পেয়েছি ও উপভোগ করেছি। চাইলে একবার ঝুঁকি নিতেই পারেন দেখার।