কবিতা : “কৃষ্ণ স্মরণে”


বুধবার,০১/০৯/২০২১
4284

।। “কৃষ্ণ স্মরণে” ।।
অর্চিষ্মাণ নন্দী,

নবম শ্রেণী, সেন্ট অ্যাগনেস স্কুল,খড়গপুর

ধর্মসূর্য অস্ত হেরি’ অধর্মের ত্রাসে
দ্বাপরে জন্মিলা কৃষ্ণ অধর্ম বিনাশে।

আনন্দের অশ্রু ঝরে দেবকী আঁখিতে
মাতৃক্রোড়ে কৃষ্ণে আর নারিবে রাখিতে।

গোকুল মথুরা, মাঝে নদী ধারা, দুর্গম অতি পথ
বসুদেব চলে, ঢেউ কলরোলে,দৃঢ় তার মনোরথ।

দেবকী তনয়, ছোট দেহ কায়, হইলো গোকুল রাখাল
যশোদা পুত্র, স্নেহের পাত্র, নাম তারি রাখে গোপাল।

মোহিনী মোহন, সারা দেহ মন, সুর বাঁশি হাতে তারি
বৃন্দাবনে, মাঠে গোচারণে, শ্যামল কিশোর হরি।

গর্জিলা রাজা, হবে তার সাজা , এ কী অনাচার হেরি
মোর ভূমে রাস, প্রেমের আকাশ, এ কী লীলা তোর হরি।

প্রেম সৃষ্টি, প্রেম জ্ঞান, প্রেমই সঞ্চালক
প্রেম বিকাশে, রাধা তাঁরি পাশে, কৃষ্ণ সহায়ক।

রাধা-কৃষ্ণ প্রেমলীলা-অপরূপ সে গাথা
সংসার উদ্দেশে যেন প্রেমের বারতা ।

কংস বিপদে, ভয়ে বুক কাঁদে, স্মরিলা কেশী দানব
কৃষ্ণ মুরারী , বধ করে তারি, অর্জিলা নাম কেশব।

কালচক্র প্রবর্তনে কর্মের ডাক আসে
কৃষ্ণ যাবেন কংসবধে, বলরাম তারি পাশে।

কৃষ্ণ বিরহ রাধা যেন আর সইতে নাহি পারে
ভাবে শুধু হায়, নিয়তি কিরূপ কষ্ট দিলা তাঁরে ।

কংসবধে কৃষ্ণ যায়, দেবকী কোল ব্যাকুল
কংস বধিয়া মাতৃস্নেহে ফিরিয়া পায় সে কুল।

ধর্মের পুনঃ উত্থান আর অধর্মের পতন
অন্ত হয় জরাসন্ধ শিশুপাল শাসন।

সময় চলে আপন বেগে, প্রকৃতির তালে তালে
আসিলা কৃষ্ণ, ছাড়ি মথুরা, কুটিল শাস্ত্র জালে।

হস্তিনাপুর, স্তব্ধ দুপুর, দ্যুতক্রীড়া আয়োজন
পাণ্ডব আসে, দ্রৌপদী পাশে, হাসেন দুর্যোধন।

অভিমানী নারী, এত তেজ তারি, কহিলা দুর্যোধন
বস্ত্র বিহীন , দেখিয়া প্রবীণ, মৌন সর্বজন ।

জপিলা মাধবে, করো হে রক্ষে, আমি অবলা নারী
আসিলা বস্ত্র, কুরু নিরস্ত্র, লাজ রাখিলেন তারি ।

ভাঙিব ঊরু,বধিব কুরু, গর্জিয়া ওঠে ভীম
দুঃশাসনে, রক্ত পানে, ভূমি হবে রক্তিম।

কৃষ্ণ আসেন,যুদ্ধ সজ্জা, অর্জুন মহারথী
লাগাম হস্তে পার্থ সারথি, রথ চলে দ্রুতগতি।

সহসা পবন, দেয় শিহরণ, দ্বিধা গ্রাসে অর্জুনে
মরিবে আপন, বাঁচিবে কজন, সংশয় জাগে মনে।

এসেছ একেলা, যাইবে একেলা, ইহাই পরম সত্য
আর চারিপাশে যাহাই দেখিছ, সবাই কর্মভৃত্য।

এ ধরায় আছে যত দেহ কায়, প্রতিজন করে কর্ম।
কর্ম সত্য, কর্ম জ্ঞান, কর্মে পরম ধর্ম।

কর্মই আনে মহৎ সৃষ্টি, কর্মই আনে সুখ
কে পরিজন? কে পরজন? দেখে নাকো কারো মুখ।

পরম জ্ঞানে পূজিত কৃষ্ণ অর্জুনে দেন জ্ঞান
সেই জ্ঞান পরে রূপ নিয়ে বাঁধে ‘গীতা’য় সুরতান।

অতএব রণভূমে লও তব বাণ হে, লও তব বাণ
বিদ্ধ করো কুজনে, সিদ্ধ হোক প্রাণ হে, সিদ্ধ হোক প্রাণ।

সত্যে মৎস, ত্রেতায় শ্রীরাম, দ্বাপরে কৃষ্ণ সাজ
কলির কালেতে এস যদি পরে, তৃপ্তিবে মনসাধ।

হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, কৃষ্ণে কৃষ্ণময়
কৃষ্ণ হলেন পরম সত্য, এ জগতের অভয়।

অর্চিষ্মাণ নন্দী

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট