বৃষ্টি বাদলের আভাস নাই,
নাই গুরু গম্ভীর মেঘমালা।
বিলের ফুলে আকাশ নীলে
তনুমনে লাগে দোলা!
শেষ রাতে শীতের আমেজ
দিনেও নাই গ্রীষ্মের তেজ;
সহজ সাজে স্বচ্ছ প্রকৃতি
বন-বনানী পুলকিত সতেজ!
ছায়াঢাকা গ্রামগুলি
যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি;
অনিন্দ্য সুন্দর রমনীয় ধরায়
বিস্মিত বাউলা কবি!
শীত-শরতের মাখামাখি
এটা-ই হেমন্তের কার্তিক;
বাতাসে দোলে গাছ গাছালি
সবুজে স্বপ্নময় চারদিক।
আদিগন্ত মাঠে সোনালী আগামী
নয়নাভিরাম অপরূপ জ্যোতি।
কার্তিকে পুষ্ট আমন ধান
চকে শস্য-সুফলার দ্যুতি।
মরণের পরেও স্বর্গ ছেড়ে
ফিরবো কার্তিকে এ ধরায়;
শ্যামল প্রান্তরের স্বর্গসুখে
নিঃশ্বাস নিবো বাংলায়!
শুকনো জলাশয়ে চোখ ধাঁধাবে
সাদা-বেগুনি পানা ফুলে!
পতিত খেতের আলপথে গিয়ে
নাম হারা ফুল নিবো তুলে!
ধানের শীষে আলতো চুমিয়ে
মুদবো নয়ন ফসলের মুগ্ধতায়!
মাটির অঙ্গ মাটিতে মিশিয়ে
খাটি হবো মাটির মায়ায়।
ঝিরিঝিরি বাতাসে গুনগুনাবো
গলুইয়ে চিৎ শুয়ে নৌকায়!
পদ্মা মেঘনা তিতাসের জলে
নেয়ে সিদ্ধ হবো শুদ্ধতায়!
বাউত উৎসবে মাছ ধরবো
মেঘনায় গোপালপুরের বিলে!
ঘাসের ডগায় মুক্তার শিশিরে
মুখ ভেজাবো সাত সকালে!
রূপালী স্রোতের চিকিমিকিতে
খুঁজে পাবো সজনীর হাসি!
গগনভেদী চিৎকারে বলবো
আজো তোমায় ভালোবাসি!
বর্ষা-শীতের মাঝে কার্তিকে
উচ্ছ্বাসে উল্ল্যাসে নাচবো;
মাছ ভাতে নিখাঁদ বাঙ্গালীপনায়
উৎসবে আমোদে হারাবো!
গাছের ছায়ায় বন্ধু আড্ডায়
নিমিষেই দিন সারা;
মা শাসিয়ে বলবেন রেগে
আজ বাড়ি আয় হতচ্ছাড়া!
ঘুঘু ডাকা অলস বিকেলে
নিঝুম মল্লিকা বনে!
রাখালের সাথে সুর মিলাবো
হারানো দিনের গানে!
উন্মনা মন হবে ম্রিয়মান
ভানুর বিদায় বেলায়!
মোমের আলোয় প্রিয়ার মুখ
ভাসবে মনের খেয়ায়!