একদিকে ডঃ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা। অন্য দিকে অল্প দূরত্বের মধ্যেই শহিদ মিনার ময়দানে তৃণমূল ছাত্র যুবদের জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মহানগর সাক্ষী রইল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিক মঞ্চ থেকে তৃণমূলের গর্জে ওঠার। তৃণমূল সুপ্রিমোর সুর অনুসরণ করেই, জনসভার মঞ্চ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তুলোধোনা করলেন বিজেপিকে। একের পর এক প্রকল্পে টাকা আটকে রেখে, বাংলার সঙ্গে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, তা চাঁছাছোলা ভাষায় পরিষ্কার করে দিলেন অভিষেক। বকেয়া না মেটালে দিল্লি অচল করে দেওয়ার ডাকও দিলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলিকে ইচ্ছেমতো বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর অভিযোগ বহুকালের। অভিযোগ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। তাতে যে সংসদীয় গণতন্ত্রের হাল ক্রমশ খারাপ হচ্ছে, তা আগেও বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সেই ইস্যুতেও সরব হন। তৃণমূল ছাত্র যুবদের জনসভাকে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের ট্রেলর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জনসভায় বক্তব্য পেশের পর শহিদ মিনার ময়দান থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা পৌঁছে যান ডঃ বি আর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে, মমতার ধরনা মঞ্চে। সেখানেও তিনি বক্তব্য পেশ করেন একই সুরে। সোচ্চার হন ইডি, সিবিআইয়ের অপপ্রয়োগ নিয়ে।
মমতা, অভিষেকের জোড়া আক্রমণ সামলাতে এদিন মহানগরের মাঠে নামে রাজ্যের বিরোধীদলগুলি। শ্যামবাজারে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। সেখান থেকে সমানে চলে বিষোদ্গার। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে রামলীলা ময়দান থেকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের আহবানে শুরু হয় মিছিল। মিছিল শেষ হয় পার্ক সার্কাসে। সেই মিছিলে যোগ দেয় কংগ্রেসও। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রর সঙ্গে পা মেলান হাত চিহ্নের নেতাকর্মীরা। মনে রাখা দরকার, এই পদযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে আহ্বান করেছিলেন। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে যে মিছিল, তার সঙ্গে তৃণমূল বিরোধিতার কী যোগ, তা অবশ্য বহু মাথা খাটিয়েও বুঝতে পারেননি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মমতার ধরনা এবং তৃণমূল ছাত্র যুবর জনসভা থেকে নজর ঘোরানোই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে তো কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদ নেহাত একটা জিগির হয়ে ওঠে। কিন্তু নজর ঘোরানো অত সহজ নয়। জাতীয় রাজনীতির ফোকাস দিনের শেষে মমতার ধরনা মঞ্চই।