কাঞ্চন দত্ত : রাবড়ি চাই গো… রাবড়ি…
তবে হ্যা, আর যদি পুরো গ্রামটাই রাবড়ি এর নামে হয় , তাহলে ?
হ্যা , সেইরকম একটা গ্রাম থেকে ঘুরে এলাম , গ্রামের নাম আইয়া , হুগলি জেলার অন্তর্গত । বাড়ির খুব কাছে হবার সুবাদে , দুপুর দুপুর খেয়ে দেযে একাই বেরিয়ে পড়লাম স্কুটিতে। হালকা রোদে বেশ মনোরম লাগছিলো চালাতে। কিছুদিন আগেও যে রাস্তার পাশগুলো সবুজে মোড়া ছিল , তা এখন সোনালী। অনেক ধানগাছ তখন কাটাও হয়ে গেছে। এইভাবে শান্ত নিরিবিলি রাস্তায় একাকী চালিয়ে চলে এলাম রাবড়ি গ্রামের কাছে ।
একজন ডাক দিলো , দাদা রাবড়ি গ্রামে যাবেন ?
আমি বললাম , হ্যা…
ও বললো , আসুন আমার সাথে।
উনি সাইকেল হাঁকিয়ে আগে আগে চললেন , আমি তার পিছে। রাস্তা থেকে ভিতরে প্রবেশ করতেই গ্রামের রূপ ধরা পড়লো। পৌছালাম ওনার বাড়ি। বাইকটা সাইড করে ওদের অন্দরমহলে এলাম। ঘরের লাগোয়া একটা ছোট্ট মাটির ঘর , সেটা ওদের রাবড়ি কারখানা।
কথায় , কথায় জানতে পারলাম , বাড়ির সকলেই এই কাজের সাথে জড়িত। আর এই রাবড়ি যে তৈরী করছে তা চলে যায় , কলকাতায়। তবে চাইলে এখন থেকে রাবড়ি কেনাও যায় , বা অর্ডারও দেয়া যায়। এই সব গল্পের মাঝে টুক করে দেখে নিলাম কিভাবে তৈরী করছে রাবড়ি , এর বৃস্তিত বর্ণনায় যাচ্ছি না , তবে আমার ভিডিওতে তা পেয়ে যাবেন। শুধু বলা ভালো , এটা একটা শিল্প , আর শিল্পী তার হাতের ছোয়ায় কিভাবে সর গুলোকে দুধ থেকে টেনে তুলছে সেটাই দেখার।
বাঙালির শেষ পাতে মিষ্টি চাই , কিন্তু রাবড়ি ? সে তো বাংলার মিষ্টি নয়। এই মিষ্টি বেনারসের। ১৪০০ সাল আগের কথা , তা অবশ্য চন্ডীমঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে শোনা যায়। সেখান থেকেই বাংলায় আসে এই মিষ্টি। তাহলে এই গ্রামের নাম কেন রাবড়ি হলো ? তার ইতিহাসও জেনে নিলাম ওই দাদার কাছ থেকে। ৩০ বছর আগে ২ জনের হাত ধরে এই মিষ্টি আসে এই গ্রামে , তারপর ছড়িয়ে পরে অনেকগুলো ঘরে। আর এখন নয় নয় করে ৩০ ঘর তো হবেই , যারা এই মিষ্টি বানাচ্ছে।
এই আর কি , এরপর কিছুটা রাবড়ি , একটা সর ভাজা টেস্ট করে , বাড়ির জন্য রাবড়ি কিনে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির দিকে।
যদি কেউ যেতে চান যেতে পারেন , কন্টাক্ট চাইলে করতে পারেন শুভেন্দু বালতি এর সাথে , যার বাড়িতে গিয়েছিলাম আমি।
আর চাইলে ২৬ C বাসে করে ডানলপ বা দক্ষিনেশ্বর বা বালি হল্ট থেকে সোজা গাঙপুর , সেখান থেকে ৫ মিনিট হেটে।