হাওড়া, উলুবেড়িয়া: বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানে বাম ছাত্র-যুবদের উপর পুলিশের নির্বিচারে লাঠিচার্জের প্রতিবাদে শুক্রবার ১৬ বাম সংগঠনের ডাকা বন্ধে আংশিক প্রভাব পড়ল গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া, আমতা, বাগনান, শ্যামপুর সহ বিভিন্ন এলাকায়। শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় ঝান্ডা হাতে পথে নামতে দেখা যায় বাম কর্মী-সমর্থকদের। এদিন উলুবেড়িয়া শহরের বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ থাকতে দেখা যায়। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ উলুবেড়িয়ার গোরুহাটা মোড় অবরোধ করেন বাম কর্মীরা। তাদের সাথে কংগ্রেসও পথে নামে। শুক্রবার কার্যত গান্ধীগিরি করতে দেখা যায় অবরোধকারীদের। হাতে গোলাপ, মুখে স্লোগান। তাঁরা পথচলতি মানুষকে এভাবেই বন্ধে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। এদিন কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি গৌতম পুরকাইত, অপর্ণা পুরকাইত, সাবিরুদ্দিন মোল্লার মতো বাম নেতারাও পথে নামেন৷ ঘন্টাখানেক অবরোধ চলার পর তা তুলে নেওয়া হয়।
এরপর উলুবেড়িয়া থেকে গঙ্গারামপুর অব্ধি মিছিল করেন বন্ধকারীরা। বন্ধকারীদের বিরুদ্ধে একটি উলুবেড়িয়া বাজারপাড়া এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় বাম নেতৃত্ব। অন্যদিকে, শুক্রবার সকালে পাঁচলার রাণীহাটি মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে ১৬ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বামেরা। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে অবরোধ চলে। অভিযোগ, অবরোধ তুলতে বন্ধকারীদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। রাণীহাটির পাশাপাশি বাগনানেও জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। বাগনানে নেতৃত্ব দেন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। এর পাশাপাশি, আমতাতেও বন্ধের সমর্থনে মিছিল করেন সিপিআইএম কর্মীরা। সকাল থেকেই আমতা, উলুবেড়িয়া, বাগনান, শ্যামপুর এলাকায় অটো-টোটোর দেখা মিললেও খুব একটা বেসরকারি বাসের দেখা মেলেনি। অন্যদিকে, প্রায় ১১ মাস পর শুক্রবার থেকে এরাজ্যের নবম-দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের নিয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে।
গ্রামীণ হাওড়ার হাইস্কুলগুলিতে বন্ধের প্রভাব সেভাবে চোখে পড়েনি। শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি পড়ুয়াদের উপস্থিতিও বেশ আশাব্যঞ্জক। যদিও গ্রামীণ হাওড়ায় বন্ধ ‘একশো শতাংশ’ সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন উলুবেড়িয়ার সিপিআইএম নেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লা। তাঁর কথায়,”মাত্র কয়েক ঘন্টার নোটিশে যেভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়ে বন্ধে সামিল হলেন তা সত্যিই আমরা ভাবিনি।” তিনি বলেন,”আমরা সুশৃঙ্খলভাবে মিছিল, প্রতিবাদ করেছি। সাধারণ মানুষকে বন্ধে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। কোনো ভাঙচুর করা হয়নি।” শুক্রবারের বন্ধে গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো।