দার্জিলিং এ বড়দিন উপলক্ষে ৪টি বিদেশী ভাষায় গান গেয়ে প্রশংসিত বাংলাদেশের অভ্র

প্রায় দু’হাজার বছর আগে ‘ঈসা মাসীহ্’ তথা যীশু খ্রিষ্টের জন্ম হলেও ক্রিসমাস বা বড়দিন পালন শুরু হয় তারও অনেক পরে। এমনকি যীশুর শিষ্যরাও কখনো তাঁর জন্মোৎসব পালন করেননি। শুরুর দিকে খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসবের অন্তর্ভুক্তও ছিল না বড়দিন। দ্বিতীয় শতাব্দীর দুজন খ্রিষ্টধর্মগুরু ও ইতিহাসবিদ ইরেনাউস ও তার্তুলিয়ান বড়দিনকে খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসবের তালিকায় যুক্ত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ২৫ ডিসেম্বর বড়িদন উপলক্ষে গতকাল দার্জিলিং-এর স্বনামধন্য স্কুল এফএলএস এ অনুষ্ঠিত হলো বড়দিনের উৎসব। এবারই প্রথমবার ভারতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অভ্র বড়ুয়া ৫ টি বিদেশী ভাষায় অশ্রুত সংগীত নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হয়। ৪০ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী এই পরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন। সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নরত্তোম সাইকিয়া।

অভ্র জানান,এই পরিবেশনাটা আমার কাছে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মতো ছিল। বৈরি আবহাওয়ায়,৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ গান পরিবেশন করেছে সকলে। বড়দিন এর উৎসব পরিকল্পনার আগে হঠাং একদিন আমার ইংরেজি বিভাগের প্রধান শিক্ষক নরত্তোম সাইকিয়া মহোদয় আমাকে প্রস্তাব দেন ৫টি ভিন্ন ভাষায় বিদেশি সংগীত পরিবেশনার ৪০ জনের দল নিয়ে,আমি ভীষণ ইতস্তত বোধ করি,পরবর্তীতে স্যারের প্রস্তাব, নির্দেশ হিসেবে গ্রহণ করি কারণ তা অমান্য করার দু:সাহস আমার নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করি,মাত্র ৩ সপ্তাহে আমরা অনুশীলন করে মঞ্চে ভিন্ন ভাষার গান উপস্থাপন করেছি।অনেকেই প্রথমবারের মতো গান করেছেন।তবে একজন বাংলাদেশী হিসেবে এই সংগীত পরিবেশনার মূখ্য ভূমিকায় উপস্থিত হতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ।প্রযোজনাটি খুব একটা সহজ ছিল না। ১০ মিনিটের এক অনুষ্ঠানের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ২ সপ্তাহ সকলের অক্লান্ত পরিশ্রমের গল্প। সকলের একান্ত সহযোগিতা না থাকলে কিছুই করা সম্ভব হতো না। পরিশেষে অশেষ কৃতজ্ঞতা শ্রদ্ধেয় নরত্তোম সাইকিয়া মহোদয়কে।

অভ্র ও তাঁর দল জার্মান,ফরাসী,রাশিয়ান,স্পেনিশসহ বিভিন্ন ভাষায় গান পরিবেশন করেন। সকলের নজড় কাড়ে আসরের অন্যতম পরিবেশনা বড়দিনের গান “স্টিলে নাখ্ট” গানটি। “স্টিল নাখ্ট” বা “নীরব রাত” দীর্ঘকাল ধরে খ্রীস্টান সংস্কৃতির একটি লালিত অংশ। ২০১১ সালে এটি ইউনেস্কো কর্তৃক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে মর্যাদা অর্জন করেছে। কিন্তু, ১৯১৪ সালের বড়দিনের প্রাক্কালে, যুদ্ধে লড়াই করার সময় বড়দিনের ক্যারলের শক্তি এতটাও স্পষ্ট ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে সৈনিকদের কণ্ঠে এই ইতিহাস সৃষ্টি হয়। একজন জার্মান অফিসার, যিনি যুদ্ধের আগে বার্লিন অপেরার সদস্য ছিলেন, ক্রিসমাসের প্রাক্কালে রাতে জার্মান যুদ্ধ ঘাটিতে এই গানটি গাইতে শুরু করেছিলেন৷ যুদ্ধ বিরতির পর নীরবতায় ব্রিটিশরা গানটি গেয়েছিল৷ ধীরে ধীরে, সৈন্যরা আবার তাদের যুদ্ধের অবস্থানে ফিরে যায়।
সকল দর্শকদের নজড় কাড়ে এমন ব্যাতিক্রমধর্মী প্রযোজনা

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বিতরণের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের ট্যাব বিতরণের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বহু ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা…

15 hours ago

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল, বিজেপির বিক্ষোভে ধস্তাধস্তি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক আজ উত্তাল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ডাকে…

15 hours ago

বিহারের জামুইতে ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জনজাতীয় গৌরব দিবসে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের জামুই জেলায় জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে…

15 hours ago

২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আগামী ২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে। ঐ একই দিনে নান্দেথ…

2 days ago

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তা

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তায় ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন করবেন ।আগামীকাল তিনি যাবেন…

2 days ago

কলকাতায় এসআইপি অ্যাবাকাস ইন্টারন্যাশনাল প্রডিজি ২০২৪: বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগীদের গাণিতিক দক্ষতার অসাধারণ প্রদর্শন

কলকাতা, ১০ নভেম্বর ২০২৪: অ্যাবাকাস প্রশিক্ষণের অন্যতম শীর্ষ সংস্থা, এসআইপি অ্যাকাডেমি, কলকাতার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে…

3 days ago