আসন্ন নির্বাচনের আগেই দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গেছে ঘাস-ফুল শিবিরে। অতি সম্প্রতি শান্তিপুর তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। দুইদিন আগে তিনি দিল্লিতে যাওয়াতে জল্পনা আরো বাড়ে। আজ অভিষেক ঘনিষ্ঠ শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সদরদপ্তর বিজেপিতে যোগদান করলেন। তাঁর হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অরিন্দম ভট্টাচার্যের বিজেপিতে যোগদানের সময় কেন্দ্রীয় নেতা শাহনওয়াজ হুসেনও উপস্থিত ছিলেন।
অরিন্দম ভট্টাচার্য শান্তিপুর বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক হন। গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও বামেদের জোটে শান্তিপুর বিধানসভা থেকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অজয় দে কে পরাজিত করে জয়ী হন। এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। আর তৃণমূলে আসার পরেই তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ হন। কারণ অরিন্দম ভট্টাচার্য রাজ্য যুব কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। অভিষেক ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে।
তৃণমূল নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন শান্তিপুরে অজয় দে ছাড়া আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল সম্ভব নয়। এরপরই তৃণমূল প্রাক্তন শান্তিপুরের বিধায়ক অজয় দের গুরুত্ব বাড়ায়। তাতেই অরিন্দম ভট্টাচার্য ক্ষুব্ধ হন। ফলে শান্তিপুরের একাংশ মনে করছেন অজয় দের গুরুত্ব বাড়ায় এবার হয়তো শান্তিপুর থেকে অরিন্দম ভট্টাচার্যকে টিকিট দিত না তৃণমূল কংগ্রেস। যার জন্যই সম্প্রতি বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বিজেপির সাথে সম্পর্ক রাখছিলেন। অবশেষে আজ তিনি দিল্লিতে গিয়ে তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠকে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন।
শান্তিপুর থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হতেন অজয় দে। সেইসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যানও। পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তৃণমূল প্রতীকেও নির্বাচিত হন। ছন্দ কাটে গত বিধানসভা ভোটে। বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী বহিরাগত অরিন্দম ভট্টাচার্যের কাছে পরাজিত হন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্কে অরিন্দমের থেকে তৃণমূল রাজনীতিতে ভূমিপুত্র অজয় দে’র গুরুত্ব অনেক বেশি। বহিরাগত অরিন্দম ক্রমশ জমি হারাচ্ছিলেন। আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন অজয়বাবু। আর তা বুঝতে পেরেই অরিন্দম গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিকে অরিন্দমের বিজেপিতে যোগদানে আদি বিজেপি নেতাকর্মীরা বেজায় ক্ষুব্ধ। তাঁকে মেনে নেওয়া কঠিন বলে ইতিমধ্যে আওয়াজ তুলেছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের বড় অংশ। দল জোর করে নেতা চাপিয়ে দিলে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে।