‘পাওয়ার ওফ এনার্জী’ চিত্র শিল্পে ইতালিতে পুরষ্কৃত কলকাতার স্বাতী

সূর্য হল শক্তির প্রধান উৎস যা পৃথিবীতে জীবন টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। এছাড়াও সূর্যের রশ্মি যা সাতটি রঙ ধারণ করে পৃথিবীকে আলোকিত করে অন্ধকার দূর করে এবং পৃথিবীর জীবনকে মহৎ কাজ করার ক্ষমতা দেয়।
সেই জ্বলন্ত সুর্যের সামনে শক্তির আর এক প্রতীক সুর্যের সাত রঙের সাতটি ঘোড়া ছুটে চলেছে। ‘পাওয়ার অফ এনার্জী’ নামে এই অভিনব অয়েল পেন্টিঙের মাধ্যমে সূর্যের রশ্মি শক্তি এবং ক্ষমতায়নের প্রতীক ঘোড়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত করেছেন কলকাতার পন্ডিতিয়া রোডের বাসিন্দা বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী স্বাতী ঘোষ।
শারদোৎসবে যখন গোটা বাংলা পুজোর আনন্দে ভাসছে, তখন ইতালির মিলানের স্নাই সানসিরো হিপোড্রাম রেস কোর্সের প্রদর্শনশালায় একমাত্র ভারতীয় শিল্পি হিসাবে ভারতের কনসাল জেনারেল মিসেস টি আজংলা জামিরের উপস্থিতিতে স্বাতী জিতে নিলেন ‘আর্ট এন্ড ক্যাভালো থ্রোফিও’ পুরষ্কার।
সেপ্টেম্বরের ২৪ থেকে ২৮ তারিখ এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠীত হয়।
২৮ তারিখ এই পুরষ্কার গ্রহন করার পর কয়েকদিন নরোওয়েতে দুর্গাপুজো কাটিয়ে ফের মিলানে ফিরে ইকোনিকা গ্যালারিতে ৪-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি আর একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। যেখানে তার প্রকৃতি ও মানুষের জীবনের উপর আঁকা তেল রঙের আরো পাঁচটি ছবি প্রদর্শিত হয়েছে।
স্বাতী জানান, একমাত্র ভারতীয় হয়ে এই পুরষ্কার পেয়ে তিনি খুবই খুশি। তিনি এই পুরষ্কার উতসর্গ করেছেন তাঁর গুরুদেব যোগীরাজ শক্তি কিঙ্কর লাহা রয়,তার বাবা-মা ও পরিবারের সকলকে।

স্বাতীর জন্ম জামশেদপুরে। বাবা পার্থ সারথি রায় চৌধুরী ছিলেন ডিফেন্সে। বাবা ভালো মুর্তি তৈরি করতেন। মা পর্না সুন্দর আলপনা আঁকতেন। সেই সুবাদে কানপুরের বাড়িতেই বাবা মা কে দেখে তারা দুই বোন চিত্র শিল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। স্বাতী বিজ্ঞানে স্নাতক হলেও চারুকলায় ডিপ্লোমা করে স্পেন, ইতালি, সিঙ্গাপুরে বেশ কিছু শিল্প কর্মশালায় যোগ দেন।
স্বাতী জানান,তার চিত্রকর্মগুলি প্রকৃতির সাথে মাঝিদের সম্পর্ক স্থাপন করে।
তাঁর সমুদ্রের দৃশ্য এবং ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং তাদের রঙ, বুনুনি এবং শৈলীর খুব জাঁকজমক এবং বৈসাদৃশ্য ব্যাপকভাবে ভিন্ন অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। স্বাতী শিল্পে বিশ্বাসী। ভারত, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ভ্যাটিকান চ্যান্সেলারি প্যালেস, নিউ ইয়র্ক এবং মালদ্বীপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য গ্যালারি এবং জাদুঘরে স্বাতীর কাজ প্রদর্শিত হয়েছে। কর্মসূত্রে স্বামী প্রসেনজিৎ ঘোষ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে যান। সেই সুবাদে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন স্বাতী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও শিল্পকলার সাক্ষী হয়েছেন। এদিনের পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে স্বামী ও ছেলে প্রিয়াংশু উপস্থিত ছিলেন।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বিতরণের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের ট্যাব বিতরণের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বহু ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা…

19 hours ago

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল, বিজেপির বিক্ষোভে ধস্তাধস্তি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক আজ উত্তাল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ডাকে…

19 hours ago

বিহারের জামুইতে ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জনজাতীয় গৌরব দিবসে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের জামুই জেলায় জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন উপলক্ষে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে…

19 hours ago

২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আগামী ২০শে নভেম্বর একদফায় নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে। ঐ একই দিনে নান্দেথ…

2 days ago

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তা

পাহাড়ে সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ দার্জিলিং-এর চৌরাস্তায় ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন করবেন ।আগামীকাল তিনি যাবেন…

2 days ago

কলকাতায় এসআইপি অ্যাবাকাস ইন্টারন্যাশনাল প্রডিজি ২০২৪: বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগীদের গাণিতিক দক্ষতার অসাধারণ প্রদর্শন

কলকাতা, ১০ নভেম্বর ২০২৪: অ্যাবাকাস প্রশিক্ষণের অন্যতম শীর্ষ সংস্থা, এসআইপি অ্যাকাডেমি, কলকাতার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে…

3 days ago