ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে নিম্ন আয়ের মানুষ কতটা বিপদে পড়েছে বেসরকারি দুটি গবেষণা সংস্থার জরিপে সেটা উঠে এসেছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ নামের ওই দুটি গবেষণা সংস্থা বলছে, তাদের জরিপে দেখা গেছে যে বাংলাদেশে ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় কমে গেছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের নভেম্বরে জরিপকৃত চারটি জেলায় মজুরি বা বেতনভুক্ত কর্মচারী বা কর্মকর্তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশের আয় কমেছে। ২৮ শতাংশের আয় অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ২ শতাংশের আয় বেড়েছে। স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিতদের মধ্যে এই সময়কালে লাভ কমেছে ৮২ শতাংশের, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫ শতাংশের এবং বেড়েছে ৩ শতাংশের। স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত এই চারটি জেলায় করোনার সময়ে ব্যবসা বা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হয়েছে ৩১ শতাংশের। ২৩ ২৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেসরকারি দুটি গবেষণা সংস্থার যৌথ আয়োজনে ‘মহামারি এবং বাংলাদেশের যুব জনগোষ্ঠী: চারটি নির্বাচিত জেলার জরিপের ফলাফল’ শীর্ষক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল উপস্থাপনের সময় সানেমের রিসার্চ ইকোনমিস্ট মাহতাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর ওপর করোনা মহামারির প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে সানেম এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের চারটি জেলা—বরগুনা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী এবং কুড়িগ্রামের ১৫৪১টি খানার ওপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। এই জরিপে তরুণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী ইত্যাদির ওপর করোনা মহামারির প্রভাব নিরূপণের চেষ্টা করা হয়েছে। জরিপে বলা হয়েছে, করোনার সময়ে অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাননি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কুড়িগ্রামে ৬২ শতাংশ, সাতক্ষীরাতে ৫৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ৩৯ শতাংশ এবং বরগুনায় ৪৬ শতাংশ। গড়ে এই চারটি জেলার ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাননি। এই চারটি জেলার ৫০ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাননি, অপরদিকে ৫৬ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাননি। করোনাকালীন সময়ে এই চারটি জেলার ৫২ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থীর কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ছিলো না, অপরদিকে ৬৫ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থীর কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ছিলো না। গড়ে এই চারটি জেলার ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোনো ডিজিটাল ডিভাইস ছিলো না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হলে নিয়মিত পড়াশুনায় ফিরবেন না অথবা এ বিষয়ে অনিশ্চয়তা আছে এমন মত দিয়েছেন এই চারটি জেলার ৩.৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী। ছেলে শিক্ষার্থীর মধ্যে এই হার ৩.৫২ শতাংশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪.০৩ শতাংশ। গ্রামে এই হার ৪.৪১ শতাংশ এবং শহরে ১.৬৫ শতাংশ। এই চারটি জেলার লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার চিত্র বোঝার ক্ষেত্রে জরিপকৃত থানাগুলির ১৫-৩৫ বছর বয়সী ১২৭০ জন নারীকে প্রশ্ন করা হয়। জরিপের ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা গ্রামের এবং ১৫ শতাংশ শহরের। জরিপে অংশগ্রহণ করা ১৯ শতাংশ অবিবাহিত এবং ৮১ শতাংশ বিবাহিত। বিবাহিত নারীদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের স্বামীদের দ্বারা কোনো ধরনের শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। কুড়িগ্রামে এই হার ৪১ শতাংশ, সাতক্ষীরাতে ২২ শতাংশ, রাজশাহীতে ২৮ শতাংশ এবং বরগুনায় ৫৫ শতাংশ। স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মাধ্যমে শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন বিবাহিত নারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ, অবিবাহিত নারীদের মধ্যে ২৮ শতাংশ। কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হওয়ার পরে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন ৫ শতাংশ নারী। আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ার পিছনে ৬৫ শতাংশ জানিয়েছেন তারা প্রয়োজন মনে করেননি, লজ্জা বা ভয়কে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ৩২ শতাংশ, পরিবারের সদস্যদের ভয়কে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন ১৯ শতাংশ, আর্থিক সক্ষমতার অভাবকে চিহ্নিত করেছেন ১৩ শতাংশ, আইনের প্রতি আস্থার অভাবকে চিহ্নিত করেছেন ১২ শতাংশ নারী। উল্লেখ্য জরিপের সময় উত্তরদাতারা এই বিষয়ে একাধিক কারণ জানানোর সুযোগ পেয়েছেন। গণপরিবহনে যাতায়াত করতে নিরাপদ বোধ করেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে ৪০ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তারা নিরাপদ বোধ করেন। জরিপে ৬৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট রয়েছে। জরিপকৃত ১৪ শতাংশ নারী জানিয়েছেন তারা ফেসবুক বা ইউটিউব ব্যবহার করতে পারেন।
পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা আছে ৬৫ শতাংশ নারীর, বিবাহিতদের মধ্যে এই হার ৬৭ শতাংশ এবং অবিবাহিতদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ। জরিপে দেখা গিয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুবদের অংশ নেওয়ার হার ৭.৬২ শতাংশ। কুড়িগ্রামে এ হার ৪.৬৭ শতাংশ, সাতক্ষীরায় ৬.৫৮ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৩.৪৫ শতাংশ এবং বরগুনায় ৬.৩১ শতাংশ। অরাজনৈতিক সংগঠনে যুবদের অংশ নেওয়ার হার ৬.৪ শতাংশ এবং রাজনৈতিক সংগঠনে ৩.৬ শতাংশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশার সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেছেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব দিলরুবা শারমীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সানজিদা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ, সুইসকনট্যাক্ট-এর টিম লিডার নাদিয়া আফরিন শামস এবং ব্র্যাকের দিবা ফারাহ হক। ওয়েবিনারে বিশেষ বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…
আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…
রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…
সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…