ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা: অবশেষে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিল সরকার। ২৪ জানুয়ারি রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মানবদেহে অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়ার দাবি ছিল। এখন এটি চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি রোববার থেকে এটি চালু হয়ে গেল। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য দেশে প্রয়োজনীয় কিট আছে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী কিট আমদানি করা হবে। তবে এই মুহূর্তে কী পরিমাণ কিট আছে তা তার জানা নেই। অ্যান্টিবডি টেস্টের কিট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও আমদানি করতে পারবে, কোনো বিধিনিষেধ নেই। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও এই কিট ব্যবহার করা যাবে। গত মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণের পর তা রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন বা আরটিপিসিআর টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত হয়ে আসছিল।
নমুনা পরীক্ষায় গতি আনতে শুরু থেকেই অ্যান্টিজেন টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে মানবদেহে এই রোগটি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি-না তা জানতে অ্যান্টিবডি টেস্টেরও দাবি উঠে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিভাগ অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করতে সময় নেয়। এক পর্যায়ে গত ৫ ডিসেম্বর প্রথমে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দেয় সরকার। আরটিপিসিআর টেস্টের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করে তার ফল পেতে আট ঘন্টার মতো সময় লাগে। অন্যদিকে অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করে ফল পেতে মাত্র আধাঘন্টা সময় লাগে। আবার ব্যয়ও তুলনামূলক কম। ল্যাবরেটরি ছাড়া আরটিপিসিআর টেস্ট করা সম্ভব নয়। অপরদিকে অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য কোনো ল্যাবরেটরির প্রয়োজন নেই। তবে করোনাভাইরাস শনাক্তে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আরটিপিসিআর টেস্ট।
অপরদিকে শরীরে নির্দিষ্ট কোনো রোগের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি-না, রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে স্বল্প সময়ে তা অ্যান্টিবডি টেস্ট করে জানা যাবে। শরীরে সংক্রমিত ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর এক পর্যায়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরি করে নেয়। এই অবস্থাই অ্যান্টিবডি। আর যে জীবাণুর প্রতিক্রিয়ায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তাকে বলা হয় অ্যান্টিজেন। অ্যান্টিবডির কাছে ভাইরাস পরাজিত হলেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে ৫ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে। অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার আগে র্যাপিড কিটে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ হবে। তখন শরীরে ভাইরাস থাকলেও তা নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হবে না। আবার কেউ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠলেও তার রক্তে অ্যান্টিবডি থেকে যাবে। ফলে ওই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস না থাকলেও র্যাপিড কিটের টেস্টের ফলাফল পজিটিভ আসবে।