হাওড়ার অশান্তি, প্রকাশ্যে এল বন্দুকবাজের ছবি, দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করবে প্রশাসন: অভিষেক


শুক্রবার,৩১/০৩/২০২৩
477

হাওড়ার শিবপুরে রামনবমীর নামে বন্দুক নিয়ে দাপাদাপির ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশের অনুমতি না নিয়েই মিছিল সংগঠিত করে দুটি সংগঠন। সেই মিছিল থেকে চলে তান্ডব। প্রকাশ্যে এসেছে বেশ কয়েকটি ভিডিও। যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বন্দুক নিয়ে রনহুঙ্কর দিতে। এক যুবক পিস্তল হাতে নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অন্য এক ভিডিওতেও দেখা গেছে পিস্তল নিয়ে নাচানাচি করতে। অস্ত্র হাতে একাধিক ব্যক্তির এই লম্ফঝম্ফ ঘিরে মিছিলের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রামনবমীর মিছিল হবে ধর্মীয় ভাবাবেগ নিয়ে। রামনবমীর মিছিলে হাতে থাকবে রামের ছবি। সেখানে কেন অস্ত্র-সস্ত্র? প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। অসৎ উদ্দেশ্য ছিল বলেই অস্ত্রের রনহুঙ্কার ওই মিছিল থেকে দেখা গিয়েছে, মনে করছি তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। শান্ত বাংলা অশান্ত করার চেষ্টা চালাতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়। এই ঘটনার পিছনে ইন্ধন ছিল, প্ররোচনা ছিল। মনে করছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন বেআইনিভাবে ওই মিছিল সংগঠিত করা হয়।

পুলিশের কোন অনুমতি ছিল না ওই মিছিলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ মেনে রামনবমীর মিছিল হয়নি। শুক্রবার পুলিশ-প্রশাসনের তরফে যে চিঠি মিছিলকারীদের সংগঠনকে দেওয়া হয়েছিল, তা জনসমক্ষে আনেন অভিষেক। অভিষেক বলেন, ওই গাইডলাইন সংবলিত চিঠির কোন জবাব দেয়নি দু’টি হিন্দু সংগঠন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, ‘‘প্রশাসনের অনুমতি, আদালতের নির্দেশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের বিধি ছাড়া প্রত্যেক জায়গায় মিছিল করেছে এরা। এবং প্রত্যেকটাই বেআইনি।’’ বেআইনি মিছিল করলেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি কেন? জবাব তৃণমূলের এই নেতা বলেন, সময় মত কঠোর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন। অভিষেকের হুঁশিয়ারি, ‘‘নিশ্চিন্তে থাকুন, পদক্ষেপ হবে। এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করা হবে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ ঠিক অপরাধীদের ধরবে। কোথায় পালাবে? সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীর থেকে তুলে এনেছিল। জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নয়ডা থেকে তুলে এনেছে।’’ এই ঘটনায় জড়িতদের কেউ ছাড় পাবে না। অভিযুক্তরা যেখানেই পালাক বাংলার পুলিশ তাদের ধরে আনবে। এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে যা কোনদিন আর নতুন করে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস পাবে না।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই রামনবমীর অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে পালন করার আবেদন রেখেছিলেন। বাংলা ঐতিহ্যের রাজ্য। সম্প্রীতির রাজ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ধর্মের মানুষের কাছে সব সময় আবেদন রাখেন শান্তি বজায় রাখার। সকল ধর্মের ধর্মীয় উৎসব বাংলায় শান্তিতে উদযাপিত হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের পরেও কিছু বিশৃঙ্খল সংগঠন রামনবমীর নামে রাজ্যে অরাজকতা তৈরীর চেষ্টা চালিয়েছে বলে মনে করছে প্রশাসনের অনেকেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন একটি সংবাদ মাধ্যমে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হাওড়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউ ছাড় পাবে না। ধরা হবে নাটের গুরুদের। কাউকে রেয়াত করা হবে না।

হাওড়ার অশান্তির ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য এ ধরনের ঘটনায় প্ররোচনা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তার। বিজেপি আসছেতো সমাজবিরোধীরা এ ধরনের ঘটনায় জড়িত। কেন বিজেপির তরফ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার কথা বলা হচ্ছে না, প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। কেন নিন্দা জানানো হচ্ছে না এ ধরনের ঘটনার। উল্টে বিজেপি নেতারা পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ।

তৃণমূলের আনা ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই সাধারণ মানুষের মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। রামনবমীর নামে যেভাবে অস্ত্র হাতে রনহুংকার দিতে দেখা যায় সেই ঘটনায় আশঙ্কিত সাধারণ মানুষ। বাংলায় এমন ঐতিহ্য নেই বলে মনে করছে রাজ্যের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট