করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে রাতদিন কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’


বৃহস্পতিবার,০৬/০৫/২০২১
2678

হাওড়া,আমতা: যতদিন যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের হারও ততই বেড়ে চলেছে। অক্সিজেনের অভাবও ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে বহু করোনা রোগী বাড়িতে মারা যাচ্ছেন। এরকমই এক সংকটময় পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে রাতদিন লড়াই যাচ্ছে গ্রামীণ হাওড়ার আমতার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর সদস্যরা। ইতিমধ্যেই গ্রামীণ হাওড়ার করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য ৩ টি হেল্পলাইন চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। দিনভর সেখানে ফোন করে কেউ আর্জি জানাচ্ছেন অক্সিজেন সিলিন্ডার কিমবা ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার, কেউবা সরকারি ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করানোর অনুরোধ করছেন, আবার অসহায় হয়ে বাড়িতে পড়ে রয়েছেন করোনা রোগী তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ আসছে। পাশাপাশি, হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীর কী করণীয় তার পরামর্শ বহু মানুষ হেল্পলাইনে ফোন করছেন। ফোন পেয়েই সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সৌভিক, অরুণ, প্রিয়াঙ্কারা। সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ভোরে আমতার এক বৃদ্ধ বাড়িতেই মারা যান। জানা গেছে, তাঁর বাড়ির অন্যান্যরা করোনায় আক্রান্ত হলেও বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে এগিয়ে আসেননি।

অবশেষে মৃতের এক আত্মীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সাথে যোগাযোগ করলে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই মৃতদেহটি সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। গাদিয়াড়ার এক বৃদ্ধা বাড়িতে একাই থাকেন। বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। বৃদ্ধার ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকায় বৃদ্ধাকে টেস্ট করাতে নিয়ে যাওয়ার কেউ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেন বৃদ্ধার ছেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির তরফে স্থানীয় আশাকর্মীর সাথে যোগাযোগ করে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে বৃদ্ধার করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়। সারাদিন এমনকি মধ্যরাতেও সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সংগঠনটির সদস্যরা। শুধু গ্রামীণ হাওড়াই নয় সদর হাওড়ার করোনা আক্রান্তদেরও বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সংগঠনের সদস্যরা। বুধবার বিকালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের আর্জি জানিয়ে ফোন হাওড়ার শিবপুরের এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণের মধ্যেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দেন অরুণ, প্রসেনজিৎরা। এর পাশাপাশি, হোম আইসোলেশনে থাকা করোনা আক্রান্তরা নিজেদের সমস্যা হেল্পলাইনে জানাচ্ছেন।

তারপরই চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিচ্ছেন কালনা হাসপাতালের চিকিৎসক সুমন দাস, আরজিকরের চিকিৎসক মোনালিসা জানারা। সংগঠনের সম্পাদক তাপস পাল জানান, বছরভর মানুষের পাশে আমরা সাধ্যমতো থাকার চেষ্টা করি। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মানুষ বড়ো অসহায়। তাই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই আমাদের এই উদ্যোগ। শুধু করোনা আক্রান্তদের পাশে থাকাই নয় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত মাইকিংয়ের কাজ চালাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সদস্যরা। আমতার স্বেচ্ছাসেবীদের এহেন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বহু মানুষ। পেশায় শিক্ষক অনির্বান রায়ের কথায়, এই সংগঠন দিনরাত অজস্র মানুষকে যেভাবে সাহস জোগাচ্ছে তা আজকের দিনে বড়োই দুর্লভ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট