প্রকৃতির নিয়মেই সবকিছু বাঁধা থাকে। মানুষের জন্ম, মৃত্যু, প্রকৃতিরই খেলা। বাংলায় একটি প্রবাদ আমরা সবাই জানি, জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে, কবিতার ভাগ্যে জুটল জন্মের পর থেকেই বিড়ম্বনা। খবরে প্রকাশ, নলছর বিধানসভা কেন্দ্রের নলছড় আর ডি ব্লকের অন্তর্গত পূর্ব নলছর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সত্য রঞ্জন দাস। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের নাম কবিতা দাস। সে জন্ম থেকেই ১০০% বিকলাঙ্গ। অভাব তাদের নিত্যসঙ্গী। তবুও এই বিকলাঙ্গ মেয়ে কবিতার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার বাবা তাকে বহুকষ্টে মাধ্যমিক পাস করায়। শুধু এই টুকুই আসা যে তাদের অবর্তমানে যেন কবিতা নিজের প্রতিপালন নিজেই করতে পারে। তাই একটু সরকারি সাহায্যের আশায় প্রতিনিয়ত সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় কাকুতি-মিনতি করে চোখের জলে বুক ভাসিয়েছেন কবিতার বৃদ্ধ বাবা। কিন্তু প্রতিশ্রুতির বন্যা দেখা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কবিতার ১০০% বিকলাঙ্গ হওয়ার সরকারি সার্টিফিকেট ও আছে যেখানে স্পষ্ট করে লেখা আছে যে সে ১০০% বিকলাঙ্গ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ক্ষমতায় আসার আগে দলীয় কাজে নলছড় গিয়েছিলেন সেখানে তিনি এই বিকলাঙ্গ কবিতার করুণ কাহিনী শুনে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
সেখানে কবিতার করুণ অবস্থা দেখে তিনি কবিতার বাবাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে যদি কবিতা মাধ্যমিক পাশ করে তবে তাকে যেভাবেই হোক একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা তিনি করে দেবেন পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার থেকেও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেবার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে বিপ্লব কুমার দেব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় সে আশায় বুক বেঁধে কবিতার বাবা নিজের সহায় সম্বল টুকু দিয়ে খুব কষ্ট করে কবিতাকে মাধ্যমিক পাস করিয়েছেন। ২০১৯ সালে কবিতা মাধ্যমিক পাস করলেও আজ পর্যন্ত কোন ধরনের সরকারি সাহায্য তার ভাগ্যে জুটেনি। শুধু জুটেছে বিড়ম্বনা আর হাহাকার। তাই রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কবিতার বাবার করুন আবেদন যে মুখ্যমন্ত্রী যেন বিকলাঙ্গ কবিতাকে একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন যাতে সে ভবিষ্যতে নিজের প্রতিপালন সে নিজেই করতে পারে। খবর সংগ্রহের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জেলার দরিদ্র দূরীকরন কমিটির চেয়ারম্যান রতন দাস।