স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য শহরের বাসিন্দারা টাটকা সবজির জন্য মূলত বাজারের উপর নির্ভরশীল। প্রায়ই খবর পাওয়া যায় বাজারের শাকসবজিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের। যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই টাটকা শাক-সবজি পেতে বাজারের ওপর নির্ভর না করে বেচে নিতে পারেন বাড়ির ছাদ বা বারান্দা। চলুন জেনে নিই ছাদে পাতা জাতীয় সবজির চাষের প্রক্রিয়াটি।
টবে আবাদ যোগ্য পাতা জাতীয় সবজি পুইশাক, পালংশাক, লাল শাক, ডাটাশাক, কুমড়াশাক, লাউশাক, কলমি শাক, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, থানকুনিপাতা, লেটুসপাতা, এসব টবে ফলানো যেতে পারে।
টবের বীজ তলার মাটি শাক-সবজির বীজতলার জন্য মাটি হতে হবে ঝরঝরে, হালকা ও পানি ধরে রাখার মত। মাটি চালুনি দিয়ে চেলে জীবাণুমুক্ত করে নেয়া উত্তম। এক ভাগ দোআঁশ মাটির সঙ্গে এক ভাগ জৈব সার (পচা গোবর, পাতা পচা, কম্পোষ্ট) আর এক ভাগ কোকোপিট মিশিয়ে নিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করে নিন। মাটি যদি এটেল হয় তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগমের সুবিধার জন্য একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে।
সাধারণত এক লিটার ফরমালডিহাইড ৪০ লিটার পানিতে গুলে এই দ্রবণের ২৫ লিটার প্রতি ঘন মিটার মাটিতে কয়েক কিস্তিতে ভিজিয়ে দিতে হয়। এর পর প্রায় দু’দিন চটের কাপড় দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে পরে চট উঠিয়ে দিলে মাটি জীবাণুমুক্ত হয়।
বীজ বপন ও পানি সেচ পূর্বের নিয়মে মাটি হালকা ঝরঝরে করে টবের উপরিভাগ সমতল করে রাখতে হবে। খুব হালকাভাবে বীজ ছড়িয়ে দিতে হয়। এর পর মিহি করে চারা, পাতা পচা সার দিয়ে বীজ গুলোকে ঢেকে দিতে হয়। পানি দিতে হবে খুব ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত ঝাজরি দিয়ে। লক্ষ্য রাখতে হবে, পানির ঝাপটায় যাতে বীজের উপর পাতাসারের আবরণ সরে না যায়। বীজ আকারে ছোট হলে সেই ক্ষেত্রে উপর দিয়ে পানি দিলে বীজ গুলো পানির ধাক্বায় অঙ্কুরোদগমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই সব টবের উপর দিয়ে পানি না দিয়ে তলা দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করা উচিত।
অনেক শাক-সবজির চারা বিভিন্ন প্রকার পাখি, পিঁপড়া, মাকড়শা, নষ্ট করে দেয়। হেপ্টাক্লোর ৪০ পরিমাণ মত দিয়ে যাবতীয় পিঁপড়া ও মাকড়শা নিবারণ করা যায়। টবের ওপরে তারের বা নাইলনের জাল দিয়ে চারাগুলো পাখির উপদ্রব থেকে রক্ষা করা যাবে। অনেক সময় দেখা যায় টবের মাটি বীজ বপনের পর বিভিন্ন প্রকার আগাছা গজিয়ে থাকে যেগুলো সঙ্গে সঙ্গে নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলতে হবে এবং গাছের গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে তা খেয়াল রাখতে হবে। শাক-সবজির টবগুলো অবশ্যই যথেষ্ট আলো-বাতাসপূর্ণ স্থানে রাখা প্রয়োজন।