ঝাড়গ্রাম :- “সন্ত্রাসবাদী মাওবাদী খুনি ছত্রধর মাহাত দূর দূর দূর হাটাও , টিএমসি নেতা গো ব্যাক” তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা পুলিশী সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণ কমিটির প্রাক্তন নেতা ছত্রধর মাহাতোর নাম উল্লেখ করে গ্রামের মধ্যে ঝোলানো রয়েছে পোস্টে। কে বা কারা এই পোস্টের লাগিয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও তৃণমূলের দাবী এই সব পোস্টের স্থানীয় বিজেপির লোকেরাই করেছে ।
বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের পেটবিন্ধি গ্রাম পঞ্চায়েতের পেটবিন্ধি গ্রামের ঘটনা । এদিন পেটবিন্ধি গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাংরিয়া গ্রামে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি পদযাত্রা ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই পদযাত্রায় ও পথসভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর। কিন্তু তিনি আসেন নি। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা ২টো নাগাদ এই পোস্টার নজরে আসে বাসিন্দাদের। যদিও পোস্টার কে বা কারা দিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
এদিন দুপুর আড়াইটা থেকে পেটবিন্ধি থেকে ডাংরিয়া গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে একটি মিছিল হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি দুলাল মূর্মূ, জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত দেবাশিষ চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য স্বপন পাত্র সহ অন্যান্যরা। সেই মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ছত্রধর মাহাতোর। কিন্তু কোনো কারণবসত তিনি আসেননি বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি । তার আগেই দুপুর ২টো নাগাদ মাওবাদী কায়দায় লালকালিতে লেখা পোস্টার পড়েছে সেই পেটবিন্ধিতে । তৃণমূলের ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পাল এবিষয়ে বলেন, ‘এগুলো সব বিজেপির কাজ। পায়ের নিচ থেকে মাটি সরছে তাই বিজেপি এসব করছে।’
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাত বলেন , ‘যারা আমার বিরুদ্ধে ৪০ টা কেস দিয়েছে প্রতিটি এই ধরনের কেস । আজ তারা এই দলে এসেছে । তারা তৎসময়ে এই জঙ্গলমহলে যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল । নারী সমাজের উপর অত্যাচার এবং আদিবাসী মানুষের উপর যে অত্যাচার সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ যখন গর্জে উঠলো তখন তারা প্রতিটি আদিবাসী জনজাতির মানুষকে একাধিক কেস দিয়েছে । ৪০ ,৪২ ,৫০ ,১০০ পর্যন্ত কেস দিয়েছে । পরোটাই তো সব ওই ধরনের কেস তারা আজকে আর কেস দেওয়ার জায়গায় নেই । এখন তারা পোস্টারও লিখছে । এই খুনিদেরকে , নারী ধর্ষণদেরকে মানুষ ভালো ভাবেই চিনে গিয়েছে । বিশেষ করে জঙ্গলমহলের মানুষ ভালো ভাবেই চিনে গিয়েছে । তার উত্তর ২০২১ এ দিয়ে দেবে । ওরা যতই ভেক ধরুক, লাল ছেড়ে গেরুয়ায় আসুক মানুষ চিনতে ভুল করেনি । ওরা জঙ্গলমহলের মানুষকে বোকা ভেবেছে জঙ্গলমহলের মানুষ জবাবটা দিয়ে দেবে ২০২১ সালে।’
এবিষয়ে বিজেপির বেলিয়াবেড়া মন্ডলের সভাপতি সমিত পাত্র বলেন, ‘ একজন মাওবাদী নেতৃত্বকে নিয়ে যদি মমতা ব্যনার্জী গ্রাম বাঙলায় অশান্তি করতে চান। এর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ দেখানো উচিত নয়। শাসক দল যে মাওবাদীর বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জী লড়াই করেছিলেন সেই মাওবাদী কে নিয়ে রাজ্যের সম্পাদক করে ভয়, ভ্রান্তি করে চারিদিকে সন্ত্রাস চালাচ্ছেন। এই বাতাবরন সাধারণ মানুষকে দূর্বিসহ করে তুলবে। আর ভবিষ্যতে উনি যে মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বা উনার সরকার মাওবাদীদের দ্বারা পশ্চিম বাঙলায় ক্ষমতায় এসেছেন এটাই তার প্রমাণ। বিজেপি এই ধরনের নোংরামী কাজ করেনা। কারণ গোপীবল্লভপুর ২ব্লকে যেসব মানুষরা প্রাণ হারিয়েছেন, যার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে, যার স্বামী কে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বিধবা স্ত্রী দিনের পর দিন রাত কাটাচ্ছেন এটা ওদেরই একটা গোষ্ঠীর চক্রান্ত।’