রোদের তেজ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ‘লু’ বইবার সতর্কতা জারি


বৃহস্পতিবার,১৩/০৪/২০২৩
823

গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা গোটা বাংলার। রোদের তেজ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ‘লু’ বইবার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে গরম আর বাড়বে বলে আশঙ্কা। আগামী চারদিন প্রায় সব জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে। স্বাভাবিকের থেকে চার-পাঁচ ডিগ্রি বেশি থাকবে। একই পরিস্থিতি থাকবে উত্তরের কয়েকটি জেলাতে। তাপপ্রবাহ চলতে পারে দুই ২৪ পরগনায় । হুগলি, পূর্ব বর্ধমানেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি

তাপপ্রবাহের সতর্কতা হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরেও। তাপপ্রবাহ চলবে দুই দিনাজপুর ও মালদায়। স্বস্তি নেই উত্তরবঙ্গে, সেখানেও তাপমাত্রা বাড়বে। জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। গরম থেকে বাঁচতে সতর্ক হতে বলছেন চিকিৎসকরা। বেশি বেশি জলপানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শ। শিশুদের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। স্কুলের ছুটির দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। গরম থেকে বাঁচতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা নবান্নের। রোদ বাড়ার আগেই কাজ শেষ করার পরামর্শ। দুপুরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। চাতক পাখির মতো সবার প্রত্যাশা একটু বৃষ্টি। অঝোর ধারাপাত পারে ধরাতলকে ঠান্ডা করতে। গোটা রাজ্যে সেই প্রার্থনাই করছে মানুষ।

চৈত্র শেষে সর্বনাশ বোধহয় একেই বলে। চিড়বিড়ে গরমে নাজেহাল বাংলা। গরমের প্রকৃতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। বাংলা জুড়ে বইছে শুষ্ক গনগনে হাওয়া। পারদ স্তম্ভ খাটো হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। আকাশে নেই ছিটেফোঁটা মেঘ। বাতাসে জলীয়বাষ্প না থাকায়, শরীরে ঘাম হচ্ছে না। দুপুরে তীব্র রোদে পুড়ে যাওয়ার জোগাড়। আবহবিদরা বলছেন, বাংলার গ্রীষ্মে এই রদবদল বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং এলনিনোর ফলাফল। উত্তর-পশ্চিম থেকে উষ্ণ বাতাস ঢুকে বাংলার স্বাভাবিক গ্রীষ্মকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র ঝড়বৃষ্টি। কিন্তু তেমন কোনও সম্ভাবনার কথা শোনাচ্ছে না আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। উল্টে হাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে কলকাতা সহ বেশ কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহের সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ১৬ই এপ্রিল পর্যন্ত বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। দুপুরের দিকে বইতে পারে লু। উত্তরবঙ্গেও দার্জিলিং ছাড়া বাকি জেলাগুলিতে গরম অব্যাহত থাকবে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়াতে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে জেলাগুলিকে। উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদাতেও লু বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। এই জেলাগুলির অনেক জায়গাতেই তাপমাত্রা এরই মধ্যে ৪০ ডিগ্রির উপর উঠে গিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষিজীবী মানুষ। এক টুকরো মেঘের প্রত্যাশায় আকাশের দিকে তাকিয়ে তাঁরা।

ভয়ংকর দাবদাহ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন দুপুরের রোদ এড়িয়ে চলার। বিশেষত বয়স্ক ও শিশুদের মধ্যদিবসের গনগনে উত্তাপ থেকে দূরে রেখে বিশেষ যত্ন নেওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। এই গরমে হিট স্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মরশুমি রসালো ফল খাওয়ার পরামর্শ তাঁদের। দিনের বেলা বাইরে বেরোলে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে ছাতা। শিল্পাঞ্চলগুলি পুড়ছে ঝাঁঝাঁ রোদে। সেক্ষেত্রে মুখমণ্ডল কাপড়ে ঢেকে বাইরে বেরোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ব্যবহার করা যেতে পারে নন-কেমিক্যাল সানস্ক্রিন। দিনে অন্তত দু-তিনবার স্নান করার কথা বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ক-দিন বাদেই বৈশাখের সূচনা। চৈত্রের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে, আরো কঠোর গ্রীষ্মের মুখোমুখি হতে চলেছি আমরা। বর্ষাকালীন চাষে এই মুহূর্তে আশঙ্কা সর্বাধিক। ঠিক সময়ে বৃষ্টি না হলে, ঘনিয়ে উঠতে পারে চরম বিপদ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট