মোহনা রহমান, ঢাকা: আবহাওয়ার কোনো রকম পূর্ভাবাস ছাড়াই ৫ এপ্রিল সোমবার হয়ে গেছে ঝড়। তার আগে প্রবল বাতাস ও ধূলি-তাণ্ডবে এলোমেলো হয়ে পড়ে গোটা রাজধানী। যার বাইরে ছিল না বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলাও। এর মধ্যে আবার করোনার লকডাউন চলায় বইমেলায় পাঠকের ভিড় অনেক কমে গেছে। দেখা দেছে বিদায়ের সুর। ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার বই মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঠকের ভিড় ছিল লক্ষণীয়ভাবে কম। ফলে আগের দিনের ঝড়ে ভেঙে যাওয়া স্টল মেরামত আর ভেজা বই শুকাতেই দিনটা শুরু করেছেন বই বিক্রেতারা। বইমেলার চেনা রূপটি যেন হঠাৎ করেই অচেনা হয়ে গেছে সবার কাছে। মঙ্গলবার গিয়ে দেখা গেছে, দোয়েল, ডিআরইউ, ত্রিরতœ, লিপু বাংলা প্রকাশনী, বেহুলা বাংলা, বাবুই, আদিত্য, অনীকসহ বেশ কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ঝড়ে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক প্রকাশনীর নাম ফলক ভেঙে গেছে। ভিজে গেছে বিক্রির জন্য স্টলে আনা বই, জরুরি কাগজপত্রও। প্রকাশকরা বলেন, ‘বই মেলায় এবার পাঠক কম, বিক্রি কম। তার ওপরে আবার ঝড়ের তাণ্ডব, লকডাউন।
এবারের মেলার জন্য প্রকাশকরা যা খরচ করেছেন সেই টাকাই তুলে নিয়ে যেতে পারবেন না। বৃষ্টিতে যেসব প্রকাশনীর বই ভিজে গেছে সেগুলো শুকালেও আর আগের দামে বিক্রি করতে পারবে না। এটা প্রকাশকদের জন্য বিরাট ক্ষতি।’ এদিকে সোমবার থেকে মেলার ফটক খুলেছে দুপুর ১২টায়। বন্ধ হবে বিকেল ৫টায়। নতুন করে এই সময় পরিবর্তন করার কারণেই মেলাতে পাঠক কম বলে মনে করছেন এই প্রকাশক। তিনি বলেন, ‘অনেকে ভেবে বসে আছেন দিনের বেলাতেও লকডাউন। গণপরিবহনও মিলছে না। এ জন্য মেলায় আসছে না।’ বাংলা একাডেমি শুরু থেকেই এভাবে সময়সূচি নির্ধারণ করলে নতুন করে জটিলতা হতো বলে মনে করি না। এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘প্রকাশকদের দাবিতেই আমরা মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এরা যেভাবে বলেছে, সেভাবেই আমরা সব করেছি। এখন এসব বলে লাভ নেই। তা ছাড়া মেলার সময়সূচির সিদ্ধান্তগুলো সরকারি উচ্চপর্যায় থেকে আসে। এখানে আমাদের কিছুই করার থাকে না।’ করোনা পরিস্থিতিতেও মেলায় বেশ কিছু নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে সাংবাদিক মিজান রহমানের মিরর অব মেমোরি ও কবি ফাতেমা খাতুন মহিমার কাব্যগ্রন্থ কুয়াশার চাদর।