সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসীর উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি


বৃহস্পতিবার,২৬/০১/২০২৩
1205

সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে দেশের জন্য যেকোনো আত্মত্যাগে প্রস্তুত, সীমান্তে প্রহরারত জওয়ানদের রাষ্ট্রপতি বিশেষ সাধুবাদ দেন। কুর্নিশ জানান, সশস্ত্র বাহিনী, আধাসামরিকবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর সমস্ত কর্মীদের। সাধারণতন্ত্র হিসেবে ভারতের উন্নয়ন গাথায় কৃষক, শ্রমিক, বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান জয় অনুসন্ধানের মন্ত্রকে সাকার করে তুলতে দেশকে সাহায্য করছে এদের সম্মিলিত শক্তি। ২১শতকের চ্যালেঞ্জের জন্য ছাত্র ছাত্রীদের প্রস্তুত করতে জাতীয় শিক্ষানীতি সহায়ক হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। গ্রাম- শহর বিভেদ ঘোচাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে অন্তরভূক্তিমূলক করে তোলার জন্য ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন সচেষ্ট। দূর -দুরান্তের বহু মানুষ ইন্টারনেটের সুবিধা পাচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, গান্ধীজির সর্বোদয় আদর্শের বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে অগ্রগতি হয়েছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। গতবছরই ভারত, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাপী প্রবল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই যে এই সাফল্য এসেছে, তা মনে রাখা প্রয়োজন। কোভিড ১৯ ভারতের অর্থনীতিকেও যথেষ্ট আঘাত করেছে, কিন্তু দক্ষ নেতৃত্ব এবং ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতার জোরে ভারত দ্রুত বৃদ্ধির পথে ফিরতে পেরেছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা ভারতকে গণতন্ত্রের ধাতৃভূমি বলা হয়। স্বাধীনতার পর অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত যে সফল হতে পেরেছে তার কারণ বহু ভাষা, জাতি, ধর্ম আমাদের বিভাজিত নয়, ঐক্যবদ্ধ করেছে, এটাই ভারতের মূল সত্ত্বা । যার কেন্দ্রে রয়েছে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সংবিধান। সমগ্র জাতি বাবাসাহেব ড বি. আর. আম্বেদকরের প্রতি এজন্য চির কৃতজ্ঞ থাকবে। জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর একটি হল খাদ্যাভ্যাস। রাষ্ট্রসংঘ ২০২৩কে আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করার ভারতের প্রস্তাব মেনে নেওয়ায় তিনি খুশি।

বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে রাষ্ট্রপতি সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, আরও বেশি মানুষকে দারিদ্র থেকে বের করে আনতে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি প্রয়োজন। কিন্তু সেই বৃদ্ধি আবার আসে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে।এ এক উভয় সংকট।বিকল্প জ্বালানির উৎসের উন্নয়ন এবং তাকে জনপ্রিয় করে তোলা এর একটি সমাধান হতে পারে। ভারত এই লক্ষ্যে সৌরশক্তি ও বৈদ্যুতিক যানের ওপর জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রয়োজন,উন্নত দেশগুলির কাছ থেকে প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা। উন্নয়ন ও পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রাচীন পরম্পরার দিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকাতে হবে। এই প্রসঙ্গে শ্রীমতি মুর্মু মহাত্মা গান্ধীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আধুনিককালের একজন প্রকৃত ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হিসেবে তিনি নির্বিচার শিল্পায়নের শোচনীয় ফলাফল সম্পর্কে বিশ্বকে আগাম সতর্ক করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন,এবছর G-20 গোষ্ঠীর সভাপতি হয়েছে ভারত। সারা বিশ্বের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন -GDP-র প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং মোট জনসংখ্যার দুই -তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে G-20। তাই বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা এবং তার সমাধান খুঁজে বের করার আদর্শ মঞ্চ হল G-20।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেছেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে রূপান্তর ঘটানোর সাম্প্রতিক নানা উদ্যোগ জনসাধারণের মধ্যে সৃজনশীল উদ্দীপনার আগল খুলে দিয়েছে।গোটা বিশ্ব ভারতকে দেখছে সম্ভ্রমের এক নতুন দৃষ্টি নিয়ে।৭৪ তম সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে শ্রীমতি মুর্মু বলেন, আন্তর্জাতিক নানা মঞ্চে ভারতের হস্তক্ষেপ, ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। বিশ্ব মঞ্চে অর্জিত এই মর্যাদা ভারতের সামনে যেমন নতুন নতুন সুযোগের সৃষ্টি করেছে, তেমনই বেড়েছে দায়িত্বও।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট